Advertisement
Advertisement

Breaking News

Personal Finance

বাজেটে কী পেলাম, কী পেলাম না? কোন বিষয় কাজে আসবে লগ্নিকারীদের?

ফিনান্সিয়াল সেক্টরে নানা রিফর্ম আনার ইঙ্গিতও আছে।

Here the important point about budget 2024 for investment

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:July 29, 2024 5:53 pm
  • Updated:July 29, 2024 5:53 pm  

সদ‌্য পেশ হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেট। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন একগুচ্ছ প্রস্তাব। কিন্তু এক নজরে পর্যবেক্ষণ করলে এই বাজেটের কোন কোন বিষয় সাধারণ লগ্নিকারীর কাজে আসতে পারে? কোনগুলো থেকে উপকৃত হতে পারেন তাঁরা এবং কীভাবে? পাশাপাশি কেমন হতে পারে বাজেট-পরবর্তী অধ‌্যায়ের ছবিটাও? তথ‌্যবহুল লেখায় সুস্পষ্ট ধারণা দিলেন লগ্নি পরামর্শদাতা দিলীপ কুমার দে 

সুন, আলোচনা শুরুর আগে সদ‌্য পেশ হওয়া বাজেটের সব থেকে প্রাসঙ্গিক কয়েকটি পয়েন্ট ঝালিয়ে নিই।
১. শর্ট টার্ম ক‌্যাপিটাল গেনসের উপর ট‌্যাক্স হবে ২০%, ১৫% থেকে বেড়ে।
২. লং টার্ম ক‌্যাপিটাল গেনসের উপর ট‌্যাক্স বসবে ১২.৫%, ১০% থেকে বেড়ে।
৩. দীর্ঘমেয়াদী লাভের ক্ষেত্রে এক্সেম্পশন ১,০০,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১,২৫,০০০ টাকা হবে।
৪. সিকুইরিটিজ ট্র‌্যানজ‌্যাকশন ট‌্যাক্স (এসটিটি) বাড়ানো হবে এফ অ‌্যান্ড ও, অর্থাৎ ফিউচারস অ‌্যান্ড অপশনসের জন‌্য।
আজ এই সব কিছুই জানা কথা, বিশেষত গত কয়েক দিনে মার্কেটে যা ঘটে চলেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে। যে ভাবেই আপনি দেখেন না কেন, একটি বিষয় আশা করি আপনার নজর এড়ায়নি যে–সরকার চাইছে যাতে লগ্নিকারীরা দীর্ঘদিনের জন‌্য বাজারে থাকেন, একান্তভাবে স্বল্প সময়ের জন‌্য পা রেখেই না বেরিয়ে যান অথবা কেবলমাত্র ট্রেডিং করার মানসিকতাই যেন না থাকে তাঁদের। এর সঙ্গে যে প্রসঙ্গটি চলে আসে, তা-ও খুব জরুরী। মার্কেটে নিজের রিস্ক নেওয়ার ক্ষমতার বাইরে গিয়ে সর্বদা লাভই হবে, এমন আশা না করাই ভালো। বরং, সময় নিয়ে, অনুশাসন মেনে, লগ্নির সামান‌্য কয়েকটি নিয়ম মেনে এই পথে হাঁটা উচিত। এ ব‌্যাপারে কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়। অবশ‌্য, আমি বিশেষভাবে ছোট, সাধারণ মানুষের কথাই বলছি। চলতি ভাষায় আমরা যাঁদের ‘রিটেল ইনভেস্টর’ বলে থাকি, তাঁদের কথা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মিলছে সংস্কারের সুফল, বাছুন কোটাক মিউচুয়াল ফান্ডের এনএফও

এই আলোচনা অবশ‌্য বাজেট নিয়ে, তাই এবার অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের কয়েকটি বিশেষ দিকের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। প্রথমেই বলি, পরিকাঠামো, নির্মাণ শিল্প, গ্রামীণ বিকাশ ইত‌্যাদির দিকে নজর দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে ফিসক‌্যাল ডেফিসিট কমানোর ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়াও, এক গুচ্ছ রিফর্ম আসবে নানাবিধ সেক্টরে, তাও বুঝতে পারছি আমরা। সামগ্রিকভাবে তাই এই বাজেট দেশের জন‌্য ইতিবাচক, এই কথা অবশ‌্যই জোরালোভাবে বলা যেতে পারে। এরই মধ্যে একাধিক খুঁটিনাটি আছে, তা আলাদা করে উল্লেখ করতে চাই। যেমন ধরুন এমএসএমই অর্থাৎ মাইক্রো-স্মল-মিডিয়াম মাপের সংস্থার প্রসারের ব‌্যাপারে অর্থমন্ত্রী নানা ইতিবাচক কথা বলেছেন। অথবা ধরুন, এনার্জি এফিসিয়েন্সির উল্লেখ করেছেন খুব জোর গলায়।

আবার ফিনান্সিয়াল সেক্টরে নানা রিফর্ম আনার ইঙ্গিতও আছে। এবার মন দেওয়া যাক বাজেট পরবর্তী অধ‌্যায়ের দিকে। কী হতে পারে, সে বিষয়ে জল্পনা করে লাভ নেই। তবে পেশাদার পরামর্শদাতা হিসাবে আমি অবশ‌্যই যে কথাগুলো বলতে চাই, সেগুলো একে একে সাজিয়ে দিচ্ছি।
১. বাস্তবে-তত্ত্বে অনেক ফারাক থাকে, জানেনই তো! তাই কেবল ট‌্যাক্সের অভিঘাত নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে মূল ভাবনা সরিয়ে আনুন আসল লগ্নির দিকে।
২. নিজেকে কয়েকটি প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করতে ভুলবেন না। আপনি কি যথেষ্ট রকম ডাইভারসিফাই করেছেন? না কেবল দু-তিনটি শেয়ার বা ফান্ডেই আটকে রেখেছেন ব‌্যাপারটা? মনে রাখুন, রিস্ক কমানোর জন‌্য বহুমুখী চিন্তা করতে হবে আমাদের প্রত্যেককে।
৩. আধুনিক টেকনোলজির পূর্ণ ব‌্যবহার করুন। রেগুলেটর সেবি এই বিষয়ে যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়েছে সব লগ্নিকারীকেই। আর নানা ধরনের প্রযুক্তিগত সুযোগও এসেছে সাধারণ মানুষের হাতের কাছেই। সে সমস্ত সহজেই পাওয়া যাচ্ছে আজকাল। সেগুলোর সাহায্যে অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারবেন আপনি। কিছু না হোক জরুরি অনেক প্রক্রিয়া চালু করতে পারবেন। উন্নতমানের তথ‌্যভান্ডার আপনার জন‌্য খুলে যাবে।

৪. এ যুগে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অ‌্যাডভাইজারের বিকল্প নেই। তাই আপনার নিজের বিনিয়োগের জন‌্য এমন কাউকে খুঁজে নিতেই হবে বলে আমি মনে করি। তিনি যেন সর্বশেষ, সাম্প্রতিকতম নিয়ম-কানুনের বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকেন। সব দরকারি তথ‌্যও যেন তাঁর জানা থাকে। যেভাবে বিনিয়োগের বাজারে ভুল পরামর্শ অথবা ফ্রড, দুই-ই হয়ে চলেছে, তা দেখলে সাধারণ মানুষ ভীত হবেনই। সে সমস্ত অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগে সতর্ক হয়ে পা ফেলতে হবে। না হলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা। বিশদে আর কিছু বলছি না, খবরের হেডলাইনে চোখ রাখলেই বুঝতে পারবেন কোন প্রসঙ্গে এই সতর্কতা জারি রাখার কথা হচ্ছে।
৫. নতুন একটি বাজেট আসবে ছয় মাস বাদেই, খেয়াল আছে তো? সরকার নীতি ঠিক করবে, কর্পোরেট সেক্টর নিজস্ব গতিতে ব‌্যবসাবাণিজ‌্য করবে। লগ্নিকারীরা নিজেরা যদি উদ্যোগী হন, তাহলে তো ভালোই হয়! বিভিন্ন ধরনের বিকল্প এসে গিয়েছে বাজারে, পুরোনো ধরনের প্রোডাক্টের সঙ্গে এগুলোও ক্রমে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। মার্কেট-লিঙ্কড ডেবেঞ্চার অথবা পিয়ার টু পিয়ার (P2) লোন–এর কোনওটিই আর তেমন অজানা, অচেনা নয়। যেভাবে নতুন অনেক কিছু হচ্ছে, সেভাবেই অনেক তরুণ-তরুণীরা বাজারে আসছেন। আগামিদিনে তাঁদের প্রত্যেকে যেন পরিবর্তনের সাক্ষী হতে প্রস্তুত থাকেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement