প্রতীকী ছবি
শিশুসন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চান? তাকে দিতে চান তার আগামীর অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের প্রতিশ্রুতি? তাহলে বেছে নিতে পারেন এলআইসি-র অমৃতবাল প্রকল্প। এক গুচ্ছ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এই প্রকল্পের, যার মধ্যে অন্যতম হল– মেয়াদান্তে প্রদেয় গ্যারান্টেড এডিশনের হার। আলোচনা করলেন বিমা পর্যবেক্ষক দেবাশিস নাথ
আমাদের দেশে প্রথম থেকেই জীবন বিমার পলিসিকে প্রধানত একটি সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়েছে। বিমা সংস্থা সে দৃষ্টিকোণ থেকেই তার প্রকল্পগুলোকে সাজিয়েছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে সেভাবেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। বিমার এজেন্টরাও বাজারের মানসিকতা বুঝে বিমার চেয়ে সঞ্চয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে প্রকল্পগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। বিমার গ্রাহকেরাও একই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রকল্পগুলো কিনেছেন।
বিমার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বাচ্চাদের জন্য নিয়ে আসা বিমা প্রকল্পগুলোর বিশেষ গুরুত্ব থাকে না। কিন্তু সে সব প্রকল্পে যদি প্রস্তাবক-অভিভাবকের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুতে পরবর্তী প্রিমিয়াম প্রদানের দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তির ব্যবস্থা থাকে, তবে বাচ্চাদের প্রকল্পগুলোও প্রয়োজনীয় এবং আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এছাড়াও বাচ্চাদের প্রকল্পে প্রিমিয়ামের হার তুলনামূলকভাবে কম হয় আর মেয়াদান্তে বোনাস বেশি হারে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চাদের মধ্যে বিমার ধারণা তৈরি হওয়া আর সঞ্চয়ের অভ্যেস গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও থাকে বৈকি।
এ সকল বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই এলআইসি ‘অমৃতবাল’ নামে বাচ্চাদের জন্য একটি প্রকল্প নিয়ে এসেছে। প্রথাগত এই প্রকল্পটি ৩০ দিন বয়স থেকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য নেওয়া যেতে পারে। বর্তমান সময়ে আয়ের ধারাবাহিকতার অনিশ্চয়তার কথা ভেবে প্রিমিয়াম প্রদানের সময়সীমা ৫, ৬ কিংবা ৭ বছর রাখা হয়েছে। এছাড়া এককালীন প্রিমিয়াম দেওয়ার সুযোগও রয়েছে। উচ্চশিক্ষা বা অন্য কোন জীবিকা শুরুর সময়ে যাতে থোক টাকার ব্যবস্থা করা যায় সেজন্য বিমাকৃত বাচ্চার বয়স ১৮-র পর থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে যে কোনও বয়সে ম্যাচুরিটির সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রকল্পটি নূন্যতম ২ লক্ষ টাকার জন্য নেওয়া যাবে। প্রস্তাবকের আয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে শর্ত সাপেক্ষে এর ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারিত হবে।
সঞ্চয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে প্রকল্পটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হল, মেয়াদান্তে প্রদেয় গ্যারান্টেড এডিশনের হার। প্রতি হাজারে প্রতি বছরে ৮০ টাকা হারে গ্যারান্টেড এডিশন মূল বিমা রাশির সাথে প্রাপ্য হবে। এত চড়া হারে গ্যারান্টেড এডিশন বর্তমান সময়ে কিন্তু সত্যিই বিরল। শুধু তাই নয়, মেয়াদান্তে প্রদত্ত রাশি প্রয়োজন বুঝলে এককালীন না নিয়ে ৫, ১০ বা ১৫ বছর ধরে মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক বা বার্ষিক কিস্তিতেও নেওয়া যেতে পারে। এভাবে আংশিক থোক ও বাকি অংশ কিস্তিতেও নেওয়া যেতে পারে।
বাচ্চার ৮ বছর বয়স হলে বা পলিসি নেওয়ার ২ বছর পর থেকে (যেটা পরে হবে) জীবনবিমার আওতায় আসবে। দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুতে বিমারাশির সাথে সে সময় পর্যন্ত যুক্ত গ্যারান্টেড এডিশন প্রাপ্য হবে, যা ইচ্ছে অনুযায়ী থোক না নিয়ে সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিমাণ কিস্তিতে নেওয়া যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এই প্রকল্পে প্রিমিয়াম ওয়েভার রাইডার নেওয়ার সুবিধা আছে। অর্থাৎ কিছু বাড়তি প্রিমিয়াম দিলে, প্রিমিয়াম চলাকালীন প্রস্তাবক-অভিভাবকের মৃত্যুতে পরবর্তী প্রদেয় প্রিমিয়াম মকুব হয়ে যাবে।
মৃত্যুকালীন ঝুঁকির পরিমাণও প্রস্তাবকের ইচ্ছে অনুযায়ী এককালীন প্রিমিয়ামের ১.২৫ গুণ অথবা ১০ গুণ নেওয়া যেতে পারে। আবার ৫,৬ কিংবা ৭ বছর ধরে প্রদত্ত প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে প্রতি বছরে দেয় প্রিমিয়ামের ৭ গুণ অথবা ১০ গুণ নেওয়া যেতে পারে। সব দিক বিবেচনা করলে এল আই সি-র ‘অমৃতবাল’ একটি আকর্ষণীয় বিমা প্রকল্প, যা শিশুর ভবিষ্যতের অথনৈতিক চাহিদা পূরণে সক্ষম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.