প্রতীকী ছবি
নামেই স্পষ্ট, এই ধরনের পোর্টফোলিও গ্রাহকদের স্বার্থে কতটা সুবিধাজনক এবং লাভের হতে পারে। ‘ফ্লেক্সি’ ক্যাপে বিনিয়োগের ব্যাপারে তাই একটি বড় সংখ্যক লগ্নিকারীই পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। কী কী সুবিধা আছে এই লগ্নিতে, বিস্তারিত জানাচ্ছে টিম সঞ্চয়
ফ্লেক্সি, অর্থাৎ নমনীয়। মিউচুয়াল ফান্ডের জগতে এবং পোর্টফোলিও গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে। এমন নমনীয় কৌশলের আলাদা স্থান আছে। লার্জ, মিড এবং স্মল, এই তিন ধরনের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনই এখানে পাবেন। এক শ্রেণির লগ্নিকারী তাই ফ্লেক্সি ক্যাপের পক্ষে অনুকূল অভিমত রাখেন। আর পেশাদাররাও সায় দেন অনেক সময়ই। আজ দুটি নির্দিষ্ট ফ্লেক্সি ক্যাপ পোর্টফোলিওর সাহায্যে বিষয়টি আলোচনা করব।
১. সব ধরনের মার্কেট ক্যাপ থাকা সম্ভব
২. উদ্দেশ্য প্রধানত একই – দীর্ঘমেয়াদী ক্যাপিটাল গ্রোথ
৩. কোনও সেক্টর জনিত বাধা-নিষেধ না থাকাই দস্তুর
৪. পোর্টফোলিও পরিচালিত হয় ডাইনামিক কৌশল মেনে
৫. নিজস্ব ইনডেক্সের সঙ্গে তুলনা করে রিটার্নের পরিমাণ সহজেই বোঝা যায়।
যে দুই উদাহরণ (পক্ষপাতশূন্য হয়ে) পাঠকদের সামনে তুলে ধরব :
(ক) ITI Flexi Cap Fund
(খ) PGIM Flexi Cap Fund
ITI Flexi Cap
কুড়িটির বেশি সেক্টরে লগ্নি করা এই ফান্ড মূলত বেছে নিয়েছে ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (বিশেষ করে ব্যাঙ্কিং স্টক), অটো তথা অটো কম্পোনেন্টস, এবং অয়েল ও গ্যাস।
এই তিন প্রধান লগ্নির সঙ্গে জুড়েছে বেশ কিছু তুলনায় ছোট অর্থনৈতিক ক্ষেত্র। লগ্নি হয়েছে হোটেল, ইনফ্রা, মাইনিং এবং টেলিকম জাতীয় সেক্টর। বড় মাপের স্টকের (যেখানে অন্তত ২% লগ্নি করেছেন সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার) মধ্যে আছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো, আইটিসি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, টাটা কনসালট্যান্সি, রিলায়েন্স এবং কোল ইন্ডিয়া।
কেমন পারফরম্যান্স দিতে পেরেছে এই ফান্ড ?
সাম্প্রতিককালের রিটার্নস দেখার জন্য সঙ্গের চার্টে চোখ রাখুন। এখানে এক বছরের তথ্য দেওয়া রইল, মার্চ মাসের শেষের পারফর্ম্যান্সের ভিত্তিতে।
১. লগ্নির পরিমাণ : ১,২০,০০০ টাকা (মাসে ১০,০০০ টাকার সিপ)
২. ফান্ড ভ্যালু : ১,৪৮, ০৩৩ টাকা
৩. রিটার্ন : ৪৬.৮৬%
৪. বেঞ্চমার্ক ইনডেক্সের ভ্যালু : ১,৪২,২৩৪ টাকা
৫. বেঞ্চমার্ক ইনডেক্সের রিটার্নস : ৩৬.৭৩%
উল্লেখ্য, এখানে কেবল রেগুলার গ্রোথ অপশনের কথাই বলা হয়েছে। বেঞ্চমার্ক ইনডেক্স : নিফটি ৫০০। প্রতি মাসের এক তারিখে সিপের লগ্নি করা হয়েছে, এমন ধরে নিয়েছেন ফান্ড কর্তৃপক্ষ।
PGIM India Flexi Cap :
এখানে প্রায় ষাটটি স্টকে লগ্নি করেছেন পরিচালকরা। প্রধানত লার্জ ক্যাপ থাকলেও, মিড এবং স্মল ক্যাপের অংশও কম নয়।
এতগুলো হোল্ডিংয়ের মধ্যে আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য যেগুলো, সেগুলো তালিকাভুক্ত করা হল।
বিঃদ্রঃ – মার্চ মাসের শেষে
পারফর্ম্যান্সের হদিস
চার্ট –
বিঃদ্রঃ- (ক) মার্চ ২০১৫ থেকে চালু হয়েছে এই ফান্ড
(খ) ১০,০০০ টাকা লগ্নি হয়েছে, এমনই দেখানো আছে এই চার্টে
(গ) রেগুলার প্ল্যান এবং গ্রোথ অপশনের কথা বলা হচ্ছে
প্রসঙ্গত, এখানেও নিফটি ৫০০ ফান্ডের বেঞ্চমার্ক। জেনে রাখা উচিত যে এই জাতীয় ইকু্যইটি ফান্ডে এগজিট লোড থাকে (শর্তসাপেক্ষ)। এই বিষয়টি নিয়ে বিশদে জেনে নেওয়া দরকার।
কেন আপনি বিনিয়োগ করবেন ফ্লেক্সি ক্যাপ পোর্টফোলিওতে?
আমরা বিভিন্ন পেশাদার পরামর্শদাতাদের কাছে এই প্রশ্ন রেখেছিলাম। উত্তরগুলো একত্র করে, মূল পয়েন্টগুলোর নির্যাস তুলে ধরলাম এখানে।
১. ইক্যুইটি ব্যবহার করে, এবং নানা ধরনের সেক্টরে বিনিয়োগ করে ডাইভারসিফায়েড হোল্ডিংস ধরে রেখে, যদি ক্যাপিটাল বাড়াতে চান, তাহলে ফ্লেক্সি ক্যাপ কৌশল খুব কার্যকরী হতে পারে।
২. ‘গো এনিহোয়্যার’। এই ধারণায় যদি বিশ্বাস থাকে, তাহলে এমন পোর্টফোলিও বেশ কার্যকরী হওয়াটা সম্ভব।
৩. দেখতে হবে পোর্টফোলিও ম্যানেজার আদৌ কোনও মার্কেট ক্যাপে বেশ মনোযোগ দিচ্ছেন কি না – অর্থাৎ ওয়েটেজ বেশি রাখছেন কি না। প্রায়শই দেখা যাচ্ছে, লার্জ ক্যাপের অংশ চোখে পড়ার মতো। এই প্রসঙ্গটি রিটার্নের নিরিখে জরুরি হয়ে উঠবে।
৪. যাঁরা সিপ করতে ইচ্ছুক, তাঁরা এই শ্রেণির ফান্ডের কথা মাথায় রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে বাছাই করা ফ্লেক্সি ক্যাপ খুঁজে নিতে হবে।
৫. খেয়াল রাখতে হবে যে বেশি ‘ডুপ্লিকেশন’ অথবা ‘ওভারল্যাপ’ না হয়ে যায়।
তবে প্রায়শই বিশেষজ্ঞরা দু-তিনটি ফ্লেক্সি ক্যাপ জাতীয় বিকল্পে এক সঙ্গে লগ্নি করার উপর জোর দিয়ে থাকেন।
সঙ্গের চার্টে কিছু ফ্লেক্সি ক্যাপের পরিসংখ্যান দেওয়া থাকছে। তিন বছরের তথ্য দেখে নিন।
বিঃদ্রঃ– কোনও বিশেষ ক্রমানুসারে নয়। রিটার্নের তারতম্য এই চার্ট থেকে স্পষ্ট। তবে কখনই কেবল ঐতিহাসিক তথ্যের উপর নির্ভর করে লগ্নির সিদ্ধান্ত নেবেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.