ছবি: প্রতীকী
বাজারজুড়ে আলোড়ন। একদিকে নিফটি ছাপিয়ে গিয়েছে কুড়ি হাজারের ঘর, অন্যদিকে স্মল ও মিড ক্যাপ, দুই-ই খবরে। গ্রাহক এখন কী করতে পারেন? ‘গ্রোথ’-এর নিরিখে কোন কোন সেক্টর প্রতিশ্রুতিময় এবং কেন, তারই খোঁজ দিলেন রাজেশ আগরওয়াল
‘সঞ্চয়’-এর পক্ষ থেক শ্রী রাজেশ আগরওয়ালকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, বিশেষ কয়েকটি ট্রেন্ড নিয়ে আলোচনা করতে। এখনকার স্টক মার্কেটের ধারার ভিত্তিতে কয়েকটি সম্ভাবনাময় সেক্টর নিয়ে তিনি যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তারই নির্যাস তুলে ধরা হল এই লেখায়।
আলোচনা শুরু করার আগে পাঠককে মনে করিয়ে দিই যে, অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন তাঁরা কী করবেন এখন? কারণ নিফটি কুড়ি হাজার ছাড়িয়েছে এবং স্মল ও মিড ক্যাপ, দুই ক্ষেত্রেই আলোড়ন উঠেছে। কোথায় বিনিয়োগ করবেন তাঁরা, কোন সেক্টরে লগ্নি করলে রিটার্ন ভাল পাবেন? এই প্রশ্ন আজ সর্বত্র। বলে রাখি বাজারের অভিমুখ কোন দিকে হবে তার পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব শর্ট টার্মে। তবে হ্যাঁ, যদি ফান্ডামেন্টালস দেখে ভাল সংস্থার (যেখানে ম্যানেজমেন্ট উন্নতমানের) স্টক কেনেন, তাহলে নিশ্চয় অন্তত ভদ্র গোছের পারফর্ম্যান্স দেখতে পারবেন। আমার ধারণা, ভারতবর্ষের বাজারে গ্রোথের সম্ভাবনা ভাল। তার কারণ বেশ কিছু ইতিবাচক শর্তের একত্রীকরণ দেখা যাচ্ছে। মূলধনী খরচ, জনসংখ্যা, সংস্কার নীতি এবং উৎপাদনশীলতায় জোর- এই চার শর্ত আমাদের নতুন দিশা দেখাবে বলে মনে করি। তবে একই সঙ্গে বলে রাখা ভাল যে, সম্প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে, কয়েক ক্ষেত্রে গ্রাহক-চাহিদা কমেছে, বৃষ্টির আসা না আসার দোলাচল দেখা গেছে এবং অন্য ঝুঁকির সঙ্গে সুদের হার ও বিশ্ব রাজনীতি-জাতীয় বিষয়গুলি জুড়ে গেছে।
এত হলে ভূমিকা। এই লেখায় তিনটি বিশেষ ট্রেন্ড বা সেগমেন্ট নিয়ে বলতে চাই।
# ব্যাঙ্কিং
# ক্যাপেক্স
# ম্যান্যুফ্যাকচারিং
একে একে বলি। আমরা এখন পরের ক্রেডিট সাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে। হোলসেল ক্রেডিট ডিমান্ড বাড়বে বলে বিশ্বাস করি। রিটেল ক্রেডিটের চাহিদা জোরালো থাকবে। বেশিরভাগ ব্যাঙ্কের যথেষ্ট সুষ্ঠু ‘ক্যাপিট্যাল অ্যাডিকোয়েসি’ আছে। ফান্ডামেন্টালস যদি দেখেন, ব্যাঙ্কের পরিস্থিতি ভালই, ভ্যালুয়েশনও খুব চড়ে নই। গত কয়েক কোয়ার্টারের খবর যদি রাখেন দেখবেন অনেকগুলি ব্যাঙ্কই ভাল অবস্থায় অাছে। ক্যাপেক্স সাইকেল (যা নিয়ে পরে বলছি) নতুনভাবে শুরু করার প্রাক্কালে ব্যাঙ্কিং সেক্টর থেকে সুখবর পাওয়া সবে মনে হচ্ছে।
আর, হ্যাঁ, ক্যাপেক্স অবশ্যই জরুরি। সরকার এখন প্রচুর লগ্নি করছেন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের জন্য। রাস্তা বা পোর্ট ছাড়াও অনেক প্রাইভেট সংস্থার ভূমিকা আছে এখানে। কোম্পানিগুলি সামান্য ‘Maintenance Capex’ থেকে সরে গিয়ে ‘discretionary Capex’-এর দিকে এগিয়েছে। লিস্টেড সংস্থাগুলি দেখলে ক্যাপেক্সের বহর বেড়েছে, ইয়ার-অন-ইয়ারের ভিত্তিতে ২১% বেশি।
এবার দেখুন ম্যানুফ্যাকচারিং। অর্থনীতির অন্যতম প্রয়োজনীয় অংশ। সরকারি নীতি, বিশেষভাবে প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ বা PLI, খুব সহায়ক ভূমিকায় দেখতে পাচ্ছি। একাধিক অান্তর্জাতিক প্লেয়ার আজ এই দেশে লগ্নি করছে। সব মিলিয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং আগামীগুলিতে ভাল করবে।
অ্যাপেলের কথাই ধরুন না। আজ আইফোন ১৫ তৈরি হচ্ছে চেন্নাইতে। এই প্রথমবার এই টেক সংস্থার মেড-ইন-ইন্ডিয়া কোন প্রোডাক্ট এভাবে ভারতবর্ষে বিক্রি হয়েছে, ঘোষণার (লঞ্চের) সময় থেকে। পরের ৪/৫ বছরে তো প্রোডাকশন বাড়ার কথা পাঁচগুণের বেশি। আর এই উদাহরণ কেবল একটি। সব মিলিয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং ভবিষ্যতে অনেক গ্রোথ দেখতে পারবে।
(লেখক হেড রিসার্চ, AUM Capital)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.