Advertisement
Advertisement

Breaking News

Personal Finance

চড়চড়িয়ে বাড়ছে দাম, সোনায় কি লগ্নি করা উচিত? বিস্তারিত জানালেন বিশেষজ্ঞ

বিশ্বব্যাপী ঋণের মাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে।

Here is about gold for investment

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:April 7, 2025 1:43 pm
  • Updated:April 7, 2025 1:43 pm  

সোনার কদর নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলা অপ্রয়োজনীয়। মনে রাখবেন, একটি সাধারণ বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতেও সোনা একাধিক সুযোগসুবিধা দিতে পারে। এই নিয়ে বিস্তারিত জানালেন সার্টিফায়েড ফিনান্সিয়াল অ‌্যাডভাইজর রমাকান্ত মহাওয়ার

সোনা আবার খবরের শিরোনাম। গত কয়েক সপ্তাহে সোনার দাম কীভাবে বেড়েছে দেখুন। এই পরিস্থিতিতে ইনভেস্টারদের মনে নতুন ভাবে সোনা সম্বন্ধে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এত দাম বেড়েছে, তাও কি সোনায় লগ্নি করা উচিত? যদি উচিত হয়, ঠিক কতখানি করলে মানানসই হয়? এবারের লেখায় “প্রেশাস মেটাল” এবং সেই জাতীয় অ্যসেটে বিনিয়োগ করার বিষয়টি মাথায় রেখে বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি।

Advertisement

সর্বপ্রথমে মনে রাখুন একটি সাধারণ বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতে সোনা একাধিক সুবিধা দিতে পারে:
১. মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে যুদ্ধ করার অস্ত্র হতে পারে সোনা। “হেজ এগেনস্ট ইনফ্লেশন” নিয়ে আমরা সবাই কম-বেশি চিন্তিত। যখন মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, তখন নগদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পায়। কিন্তু সোনার মূল্য ধরে রাখার প্রবণতা থাকে, এমনকি তার বৃদ্ধিও হতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে, উচ্চ-মুদ্রাস্ফীতির সময়কালে, সোনা অনেক অ্যাসেটকে ছাড়িয়ে গেছে। মুদ্রার অবমূল্যায়নের বিরুদ্ধে এটি একটি হাতিয়ার।
২. কারেন্সি (পড়ুন: কাগজের টাকা) আদতে সরকারি নীতি অনুযায়ী চলে।‌ তার অবমূল্যায়ন করা যেতে পারে প্রয়োজন পড়লে। কিন্তু সোনার অভ্যন্তরীণ মূল্য বজায় থাকে। এই কারণেই বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি–যেমন আমাদের দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া–আর্থিক অস্থিরতার বিরুদ্ধে সুরক্ষা হিসাবে সোনার রিজার্ভ রাখে।
৩. বৈচিত্র্যকরণ, অর্থাৎ ডাইভারসিফিকেশন, এবং ঝুঁকি কমানোর পক্ষে সোনার ভূমিকা কম নয়। সোনার সঙ্গে ইক্যুইটি এবং বন্ডের তুলনা করে দেখুন। এই তিনটি যোগ দিন। আপনার পোর্টফোলিও শক্তিশালী হবে। এটি তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামগ্রিক পোর্টফোলিওর অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা কমাতে সাহায্য করে।
৪. সংকটে সুরক্ষা দিতে পারে সোনা। অর্থনৈতিক সংকট, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার ব্যর্থতা প্রায়শই বিনিয়োগকারীদের “নিরাপদ-স্বর্গ” (safe haven) সম্পদ হিসাবে সোনার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করে। যখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর আমাদের আস্থা কমে যায়, তখন সোনার দাম সাধারণত বেড়ে যায়। তবে সব সময় যে এমনই হবে তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়।

এবার একটি জরুরি প্রশ্ন–দাম তো বাড়ছে, কেন বিনিয়োগকারীদের এখন সোনা কেনার কথা ভাবা উচিত?

দেখুন, বিশ্বব্যাপী ঋণের মাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে সম্পদ ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে, তাও দেখতে পাচ্ছি আমরা। তাই সোনা ক্রমশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি, বিশেষ করে ইমাজিং মার্কেটগুলিতে, মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরতা কমাতে তাদের সোনার মজুদ বৃদ্ধি করছে। উপরন্তু ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার সাথে সাথে, সোনা বেশ স্থিতিশীল হিসাবে গণ্য হয়। তাছাড়া বিনিয়োগের বাজার প্রসারিত হচ্ছে। গোল্ড ইটিএফ (ETF – Exchange Traded Fund) এবং সভরেন গোল্ড বন্ড আজ সহজলভ্য। আমি আগ্রহী লগ্নিকারীদের ডিজিটাল সোনা কেনার ব্যাপারে উৎসাহ দিই। ডিজিটাল সোনার বিনিয়োগ সম্বন্ধে জেনে নিন, সুবিধা হবে। এখানে লিকুইডিটি যথেষ্ট থাকে, সব ধরনের ইনভেস্টারদের পক্ষে তা সহায়ক হয়।

তাহলে সবশেষে কী বলা যায়? সামান্যভাবে বলতে গেলে, স্বল্প হলেও নিজের পোর্টফোলিওর একটি অংশ সোনায় রাখুন। হয়তো আপনার জন্য পাঁচ থেকে পনেরো শতাংশই যথেষ্ট। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই নিজের “রিস্ক টলারেন্স” বুঝে নেবেন, “ইনভেসমেন্ট হরাইজন” কী তাও জানতে হবে। মনে রাখুন, ইকুইটিতে ঝুঁকি আছে, আর ফিক্সড ইনকাম বেশি কিছু দেয় না। সোনা নিশ্চিত ভাবে আপনার মত ইনভেস্টরের সহায়তা করবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement