আদিত্য বিড়লা সান লাইফ মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে এসেছে এনএফও। এর মাধ্যমে আমেরিকার ট্রেজারি বন্ডে লগ্নির পথ গিয়েছে খুলে। কেন লগ্নি করবেন, কারণ সাজিয়ে দিল টিম সঞ্চয়
মার্কিন মুলুকের ট্রেজারি বন্ডে লগ্নি করার রাস্তা খুলে দিলেন আদিত্য বিড়লা সান লাইফ মিউচুয়াল ফান্ড কর্তৃপক্ষ। একটি NFO-র মাধ্যমে ভারতীয় লগ্নিকারীরা এখন বিনিয়োগ করতে পারেন US Treasury Bond মার্কেটে। এই মার্কেটের উপলব্ধ হওয়া ঋণপত্রগুলি খুব লিকুইড বলে গণ্য। এছাড়াও সুরক্ষার অভাব নেই বলে ইনভেস্টররা মনে করেন।
NFO-টির মূল বৈশিষ্ট্য:
# এটি একটি ওপেন-এন্ড ফান্ড অফ ফান্ডস
# এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড-এ (ETF) বিনিয়োগ করা হয়। এই ETF মার্টিন ট্রেজারি বন্ড মার্কেটে অংশগ্রহণ করে।
এক্ষেত্রে বন্ডের মেয়াদ ১-৩ বছরের। অবশ্য এই ফান্ড হাউস আরও অন্য একটি বিকল্প এনেছে, সেখানে বন্ডের মেয়াদ ৩-১০ বছরের। কেন লগ্নি করবেন ভারতীয় ইনভেস্টর এই ধরনের প্রকল্পে? কর্তৃপক্ষ তিনটি কারণ দেখাচ্ছেন। সংক্ষেপে –
(ক) সুরক্ষা এবং নিশ্চয়তা
(খ) আকর্ষণীয় রিটার্ন
(গ) ডাইভারসিফিকেশন, বিশেষত যাঁরা কেবল ভারতীয় বাজারে লগ্নি করেন, তাঁদের জন্য
তুলনামূলক চর্চা করলে বোঝা যাবে আমেরিকান মার্কেটে ট্রেজারি বন্ড (সে দেশের সরকার যা ইস্যু করেন) খুবই সুরক্ষিত। অন্যান্য অপশনের কথাও যাঁরা জানেন, তাঁদের বক্তব্য যে, এই বৃহৎ ঋণপত্রের বাজারের কোনও বিকল্প হয় না। ভারতীয় নাগরিকদের জন্য তাই আদিত্য বিড়লা সান লাইফের NFO যথাযত হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে।
যাঁরা দীর্ঘমেয়াদের কথা ভেবে লগ্নি করেন, তাঁরা জানেন যে রিস্কের মাত্রা ‘ভেরি হাই’ শ্রেণীর। তবে ওপেন-এন্ড ফান্ডের চরিত্র অনুযায়ী এখানে লিকুইডিটির অভাব হবে না, এ কথাও তাঁদের অজানা নেই। আরও কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার।
# ভারতীয় মুদ্রা সার্বিকভাবে ‘depreciated’ হচ্ছে আমেরিকান ডলারের তুলনায়। তাই ডলারের এক্সপোজার রাখা একার্থে ভাল ‘hedge against depreciating Rupee’।
# আমেরিকান ঋণপত্রের বাজারে যদি লগ্নি করতে
হয় তাহলে দেশে বসে FOF বা ফান্ড অফ ফান্ডস ব্যবহারের তুলনা মেলা ভার হবে। কোনও TCS (বা Tax Collected At Source) নেই, এবং ক্যাপিং ভ্যালুও প্রযোজ্য হবে না।
# স্বল্প টাকা দিয়েই শুরু করা যেতে পারে। ফান্ড কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন কেবল মাত্র একশো টাকা ধার্য করা হয়েছে ন্যূনতম লগ্নির পরিমাণ হিসাবে।
# যদি ইন্টারেস্ট রেট কমানো হয় (এক শ্রেণীর পেশাদারের মতে ২০২৪ সালে হয়তো তাই দেখা যাবে) তাহলে ইল্ডের নিরিখে সুবিধা হবে, ক্যাপিটাল গেনস হাতে পাওয়ার সম্ভবনা থাকবে।
# কোনও এন্ট্রি লোড নেই, আর এক্সিট লোডও স্বল্প। নব্বই দিনের পর কোনও লোড দিতে হবে না।
Chart : FoF-এ কীভাবে লগ্নি হবে?
প্রথম পদক্ষেপ : ভারতীয় ইনভেস্টর ইন্ডিয়ান কারেন্সি ব্যবহার করে FoF-এ বিনিয়োগ করবেন। হয় সরাসরি অথবা ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে তা করা যেতে পারে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ : Aditya Birla Sun Life US Treasury ETFs FOF এবার (কারেন্সি কনভারশনের পর) বেছে নেবে কোন কোন এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে লগ্নি করা হবে।
তৃতীয় পদক্ষেপ : বিদেশি ইটিএফগুলি লগ্নি করবে US Treasury মার্কেটে। পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা হবে, এবং যথাযথভাবে পোর্টফোলিওর তথ্য জানিয়ে দেওয়াও হবে।
সঞ্চয়-এর বক্তব্য : বিকল্প হিসাবে দেখতে পারেন দেশে অবস্থিত যাঁরা। তবে মার্কিন বাজারের ঝুঁকি নিয়েও জেনে রাখা উচিত হবে তাঁদের। FoF হলে যে শর্তগুলি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে (বিশেষ করে রিডেম্পশনের বিষয়ে) তাও বুঝে নেওয়া দরকার। তাছাড়া এক্সপেন্স রেশিও কেমন হতে পারে এই ধরনের প্রকল্পে, তা নিয়ে আলাদাভাবে পড়ে নিতে পারেন তাঁরা। প্রয়োজনে পেশাদার পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলে নেবেন, অথবা আদিত্য বিড়লা সানলাইফের ওয়েবসাইটে ফান্ডের প্রেজেন্টেশন দেখেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কেন এমন ফান্ড আপনার লাগতে পারে, তাতে কি সত্যিই আপনার সুবিধা হবে, এই ‘মামুলি’ প্রশ্নের উত্তর প্রথমেই পাওয়া দরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.