ইনডেক্স ফান্ড তথা ইটিএফ কম খরচে চালানো সম্ভব। আজকাল বাজারে ‘এক্সোটিক’ ইনডেক্সও মিলছে। সব মিলিয়ে দেশের বাজার এখন ‘ইনডেক্স’ময়। কিন্তু লগ্নি সঠিক হলে তবেই না দেখবেন লাভের মুখ! সেই গাইডলাইনই ‘টিম সঞ্চয়’কে দিলেন ডিএসপি মিউচুয়াল ফান্ডের হেড-প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রোডাক্টস, অনিল ঘেলানি
ইনডেক্সের ব্যবহার বাড়ছে, আজ ভারতীয় মার্কেটে অনেক ইনডেক্স-ভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইনডেক্স ফান্ড এবং ইটিএফের বহর কম নয়। তাদের সংখ্যা এবং বৈচিত্র, দুই-ই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনভেস্টররা কীভাবে কৌশলী লগ্নি করবেন এই ক্ষেত্রে? প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন DSP Mutual Fund-এর হেড-প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রোডাক্টস, শ্রী অনিল ঘেলানি।
#ইনডেক্সিংয়ের ব্যবহার বাড়ছে। কীসের জন্য এমন ট্রেন্ড বৃদ্ধি পাবে বলে আপনি মনে করেন?
আপনার অ্যাক্টিভলি ম্যানেজড ফান্ড, মনে রাখুন, ধারাবাহিক গতিতে বাড়বে না বা ‘আউটপারফর্ম’ করবে না। বিনিয়োগকারীরা বুঝে গিয়েছেন, ইনডেক্স ফান্ড বা ইটিএফ, কম খরচে চালানো সম্ভব। ‘লো কস্ট’ লগ্নি, প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্টের এই বৈশিষ্ট্য এড়ানো যাবে না। তাছাড়াও সম্ভাব্য পারফরম্যান্স দেখুন। ইনডেক্স ফান্ডের ক্ষেত্রে মার্কেটকে হারিয়ে দিয়ে বেশি রিটার্ন দেওয়ার ক্ষমতা আছে। বিশেষ করে লার্জ ক্যাপ ফান্ডের কথা বলি। লার্জ ক্যাপ এমনই এক শ্রেণীর স্টক সেখানে অ্যাক্টিভ ফান্ড খুব ধারাবাহিক ভাবে আউটপারফর্ম করতে পারে না। সেই জন্য প্যাসিভ ফান্ড ব্যবহার করুন লার্জ ক্যাপের ক্ষেত্রে। একই সঙ্গে স্মল ক্যাপে বিনিয়োগ করুন অ্যাক্টিভ ফান্ডের ভিত্তিতে।
#ইদানীং ভ্যালু-অ্যাডেড ইনডেক্সিংয়ের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এখানে গ্রোথের সম্ভাবনা কেমন হতে পারে?
হ্যাঁ, ‘এক্সোটিক’ ইনডেক্সও আজ পাওয়া যাচ্ছে, স্মার্ট বিটা স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু নতুন ধরনের ফান্ডও বাজারে এসেছে। এই মুহূর্তে এর জন্য চাই ইনভেস্টরদের মানসিকতায় বদল। তাঁরা যেন বুঝতে পারেন জরুরি বিষয়গুলি। তিনটি প্রয়োজনীয় কথা বলি এই প্রসঙ্গে :
*রিটার্ন বাড়ার সম্ভাবনা
*রিস্ক কমিয়ে আনার চেষ্টা
* ডাইভারসিফিকেশনের রেশ ধরে রাখা
মনে রাখুন ইনডেক্সের ক্ষেত্রে কিন্তু যথেষ্ট স্বচ্ছতা আছে। এখানে বিনিয়োগকারীর কাছে অনেক কিছুই পরিষ্কার যাকে একেবারে গোড়া থেকে ধরলে। লো-কস্টের কথা তো আগেই বলেছি। এই কয়েকটি বিষয় লগ্নিকারীরা যেন ভালভাবে বুঝে নেন শুরুতেই। তাহলে গ্রোথ আসতে বাধ্য। আমার মনে হয়, সাবেকি ইনডেক্সিং জনপ্রিয় তো হবেই, ভ্যালু অ্যাডেড কৌশলও তার নিজস্ব কিন্তু তুলনায় ছোট জায়গায় অবস্থান করবে।
#ইনভেস্টররা তো ভুলভ্রান্তিও করে ফেলেন অনেক ক্ষেত্রে। ইনডেক্স ফান্ডের ক্ষেত্রে তা কীভাবে এড়ানো যাবে?
হ্যাঁ, লগ্নিকারীরা বহু সময় ‘টাইমিং দ্য মার্কেট’ করার চেষ্টা করেন। তাঁদের আমি মূল কথাগুলি আবার ঝালিয়ে নিতে অনুরোধ করব। দেখুন, তাঁরা তো সামগ্রিকভাবে ফাইন্যান্সিয়াল গোলস ভিত্তিক কৌশল নিতে চান। যাতে তাঁদের সার্বিক সিদ্ধান্তগুলি সেই সব গোলসের দিকে নিয়ে যায়, তার ব্যাপারে সচেষ্ট হন। টাইমিং করার প্রয়াস না করাই ভাল। এই অভ্যাস ত্যাগ করুন।
#অ্যাক্টিভ বনাম প্যাসিভ? না কি অ্যাক্টিভের সঙ্গে প্যাসিভ? কীভাবে দেখা উচিত?
দুটি পরিপূরক। তাই সাধারণভাবে দুই ধরনের ফান্ডেই বিনিয়োগ করতে হবে। এই ধারণাটি সম্প্রতি জনপ্রিয় হচ্ছে, আমিও সেই কথাই বলতে চাই। লংটার্ম ইকুইটি অ্যালোকেশনের লক্ষ্যবস্তু করুন লার্জ ক্যাপকে। দীর্ঘদিনের সফল বিনিয়োগ করুন দুইভাবে-এক, প্যাসিভ ফান্ড, এবং দুই, বিশেষ কয়েকটি স্মল ক্যাপ এবং থেমাটিক ফান্ডে। একই সঙ্গে অ্যাক্টিভ লগ্নি করা বন্ধ করবেন না।
#রিটেল ইনভেস্টর সব থেকে ভাল ইনডেক্সগুলি কীসের ভিত্তিতে বেছে নেবেন? যেমন ধরুন, প্রথমে Nifty 50 নেবেন, না কি আগে Nifty Next?
এখানে দু’টি নিয়ম মেনে চলুন। ভাল স্টক এবং একাধিক সেক্টরে লগ্নি করুন। ডাইভারসিফিকেশনের খুব দরকার। যদি গোড়া থেকে শুরু করেন, তাহলে সর্ববৃহৎ স্টকগুলির কথা প্রথমে ভাবুন। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছে, অর্থনীতির বহু ক্ষেত্রে তাদের পা পড়েছে, অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে নিজস্ব সেগমেন্ট। Nifty 50 তাই প্রামাণ্য একটি ইনডেক্স। যদি কম রিস্ক চান তাহলে Nifty 50 Equal Weight Index বেছে নেবেন।
পরিশেষে বলি, ইকুইটির সঙ্গে ডেট ইনডেক্স ফান্ডও নজরে রাখুন। সুষ্ঠু একটি পোর্টফোলিও গঠন করে নিজের ইনভেস্টমেন্ট গোলস পূরণ করার চেষ্টা করুন। দরকার বুঝলে বিশ্বাসী পরামর্শদাতার সাহায্য নিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.