প্রতীকী ছবি
‘ব্যাফ’ বা ব্যালেন্সড অ্যাডভানটেজ প্ল্যান অনেকেই চান, ইক্যুইটি এবং ডেটের ডাইনামিক অ্যালোকেশন এই ধরনের ফান্ডের মাধ্যমে হতে পারে বলে। এখন ইক্যুইটির ভরা বাজারে কি ব্যাফের প্রাসঙ্গিকতা আদৌ আছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি আমরাও। প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে শ্রী ডি পি সিং, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং জয়েন্ট সিইও, এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ড, এই লেখায় আলোচনার কয়েকটি বিশেষ দিক তুলে ধরলেন। লিখলেন নীলাঞ্জন দে
লগ্নি হিসাবে ব্যাফের যৌক্তিকতা কোথায়?
প্রথমেই মনে রাখবেন, ব্যালেন্সড অ্যাডভান্টেজ প্ল্যানগুলো সব ওপেন-এন্ড হাইব্রিড ফান্ড। দুই প্রধান অ্যাসেট ক্লাসই রয়েছে এক্ষেত্রে, তবে ফান্ড ম্যানেজার ডাইনামিক পদ্ধতিতে অ্যালোকেশন করেন। বাজার চালু পরিস্থিতি অনুযায়ী ইক্যুইটি এবং ডেট, এই দুই অ্যাসেট ক্লাসে বিনিয়োগ করেন তিনি। তার মানে, যে কোনও একটিতে দরকার হলে পুরো ১০০% লগ্নি করা যেতে পারে।
এর নেপথ্যে আছে কৌশলী ফান্ড ম্যানেজমেন্ট। স্ট্র্যাটেজিক কারণে অ্যালোকেশন বদলানো যেতে পারে, চলতি রিস্ক অনুযায়ী অ্যাসেটের বিন্যাস পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়াও ফান্ডের পোর্টফোলিওর মধ্যে রি-ব্যালেন্সিং করা হয় নিয়ম মেনে, যাতে আদর্শ এবং বাঞ্ছনীয় অ্যালোকেশন রাখা সম্ভবপর হয়। এই প্রসঙ্গে ব্যাফ খুব উপযোগী ভূমিকা নিতে পারে, কারণ ইনভেস্টরকে আলাদাভাবে ডেট ফান্ড এবং ইক্যুইটি ফান্ড বেছে নিতে হয় না। তাই অ্যালোকেশনে রদবদল করার দায়িত্বও তাঁর হয় না, এবং ট্যাক্স-সংক্রান্ত দায়ও তাঁর নয়।
বাজারে ইক্যুইটি তো প্রবলভাবে বাড়ছে, এখন কি পুরোপুরি স্টকে বিনিয়োগ করাই উচিত হবে?
দেখুন, ভারতীয় স্টক মার্কেট সামগ্রিকভাবে ‘এক্সপেনসিভ’ হয়েছে, এই বিষয়ে সন্দেহ নেই। আগের তুলনায় বেশির ভাগ শেয়ারের দাম চড়ে আছে, তাও বেশ পরিষ্কার। আমাদের নিজস্ব খোঁজখবরের ভিত্তিতে বলতে পারি যে, সেন্টিমেন্ট বেশ তেজি আছে ইক্যুইটিরই পক্ষে। অবশ্য আমরা আর্নিংয়ের উপর চোখ রাখছি, বিশেষত মিডিয়াম টার্মে কি হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছি। রেভিন্যুই গ্রোথ কি যথাযথভাবে হতে পারছে?–তার দিকেও নজর রেখেছি আমরা। এখানে মনে রাখুন, ব্যাফের নিজস্বতা বুঝে নেওয়ার সময় এসেছে, বিশেষত যেখানে ইক্যুইটির চড়া ভ্যালুয়েশন নিয়ে সন্দিহান ইনভেস্টরদের একাংশ। ব্যাফের ফান্ড ম্যানেজমেন্ট বেশ অ্যাক্টিভ এবং সক্রিয়ভাবে ডেট ও ইক্যুইটির মধ্যে অ্যালোকেশন করা হয়ে থাকে। আমাদের নিজেদের রিসার্চের উপর নির্ভর করছি আগামিদিনের বিনিয়োগের জন্য।
তাহলে এখন সাধারণ লগ্নিকারী ব্যাফে কি আদৌ বিনিয়োগ করবেন?
এখানে বুঝতে হবে ব্যাফ মূলত সেই লগ্নিকারীর জন্য যাঁর না আছে সময় লগ্নি ‘মনিটর’ করার জন্য, না আছে যথেষ্ট এই ব্যাপারে পটুত্ব। তাঁর হয়তো দরকার যথার্থ ব্যালেন্স, যেখানে এক ধরনের সমতা লক্ষ্য করা যায় ইক্যুইটি ও ডেটের সমন্বয়ে। মার্কেটে যা পরিস্থিতি, তার সঙ্গে যুঝে ওঠার ক্ষমতা থাকতে হবে, এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর পক্ষে তা নিজে করা কার্যত অসম্ভব।
ব্যাফ, এই প্রসঙ্গে মনে রাখুন, যথেষ্ট ভালো ফল করতে পারে যদি দীর্ঘ এবং মধ্যমেয়াদী লগ্নি করা হয়। প্রয়োজন বুঝে অ্যালোকেশনে পরিবর্তন আনতে পারেন কর্তৃপক্ষ। ট্যাক্সেশনের নিরিখে সুবিধাজনকও বটে। আপনি নিজে আলাদা আলাদা ফান্ড থেকে অদলবদল করুন, তাতে খুব একটা ভালো ফল নাও পেতে পারেন। তার তুলনায় ব্যাফে একটি ডাইভারসিয়াফায়েড পোর্টফোলিওর উপর নির্ভর করা ভালো। রিস্ক ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি প্রফেশনালের হাতে ছেড়ে দেওয়াই সমীচিন। তাই আমার মতে ব্যাফের বিকল্প নেই।
ব্যালেন্সড অ্যাডভ্যান্টেজ ফান্ড
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.