প্রতীকী ছবি
জীবনবিমার প্রয়োজনীয়তা আজ আর নতুন করে ব্যাখ্যা করা অমূলক। স্বাস্থ্যবিমাও এই শ্রেণিতেই পড়ে। তবে এই ক্ষেত্রে নতুন কিছু সুযোগসুবিধার চল হয়েছে, যা পলিসিহোল্ডারদের অবশ্যই কাজে লাগবে। তথ্য সংকলনে ইএসজি সার্টিফায়েড কর্পোরেট গর্ভন্যান্স প্রোফেশনাল অরূপ দাশগুপ্ত।
পরিবর্তনের হাওয়া সর্বদা তুমুল বেগে আসে না, মাঝে মাঝে মৃদু কম্পনও আসন্ন অনেক কিছুর ইঙ্গিত বয়ে আনে। বিমার দুনিয়ায় নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ আইআরডিএ (IRDA), যখন বদলের বিষয় জানায় তখন এই কথাটা মনে আসে। ‘ইনসিওরেন্স ফর অল বাই ২০৪৭’ শীর্ষক নিয়ন্ত্রক যে মিশন নিয়েছে, সেই প্রসঙ্গে জানাতে চাই। ভারতীয় সমাজের গভীরে প্রবেশ করা চেষ্টা নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি ভারতীয় যেন যথেষ্ট লাইফ ইনসিওরেন্স থাকে, তাঁর নিজের এবং পরিবার-ভুক্ত প্রত্যেকের জন্য – এমনই ভাবনার ফল এই মিশন। হেলথ ইনসিওরেন্সও এই লক্ষ্যের বিষয়বস্তু, সঙ্গে আছে অ্যাক্সিডেন্ট ইনসিওরেন্স, প্রপার্টি ইনসিওরেন্স ইত্যাদি।
কেন এমন মিশন আলাদা করে নিতে হচ্ছে? মনে রাখতে হবে ‘ইনসিওরেন্স পেনিট্রেশন’ সংক্রান্ত বিষয়গুলো। পরিসংখ্যান বলে, আমাদের দেশে, জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) তুলনায়, বিমা ৪% বা তারও কম। এবং ৯০% হাউজিংয়ের কোনরকম প্রপার্টি ইনসিওরেন্স নেই। এছাড়াও, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রের বিমার প্রবল অভাব। অথচ, সাধারণ জ্ঞান বলে যে বিমা হওয়া উচিত সুলভ, যা সহজেই পেতে পারেন সাধারণ মানুষ। আর সেই সুবাদে খরচও হওয়া উচিত যথাসম্ভব কম। এই বিষয়ে সজাগ হওয়া অবশ্যই দরকার।
এবার আসুন নিয়ন্ত্রকের কথায়। কর্তৃপক্ষ চান ক্রেতাকে আরও বিকল্প পৌঁছে দিতে, এবং নতুন সুযোগ-সুবিধা তাঁর হাতে তুলে দিতে। তাহলে পূর্ণমাত্রায় বিমার উপকারিতা তাঁরা পাবেন। একশো ভাগ মানুষ ইনসিওরেন্সের আওতায় আসতে পারবেন। সেজন্য পদক্ষেপও নিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সম্প্রতি।
যদি কেবল স্বাস্থ্য বিমা নিয়ে বলি, তাহলে জেনে রাখা ভালো যে পলিসিহোল্ডাররা এখন থেকে কয়েকটি সুযোগ পাবেন। সংক্ষিপ্ত আকারে পয়েন্টগুলো এখানে দিলাম।
১. এমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে এক ঘন্টার মধ্যে ক্যাশলেস লিমিটের সুবিধা নিতে পারবেন গ্রাহক।
২. ট্রিটমেন্ট শেষ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে রোগী ডিসচার্জ হতে পারবেন।
৩. প্রি-অথরাইজেশন যাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পলিসি হোল্ডারদের দেওয়া যায়, সেই দিকে বিমা সংস্থাকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
৪. স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে, প্রিমিয়ামের উপর ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে যদি গত বছরে কোনও ক্লেম না হয়ে থাকে।
৫. গ্রাহকরা যে কোনও সময় নিজেদের পলিসি ক্যান্সেল করতে পারবেন (টার্ম চলাকালীন) এবং বছরের বাকি সময়ের জন্য প্রিমিয়ামের অংশ ফেরৎ পেতে পারবেন।
৬. স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে, বিমা কেনার কোনও ‘আপার এজ লিমিট’ ধার্য করা হবে না। ঘটনাচক্রে, এই মুহূর্তে তেরোটি হেলথ ইনসিওরেন্স প্ল্যান আছে যেখানে আপার এজ লিমিট হল ৯৯ বছর এবং আরও সাতটি প্ল্যানের জন্য ঊর্ধ্বসীমা হল ৭৫ বছর। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রি-এক্সিজটিং ডিজিজ সংক্রান্ত সুযোগ। এক্ষেত্রে ওয়েটিং পিরিয়ড কমিয়ে আনার কথা হয়েছে, চার বছর থেকে তিন বছরে। এই জাতীয় অদলবদলের কারণে গ্রাহকরা উপকৃত হবে, এমন আশা করাই যেতে পারে। অবশ্য সে জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং থার্ড পার্টি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থার সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.