প্রতীকী ছবি
মাল্টি ন্যাশনাল কর্পোরেশন বা এমএনসি তো অনেক শ্রেণিরই হতে পারে। কোনওটি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত, আবার কোনওটি প্রযুক্তি-সংক্রান্ত পরিষেবা দিয়ে থাকে। এহেন এমএনসি নিয়ে বাজারে আগ্রহী লগ্নিকারীর সংখ্যা অনেক। ইউটিআই মিউচুয়াল ফান্ডের তরফে শ্রী কার্তিকরাজ লক্ষণন, ফান্ড ম্যানেজার, ইক্যুইটি, এই প্রসঙ্গে আলোচনা করলেন।
বহু মাল্টিন্যাশনাল সংস্থাই তো বিশেষ কিছু সেক্টরে বিচরণ করে, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা তা বেশ বোঝেন। এই সব সংস্থাগুলো কীভাবে তাঁদের আকর্ষণ করবে ভবিষ্যতে?
এদেশে এমএনসিগুলোতে সাধারণত কয়েকটি ‘কমন ফ্যাক্টর’ দেখা যায়। ব্যবসার মডেল হয় ‘অ্যাসেট লাইট’ – রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সম্বন্ধীয় খরচ প্রচুর, প্রযুক্তি এবং ব্র্যান্ড, সব কিছুকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। এছাড়াও, ক্যাশ ফ্লো অনেক ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো হয়ে থাকে, ডিভিডেন্ড পেআউটের হারও বেশ ভালো হয়। গর্ভন্যান্স সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলেন কর্তৃপক্ষরা। কিছু ক্ষেত্রে সংস্থার ভারতীয় শাখা ইতিমধ্যেই বিশাল আকৃতির, আর অন্য কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় শাখা ভবিষ্যতে ব্যবসার নির্ধারক হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হয়। বহু জায়গায় বিদেশি হেড কোয়াটার্স ভারতীয় শাখার উপর বিরাট ভরসা করে চলে।
সব মিলিয়ে লগ্নিকারীরা এমএনসি-কে সম্ভাবনাময় বলে চিহ্নিত করেন এই সমস্ত কারণে। তাঁদের অংশগ্রহণের পিছনেও এই একই কারণ, এমনও বলা যেতে পারে। এছাড়াও আমি বলতে চাই যে, মাল্টিন্যাশনালদের পরিসর তো আমাদের দেশে বেশ বিস্তৃত বলা চলে। কনজিউমার স্টেপলস, অটোমোবাইল, হেলথকেয়ার, ইনফোটেক বা ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস, এমএনসিদের উপস্থিতি বেশ প্রখরভাবে বোঝা যায়। মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের নিরিখেও এদের ভূমিকা খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।
আপনাদের নিজেদের এমএনসি পোর্টফোলিওর পরিস্থিতি আজ কেমন?
দেখুন, আমরা জানি এমএনসি থিম হিসাবে বেশ ডাইভারসিফায়েড। আমাদের এক্সপোজারও একগুচ্ছ সেক্টরে। যেমন ধরুন এফএমসিজি, হেলথকেয়ার, অটোমোবাইল, ক্যাপিটাল গুডস ইত্যাদি। ইউটিআই এমএনসি ফান্ড যদি ধরেন, তাহলে আমরা ‘আন্ডারওয়েট’ আছি এফএমসিজি’তে। তাও এই বিশেষ ক্ষেত্রে আমরা ফুড ও বেভারেজ সেগমেন্টে লগ্নি করেছি, কারণ গ্রোথের সম্ভাবনা যথেষ্ট বলে মনে করি। আবার অন্যদিকে হেলথকেয়ারে আমরা ‘ওভারওয়েট’। এটি কিছুটা ডিফেন্সিভ শ্রেণীর সেক্টর বলে গণ্য করা যেতে পারে। এছাড়াও আমরা ক্যাপিটাল গুডসে ‘আন্ডারওয়েট’, কারণ ভ্যালুয়েশন নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে এক্ষেত্রে। আবার দেখুন, নন-লেন্ডিং ফিনান্সিয়ালস সম্বন্ধে আমরা ‘ওভারওয়েট’। আংশিকভাবে ইনফোটেক নিয়েও আমরা ‘ওভারওয়েট’ হয়ে আছি। এখানে কোনও থিম নিয়ে পক্ষপাত না করে বলছি, এই ক্ষেত্রে আজ ডাইভারসিফিকেশনের সম্ভাবনা ভালো, এবং মার্কেট ক্যাপেও বাড়বৃদ্ধিও তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
লগ্নিকারীরা কী নিয়ে সতর্ক থাকবেন যদি এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে চান?
ইউটিআই এমএনসি ফান্ডকে ‘স্যাটেলাইট অ্যালোকেশন’ হিসাবে গণ্য করতে পারেন। তাঁদের ‘কোর অ্যালোকেশন’ তো থাকবে, তারই সঙ্গে সংযোজন হতে পারে এই ফান্ড। যে এসএনসি সংস্থাগুলো নির্বাচন করেছি, সেখানে আর্নিংস গ্রোথ মোটামুটি স্থিতিশীল, পোর্টফোলিওতে ডাইভারসিফিকেশন যথেষ্ট, এ-ও দেখতে পাবেন। লং টার্ম ধরলে, Nifty MNC ইনডেক্সটি কিন্তু Nifty 50 সূচককে হারিয়েছে। এবার বুঝতে হবে ভ্যালুয়েশন কি যথাযথ না কি কিছুটা উপরের দিকে চড়েছে? আমাদের ফান্ডটি ওপেন-এন্ড, লং-টার্ম ক্যাপিটাল অ্যাপ্রেসিয়েশনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন লগ্নিকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.