প্রতীকী ছবি
সোনা এবং রুপোর রমরমা ছিল, থাকবেও। এই সম্পর্কে বাজারের হালহকিকত জানালেন প্রেশাস মেটালস বিশেষজ্ঞ অঞ্জন দাস। এই লেখায় রইল রুপোর খতিয়ান।
সিলভার এখন খবরের শিরোনামে। কারণগুলো খুব পরিষ্কার, এর মূল কারণটি সবারই জানা–দাম বাড়ার জন্য অনেক লগ্নিকারী রূপোর উপর নজর রাখছেন। তাঁদের বক্তব্যও বেশ স্বচ্ছ–এই মুহূর্তে কি সিলভারে লগ্নি করা উচিত, দাম বাড়ার ট্রেন্ড কি আগামিদিনেও চালু থাকবে? আমার তিন পুরুষের ব্যবসার ভিত্তিতে এবং আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর ভর করে আজ কয়েকটি জরুরি প্রসঙ্গের অবতারণা করছি।
ক- সোনা-রুপো বা অন্য প্রেশাস মেটাল আজ বিশ্বের কোণে কোণে নতুন শ্রেণির বিনিয়োগকারীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। পুরোনো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ইনভেস্টররাও এই বিষয়ে নতুন করে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
খ- পোর্টফোলিওকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে আর ডাইভারসিফাই করার তাগিদে আজ সিলভারের কদর বাড়ছে। মানুষে বেশ বুঝতে পারছেন নিজের মোট লগ্নির এক ‘ক্রিটিক্যাল শেয়ার’ এই খাতে রাখা উচিত। সচেতনতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যালোকেশনও বাড়ছে, সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে তা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।
গ- রুপো কেনার ক্ষেত্রে, সাবেকি পদ্ধতি তো বটেই, এ যুগের ইনভেস্টর আধুনিক প্রযুক্তি-ভিত্তিক উপায়ও অবলম্বন করছেন, এ-ও দেখা যাচ্ছে। তার মানে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ আসছে সিলভার মার্কেটে। গোল্ডের ক্ষেত্রে যা আমরা ইতিমধ্যেই দেখে নিয়েছি, তা আজ সিলভারের প্রসঙ্গেও প্রযোজ্য হতে শুরু করেছে।
আমার মতে, দুভাবে সিলভার আজ নজর কাড়ছে সাধারণ লগ্নিকারীর। এক, কেবল ইক্যুইটি অথবা রিয়েল এস্টেটের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাইছেন না অনেকে। অ্যাসেট অ্যালোকেশনে বৈচিত্র্য আনতে, ডাইভারসিফিকেশনের মাধ্যমে সুরক্ষা আনতে, আজ সোনার সঙ্গে রুপোরও জনপ্রিয়তা লক্ষ্যণীয়। আগামিদিনে তা যে আরও দৃঢ় হবে, তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। দুই, কমোডিটির দৌলতে যে রিটার্নও ভালো রকম পাওয়া সম্ভব তা বুঝতে পারছেন বিনিয়োগকারীরা। মুদ্রাস্ফীতির বাতাবরণে এই প্রসঙ্গটি খুব জরুরি হয়ে উঠেছে। যথাযথ লাভ না পেলে ইনভেস্টররা, তাঁদের নজর অন্যত্র সরিয়ে দেন। এখানে দেখা যাচ্ছে নতুন লগ্নি আসছে রিটার্ন পাওয়ার তাগিদে।
গোল্ডে তো বরাবরই বিনিয়োগ করে থাকেন ভারতীয়রা, এখন সিলভারেও ভালো পারফরম্যান্সের আশা করছেন তাঁরা। আমি এ-ও বিশ্বাস করি যে গড়পড়তা লগ্নিকারীর জন্য অন্তত ১০-১৫ শতাংশ অ্যালোকেশন যেন কমোডিটির (বিশেষত প্রেশাস মেটালস) জন্য সব সময় থাকে। হ্যাঁ, তার মানে সাধারণ মানুষ ইক্যুইটি ইত্যাদির বাইরে গিয়েও যেন সোনা এবং রুপোর জন্য জায়গা রাখেন। ফিজিক্যাল সোনা বা রূপো তো কেনা যেতেই পারে, তার জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। তবে আমি চাইব যে বেচা-কেনার পন্থা যেন স্বচ্ছ এবং পরিচ্ছন্ন হয়। বাজারে নানা রকম স্বার্থ কাজ করে, অস্বচ্ছ পদ্ধতি মেনে চললে সাধারণ মানুষ ভুল-ভ্রান্তির শিকার হয়ে পড়তে পারেন। তেমন যেন কখনও না হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.