প্রতীকী ছবি
বাজারের হালচাল সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখেন যাঁরা, বস্তুত যাঁরা লগ্নিও করেন, তাঁরা যে এসডব্লুপি তথা সিস্টেম্যাটিক উইথড্রয়াল প্ল্যান সম্পর্কে জানবেন, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এঁদের অনেকেই জানেন না, এর সর্বোচ্চ স্তরের সুবিধা নেওয়ার পন্থাগুলি কী কী? সেই হদিশই দিলেন পার্সোনাল ফিনান্স প্র্যাকটিশনার অশোক আগরওয়াল
সঞ্চয়-এর পাঠকদের জন্য এবার ভাবলাম, একটি চিরাচরিত কিন্তু “এভারগ্রিন” ধারণার সূত্র নিয়ে আলোচনা করব। সিস্টেম্যাটিক উইথড্রয়াল প্ল্যান বা সংক্ষেপে এসডব্লুপি নিয়ে আমরা কম চর্চা করি না, তবুও আমি মনে করি প্রসঙ্গটি সবসময়ই জরুরি, বিশেষ করে আজকালকার দিনে। ছোট করে বললে এসডব্লুপি ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে থাকতে পারবেন লগ্নিকারীরা। নিয়মিত এবং পরিকল্পিত উপায়ে একটি ‘ফিক্সড’ পরিমাণ টাকা তাঁদের ফান্ড থেকে বেরিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে এর মাধ্যমে।
এসডব্লুপি কে ব্যবহার করতে পারেন “অপটিমাম” পদ্ধতিতে? এক কথায়, যদি আপনার ধারাবাহিকভাবে টাকার দরকার হয়, তাহলে এতে আপনার উপকার হবে, বলতে পারি। সঙ্গের পয়েন্টগুলো দেখুন।
১। আপনি কি রিটায়ার্ড? নিয়মিত (ধরুন, প্রতি মাসে) টাকা চাই, যা নিয়ে সংসার চালাতে হবে?
২। আপনি কি ‘বাল্ক’ লগ্নি করতে রাজি এক/একাধিক ফান্ডে, আর সেখান থেকে প্রতিবার উইথড্র করার কথা ভাবেন?
৩। আপনার জন্য ব্যাঙ্ক ডিপোজিট কি যথেষ্ট নয়? কিঞ্চিৎ বেশি রিটার্ন পাওয়ার সুযোগ খুঁজছেন, সঙ্গে যথেষ্ট “লিকুইডিটি”?
পাঠকদের সুবিধার জন্য সঙ্গে চার্ট দিলাম। এর নির্যাস আমি সকলের সঙ্গে আলোচনা করি, বন্ধুবান্ধবদের করার ব্যাপারে পরামর্শও দিয়ে থাকি।
কী করবেন? কী করবেন না?
ক– কেবল একটি ফান্ডের উপর নির্ভর না করাই উচিত।
খ– কত টাকার পে আউট চান, তা বুঝে নিতে হবে। প্রতি মাসে নেবেন, অথবা প্রতি কোয়ার্টারে, আপনিই সিদ্ধান্ত নিন।
গ– খেয়াল করুন, মূল ফান্ড (যেখান থেকে রিডিম করছেন) কিন্তু আপনাকে কোন গ্যারান্টিও রিটার্ন দেবে না।
ঘ– উইথড্রয়াল করুন, তবে তা
যেন বাস্তবসম্মত হয়। যা দরকার, ঠিক ততটাই করুন।
ঙ– আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট,
যেখানে রিডেমশন প্রতিবার ক্রেডিট হবে, যেন চালু থাকে সব অর্থে। প্রয়োজনে KYC আবার করার থাকলে, করে নিন। এতে “ইনফ্লো” আটকাবার সম্ভাবনা থাকবে না।
এসডব্লুপি : কেস স্টাডি
ধরা যাক আজ কমলবাবু ১০,০০,০০০ টাকার লগ্নি করেছেন কোন বিশেষ এক মিউচুয়াল ফান্ডে। তাঁর প্রতি মাসে হাজার দশেক টাকা লাগে। তাহলে
একক লগ্নি : ১০,০০,০০০ টাকা
উইথড্রয়ালের পরিমাণ : ১০,০০০ টাকা (মাসে)
প্রতিবার ফান্ড ম্যানেজার কিছু সংখ্যক ইউনিট বিক্রি করবেন।
রিডেম্পশনের পর বাকি ইউনিটগুলি মার্কেট অনুযায়ী রিটার্ন দিতে থাকবে।
কয়েকটি কৌশল
আমি ইদানীং ইনভেস্টরদের বলছি “স্মার্ট” হতে। নির্দিষ্ট কয়েকটি কৌশল মেনে চলতে। অবশ্য এই নিয়মগুলি সকলে মেনে চলতে পারবেন না, সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুকূল হতে হবে। তাই যদি একান্ত অসুবিধা না হয়, এই নীতিগুলি মেনে চলার চেষ্টা করুন–
১) বাজারের গতিবিধি দেখুন। প্রত্যেক মাসের সূচক পড়ছে, এমন যদি হয় তাহলে কৌশল পরিবর্তন করার দরকার হতে পারে। সেক্ষেত্রে উইথড্রয়ালের পরিমাণ কি কমিয়ে আনা যায়?
২) পুরনো এসডব্লুপির ম্যানডেট বদলে নতুন দেওয়ার কথা ভাবুন, পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে।
৩) ট্যাক্স-এফিসিয়েন্সি সম্বন্ধে জানুন। আপনার প্রিন্সিপালের উপর ট্যাক্স নেই। তবে গেনসের উপর আয়কর বসবে, জেনে রাখুন। লাম্পসাম উইথড্রয়াল হলে বেশি ট্যাক্সও দিতে হত, বুঝুন তা-ও।
৪) কম্পাউন্ডিংয়ের সুবিধা আপনার। যে ইউনিট প্রতিবার ফান্ডে পড়ে থাকে, তা কিন্তু আপনাকে ক্যাপিটাল গ্রোথ এনে দিতে পারে। তাই-ই চান লগ্নিকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.