গত সপ্তাহের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল ফ্যাক্টশিট। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা ফ্যাক্টশিটে কী দেখবেন, তা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। এই সপ্তাহে আলোচনা এগোবে তারই একটি বিশেষ দিক নিয়ে। এবার আমাদের বিষয়-ডেট ফান্ডের খুঁটিনাটি, যা সাধারণভাবে ফ্যাক্টশিট ঘাঁটলে আপনি বুঝতে পারবেন।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি যে, ডেট ফান্ডের ক্ষেত্রে তার হোল্ডিংগুলির শ্রেণিবিন্যাস হতে পারে সেগুলির ক্রেডিট রেটিংয়ের ভিত্তিতে। রেটিং এজেন্সি বিভিন্নভাবে তাদের মতামত জানিয়ে থাকে ঋণপত্র নিয়ে। AAA, AA+, A1+ ইত্যাদি চিহ্নের সঙ্গে পরিচিত হওয়া কাম্য। যে পোর্টফোলিওতে বেশি AAA রেটিং প্রাপ্ত ঋণপত্র অাছে (যেমন লং টার্ম ডেটে দেখা যায়) বা যেখানে বেশি A1+ (শর্ট টার্ম মেয়াদের সিকিউরিটিজে) পাবেন, সেখানে ‘ক্রেডিট কোয়ালিটি’ উন্নতমানের বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ এ সমস্ত ক্ষেত্রে ক্রেডিট রিস্ক তুলনায় কম থাকে।
ধরা যাক, আপনি একটু রক্ষণশীল বা কনজারভেটিভ গোত্রের লগ্নিকারী। তাহলে নিশ্চয়ভাবে দেখবেন, ফান্ড ম্যানেজার কীভাবে ক্রেডিট রিস্ক সামলাচ্ছেন। তিনি কি রিটার্ন বাড়ানোর জন্য স্বল্প রেটিং প্রাপ্ত ঋণপত্রে বেশি মাত্রায় অ্যালোকেশনে বিশ্বাসী? তা যদি হয়, তিনি ইল্ড বাড়ানোর চেষ্টায় আছেন, কিন্তু ঝুঁকি নিয়েই তা করতে চাইছেন।
কোথায় বিনিয়োগ সাধারণত করে থাকেন ডেট ফান্ড ম্যানেজাররা? জেনে রাখুন, সরকারি ঋণপত্র (অর্থাৎ গিল্টস বা গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ) ছাড়াও তাঁদের পোর্টফোলিওতে দেখতে পাওয়া যাবে বিভিন্ন বন্ড ও ডেবেঞ্চার, কমার্শিয়াল পেপার, সার্টিফিকেট অফ ডিপোজিট ইত্যাদি। যদি স্বল্পমেয়াদী ডেট ফান্ড হয়, অর্থাৎ লিকুইড, আল্ট্রা শর্ট টার্ম এবং শর্ট টার্ম ডেট ফান্ড, তাহলে যে দুটির প্রভাব সবথেকে বেশি সেগুলি হল কর্মাশিয়াল পেপার এবং সার্টিফিকেট অফ ডিপোজিট, এগুলির চরিত্র একান্তভাবেই স্বল্পমেয়াদী। অন্যদিকে যদি দীর্ঘমেয়াদী ফান্ড হয়, তাহলে বন্ড এবং গিল্টস, দুই-ই কম-বেশি দেখতে পাবেন। ইন্টারেস্ট রেটে পরিবর্তন যদি দ্রুত হয়, তাহলে এই জাতীয় ফান্ডের ভ্যালুয়েশনও বদলাবে। সবসময় তা বিনিয়োগকারীর জন্য সুখবর বয়ে নাও নিয়ে আসতে পারে। নীচের পাই চার্টটি দেখুন। রেটিং প্রোফাইল লক্ষ্য করুন।
এই চার্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার বেশ কম ঝুঁকি নেওয়ার পক্ষপাতী। উচ্চমানের রেটিং যুক্ত (AAA, A1+) ঋণপত্রে আস্থা রেখেছেন অনেকাংশে। কিছু অ্যালোকেশন হয়েছে সভারেন গোত্রের সরকারি কাগজেও। রক্ষণশীল ইনভেস্টররা হয়তো এতে আগ্রহী হবেন।
এই প্রসঙ্গে কিছু জরুরি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন :
# শর্ট টার্ম ডেট ফান্ডে কখনই দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ রাখবেন না। একইভাবে লং টার্ম ডেট ফান্ড যেন কখনওই স্বল্পমেয়াদী সম্পদের ধারক না হয়ে যায়।
# যদি দীর্ঘমেয়াদী ফান্ড বেছে নেন, তাহলে ইন্টারেস্ট রেট ভোলাটিলিটির জন্য তৈরি থাকুন।
# যদি স্বল্পমেয়াদী টাকার কথা চিন্তা করেন তাহলে বেছে নিন (পরামর্শদাতা কী বলেন তার উপর নির্ভর করে)–
# লিকুইড ফান্ড
# মানি মার্কেট ফান্ড
# আল্ট্রা শর্ট টার্ম ফান্ড
# শর্ট টার্ম ফান্ড
# রিস্কোমিটার দেখুন প্রতিটি ক্ষেত্রে।
Low, Low-to-Moderate, Moderate, Moderately High, High এবং Very High–এই সমস্ত শ্রেণির রিস্কের সঙ্গে পরিচিতি থাকুক।
(তথ্য সংকলনে টিম সঞ্চয়)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.