প্রায় দু’দশক পর আইপিও ইস্যু করতে পারে টাটা গ্রুপ। টাটা টেকনোলজিস-এর প্রস্তাব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ চড়ছে। সংস্থার বাজার যথেষ্টই বিস্তৃত, সঙ্গে রয়েছে টাটার সুনাম। তাই প্রাইমারি মার্কেটে বড় খবরের জন্য তৈরি থাকুন। ‘সঞ্চয়’-এর জন্য বিশেষ এই লেখায় গ্রাহকদের ওয়াকিবহাল করলেন হেড রিসার্চ AUM Capital Market, রাজেশ আগরওয়াল
আইপিও তো কতই আসে! তাদের প্রত্যেকটি ঘিরে কম-বেশি প্রত্যাশা তৈরিও হয়। টাটা গ্রুপের সম্ভাব্য প্রাইমারি মার্কেটের অফার ঘিরেও প্রত্যাশাও মোটেই অল্প নয়। আমি বলছি টাটা টেকনোলজিসের ইস্যুর কথা। প্রায় দুই দশক বাদে টাটা গ্রুপের থেকে আইপিও ইনভেস্টরদের হাতে আসবে বলে খবর। হ্যাঁ, গ্রুপের সর্বশেষ আইপিও ছিল ২০০৪ সালের জুলাই মাসে, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেসের তরফ থেকে আমরা পেয়েছিলাম। এবারে আসতে চলেছে ‘অফার ফর সেল’ (OFS) শেয়ারহোল্ডাররা ৯.৫৭ কোটি ইকুইটি শেয়ার, মানে সংস্থার পেড-আপ শেয়ার ক্যাপিটালের ২৩.৬০%, অফলোড করবেন এই ক্ষেত্রে।
টাটা টেকনোলজিস নিয়ে সংক্ষেপে বলতে গেলে প্রথমেই জানাতে হয় যে এটি টাটা মোটরসের সাবসিডিয়ারি। টাটা মোটরসের প্রায় ৭৫% স্টেক আছে। এবং টাটা টেকনোলজিস একটি পুরোদস্তুর ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস সংস্থা। প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট এবং ডিজিটাল ইঞ্জিনিয়ারিং সলিউশনস দিয়ে থাকে এটি। লক্ষ্য, OEM অথবা ‘অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স’ এবং তাদের প্রথম সারির সাপ্লায়ারগুলি।
এবার আসি সংস্থার ব্যবসার কথায়। পাঠকদের জানাতে চাই যে সংস্থার উপস্থিতি আঠেরোটি ডেলিভারি সেন্টার জুড়ে। প্রায় এগারো হাজার কর্মী তাঁদের শ্রম দান করছেন এশিয়া-প্যাসিফিক, ইউরোপ, নর্থ আমেরিকায়। তাঁদের ‘বাজার’ কোথায়? এর উত্তরে বলতে হয় একগুচ্ছ ইন্ডাস্ট্রির কথা। অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া আছে এরোস্পেস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি এবং হেলথকেয়ার। এই সমস্ত সেক্টরে নানাবিধ পরিষেবা দিয়ে থাকে সংস্থাটি।
এছাড়াও আমি আপনাদের বলতে চাই যে এ যুগের ট্রেন্ড, যার মধ্যে ইভি বা ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল আছে, এই প্রসঙ্গে খুব জরুরি। সংস্থার পরিষেবায় উপকৃত হচ্ছে তিরিশের বেশি অটোমোটিভ OEM এবং সাপ্লায়ারগুলি। JLR, Airbus, Honda, Ford ইত্যাদির নাম বলা যেতে পারে। নতুন প্রজন্মের ইভি সংস্থার সঙ্গেও ব্যবসা শুরু হয়েছে। প্রধানত, এর রেভিনিউর উৎস টাটা মোটরস এবং জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার।
এবার আসুন কিছু পরিসংখ্যানে। আর্থিক বর্ষ ২০২৩-এ, টাটা টেকনোলজিসের রেভিনিউ ২৫.১% (ইয়ার অন ইয়ার) বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৪১৪ কোটি টাকায়। যদি কম্পাউন্ডেড অ্যানুয়াল গ্রোথ (CAGR) দেখেন, তাহলে বুঝবেন রেভিনিউ আনুমানিক ১২% বেড়েছে গত চার বছরে। এবং প্রফিট বিফোর ট্যাক্স (PBT) চড়েছে প্রায় ৩৬% (ইয়ার অন ইয়ার), গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯৬ কোটি টাকায়।
এই মুহূর্তে খেয়াল রাখতে হবে যে ইস্যু প্রাইস এখনও ঘোষিত হয়নি। তবে সব কিছু মাথায় রেখে, বিশেষত সংস্থার বড়মাপের উপস্থিতির (নানাবিধ ভার্টিকালসের) কথা মনে করে, আমি বলতে চাই লং টার্মের জন্য এই প্রস্তাবের দিকে নজর রাখা উচিত। ইভির মার্কেটের সম্ভাবনা এবং টাটা গ্রুপের সুনাম, সব দিকেই খেয়াল রাখতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.