প্রতীকী ছবি
স্থায়ী আমানতের বাজার এখনও প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। তাই মহিলা লগ্নিকারীদের বলছি, অবশ্যই স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করুন। তবে তার আগে কিছু দিকে নজর রাখাটা আপনার কর্তব্য, যার প্রথমেই থাকছে নিজের ফিনান্সিয়াল প্ল্যানের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ডিপোজিটে লগ্নি করা। বিস্তারিত পড়ুন লগ্নিকারী চৈতালী ঘোষ-এর লেখায়
আলাদা করে শুধু মেয়েরাই নয়। সকলেরই উচিত স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করা। কেন? কারণ, আমার মতে স্থায়ী আমানতের বাজার এখনও প্রাসঙ্গিক। হ্যাঁ, আমরা সকলেই জানি, স্টক মার্কেটে লাভের সুযোগ বেশি, তবে সেখানে কোনও কিছুই গ্যারান্টিড নয়। তার তুলনায় ডিপোজিটের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার প্রশ্নই নেই। যে রেট পাওয়া যাবে বলা হয়, গ্রাহক সেই রেটই পান। তার অন্যথা হয় না। আমি অবশ্য ভালো, নির্ভরযোগ্য কর্পোরেট সংস্থার উপর জোর দিচ্ছি।
নিজে লগ্নিকারী হিসাবে যখন বাজার পরীক্ষা করে দেখলাম, তখন বুঝতে পারলাম যে, আমানতের মার্কেটে একগুচ্ছ বিকল্প আছে। ইনভেস্টরদের কেবল সঠিক নামগুলোর সন্ধানে থাকতে হবে। সুদের হার তো অবশ্যই বড় নির্ধারক, তবে আরও কয়েকটি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। সব ধরনের সংস্থাই বিশ্বাসযোগ্য নয়, তা আর দুবার বলতে হয় না। অতীতে অনেকবার এমন হয়েছে যে ডিপোজিটর শুধুমাত্র রিটার্নের তাড়নায় ভুল নামগুলো বেছেছেন। তাই অজানা-অচেনা কোম্পানির অফার সম্বন্ধে সতর্ক থাকুন। এখানে চেনা নামগুলো আর নতুন করে তালিকাবদ্ধ করছি না, গ্রাহক সহজেই সেগুলোর ব্যাপারে জানতে পারবেন। রেটিং দেখবেন অবশ্যই–পেশাদার ক্রেডিট রেটিং সংস্থা (যেমন ক্রিসিল) সেখানে দায়িত্ব পালন করে। হঠাৎ রেটিং যদি বদলে যায়, তাহলেও কিন্তু কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকেই।
ইনভেস্টরদের এ-ও বলি যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সর্বশেষ নীতির বিষয়ে জেনে রাখুন। সুদ সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি? তাই যদি হয়, তাহলে দায়িত্বশীল লগ্নিকারী হিসাবে আপনার কর্তব্য করে যেতে হবে। তার সরল অর্থ যদি পলিসি রেটে কোনও অদলবদল হয়, তাহলে আপনার আমানত প্রকল্পেও হয়তো তার ‘ইমপ্যাক্ট’ আসবে। তবে মনে রাখুন, ডিপোজিটে যদি রেট একবার ধার্য হয়, তাহলে ম্যাচুরিটির আগে সেই রেটে বদল হয় না। ফ্লোটিং নয়, ফিক্সড সেই জন্যই বলা হয়।
সব কিছুই এক জায়গায় লগ্নি করতে বারণ করা হয়, জানেনই। তার মানে ডাইভারসিফাই করুন যথাযথভাবে। নিজের যা সারপ্লাস আছে, তা একাধিক সংস্থার প্রকল্পে লগ্নি করার কথা ভাবুন। ওই যে আগেই বলেছি, বিকল্পের অভাব নেই। তবে ভালো, বিশ্বস্ত সংস্থার সংখ্যা সীমিত, তাও বলে রাখছি।
সব শেষে কয়েকটি জরুরি পয়েন্ট :
১. নিজের ফিনান্সিয়াল প্ল্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লগ্নি করুন ডিপোজিটে। লং টার্ম ও শর্ট টার্ম, দুইয়ের তফাৎ বুঝুন।
২. এক বছরের টাকা যেন কখনওই পাঁচ বছরের প্রকল্পে লক-ইন না থাকে। একটি উদাহরণ দিলাম মাত্র।
৩. রেটিং সংস্থা কোনও নেতিবাচক পদক্ষেপ নিলে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। খবরের শিরোনাম দেখুন, নিজের বেছে নেওয়া ডিপোজিট সম্বন্ধে কোনও নতুন ইঙ্গিত পান কি না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.