অবসর-জীবনে পা দেওয়ার আগে সময় থাকতে থাকতেই প্ল্যানিং করার গুরুত্ব ইতিমধ্যেই বহু আলোচিত। কিন্তু ভেবে বসে থাকলেই তো আর চলবে না! কোন ফান্ড আপনার জন্য উপযোগী, কোথায় বিনিয়োগ করলে কর্মজীবনের ওপারেও থাকতে পারবেন চিন্তাহীন এবং ফুরফুরে, তার সন্ধান পাওয়াটাও একইরকম জরুরি। রিটায়ারমেন্টেও সোনা ফলাতে পারবেন, এমনই কিছু ফান্ড এবং প্ল্যানের হদিশ এবারের লেখায় দিলেন নীলাঞ্জন দে
এবারের ফোকাস রিটায়ারমেন্ট ফান্ড। উদাহরণ হিসাবে তিনটি আলাদা ফান্ড হাউসের স্কিম বেছে নিয়েছি আমরা। কোনও পক্ষপাত ছাড়া এগুলি UTI, Aditya Birla এবং Tata মিউচুয়াল ফান্ডের অন্তর্গত। এগুলির উদ্দেশ্য অভিন্ন–সাধারণ লগ্নিকারীর সুবিধার্থে অবসরের জন্য সুরাহা এনে দেওয়া। তবে প্রতিটির পদ্ধতি স্বতন্ত্র, সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার নিজস্ব কার্যকলাপের মাধ্যমে ‘ইনভেস্টমেন্ট অবজেকটিভ’ তথা বিনিয়োগের টার্গেট আয়ত্তের আনার চেষ্টা করেন।
বিশদে জানানোর আগে বলে রাখা ভাল যে, ইকুইটির মাত্রা প্রথম দিকে বেশি রেখে পরে ধীরে ধীরে কমিয়ে ডেটের ভার বেশি করা–এই কৌশল আমরা অনেকেই মেনে চলি। তবে অাজকের দিনে এই স্ট্র্যাটেজিই শেষ কথা নয়। ইদানিং মনে করা হচ্ছে যে রিটায়ারমেন্ট প্ল্যানিং যথাযথভাবে করতে চাইলে ইকুইটির কথা ভুললে তো চলবেই না, বরং অনেকদিন পর্যন্ত স্টকে বিনিয়োগ করতেই হবে। তবেই ইনফ্লেশনকে হারাতে পারবেন রিটায়ারমেন্ট-মুখী বিনিয়োগকারী।
উদাহরণ : Tata Retirement Savings Fund
ওপেন-এন্ড ‘রিটায়ারমেন্ট সলিউশন’ হিসাবে গণ্য।
পাঁচ বছরের লক-ইন আছে (বা অবসরের বয়স পর্যন্ত, যেটা আগে আসে)
তিন ধরনের প্ল্যান পাওয়া যাবে – Progressive, Moderate এবং Conservative, প্রতিটির ক্ষেত্রে অ্যালোকেশনের ধরন-ধারণ আলাদা।
Progressive: ৮৫-১০০ শতাংশ ইকুইটি হতে পারে।
Moderate: ৬৫-৮৫ শতাংশ ইকুইটি হতে পারে।
Conservative: ৭০-১০০ শতাংশ ডেট হতে পারে।
ন্যূনতম লগ্নি: ৫০০০ টাকা।
স্থানাভাবে কেবলমাত্র টাটা মিউচুয়ালের উদাহরণই বিশদে দেওয়া হল। অাদিত্য বিড়লা এবং ইউটিআইয়ের বিষয়ে সহজেই পড়ে নিতে পারবেন উৎসাহী পাঠক। তিন ফান্ডের উদ্দেশ্যই মোটামুটি এক, অবসরমুখী মানুষ যাতে বিনিয়োগের সুফল উপভোগ করতে পারেন।
30-30 Challenge – Tata Mutual Fund
টাটা মিউচুয়াল কর্তৃপক্ষ তাঁদের Fund Overview-তে একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা জানাচ্ছেন। মনে করা যাক, কোনও সাধারণ মানুষ নিজের কেরিয়ার শুরু করছেন, তাঁর বয়স এখন ২৫ বছর। তিনি নিশ্চিতভাবে অন্তত ৫৫ বছর পর্যন্ত কাজ করবেন। মনে রাখতে হবে, আজকাল অনেকেই নানা কারণে আগেই অবসর নিচ্ছেন। পুরো মেয়াদ পর্যন্ত কাজ করছেন না এমন অনেকেই আমাদের আশপাশে আছেন। এক্ষেত্রে এই ব্যক্তির ৩০ বছরের কার্যকলাপ (কর্মক্ষেত্রে, অর্থাৎ যখন স্থায়ী রোজগার রয়েছে)। এখন প্রশ্ন, তিনি যদি ৫৫-র পর আরও ৩০ বছর বাঁচেন, তখন তো কোনও স্থায়ী রোজগার থাকবে না, কারণ কাজ নেই। সেই ৩০ বছর কী হবে? কীভাবে চালাবেন তিনি? সংক্ষেপে, এই পরিস্থিতিকেই ‘30-30’ চ্যালেঞ্জ বলে নাম দিয়েছেন টাটা মিউচুয়াল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি গভীর, এবং আমাদের প্রত্যেককে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।
পেনশন প্ল্যান
যে রিটায়ারমেন্ট ফান্ডের কথা এতক্ষণ হল তা মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির অন্তর্গত। এবার সংক্ষেপে ইনসিওরেন্স সেক্টরে অবস্থিত পেনশন প্ল্যানের কথা বলে রাখি। অ্যানুইটি যাঁরা খোঁজেন, তাদের জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারে এগুলি।
ইমিডিয়েট বা ডেফার্ড যাই নিন, উদ্দেশ্য হল অবসরের পর নিজের লাইফস্টাইল একই রাখা, সঙ্গে বিমার সুবিধাও পাওয়া। কিছু গ্যারান্টিড ইনকাম যদি ধারাবাহিকভাবে পাওয়া যায়, তাহলে রিটায়ার্ড মানুষের পক্ষে ভালই হবে। অ্যানুইটি প্ল্যানের নানা ধরনের শ্রেণি আছে, ঠিক কোনটা আপনার পক্ষে সুবিধাজনক তা বিমা কোম্পানির কাছে জেনে নিতে হবে। বিশেষত, প্রিমিয়াম পেমেন্টের সব শর্ত জানতেই হবে। দ্রুত জমাতে শুরু করুন, যথাসম্ভব বড় একটি কর্পাস তৈরি করুন। তাহলে অবসরের পর নিয়মিতভাবে পেমেন্ট পেতে থাকবেন আপনি। বিশেষভাবে বোনাস ও অন্যান্য সুবিধা যদি থাকে, সেগুলির বিষয়ে জেনে নিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.