পেনশন প্ল্যান কোনটা আদর্শ, কোন প্ল্যান করা সার্থক–এ নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে, চলবেও। তবে এক্ষেত্রে মূল উপজীব্য হল, একক বিনিয়োগকারীরা কোন কোন বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দেবেন। উত্তর রইল টিম সঞ্চয়-এর এই লেখায়
গ্যারান্টি-যুক্ত পেনশন প্ল্যান বেশ গালভরা নাম, সাধারণ ইনভেস্টরদের জন্য যথেষ্ট অর্থবহও বটে। পেনশন নিয়ে নানা ধরনের প্রকল্প আছে, দু-একবার ‘সঞ্চয়’-এর পাতায় সেগুলি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। তবে পেনশন প্ল্যান সম্বন্ধে নতুনভাবে উৎসাহিত হচ্ছে বহু মানুষ, মূলত তাঁদের জন্যই এই লেখা।
অবসরের পর কীভাবে রোজগার হবে, পৃথিবীজোড়া এই চর্চার মাঝেই এই ধরনের প্রকল্পের জন্ম। বৈশিষ্ট্যগুলি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে কেন পেনশন প্ল্যান করা সার্থক এবং কেন এটি একটি অতি আবশ্যক ধারণা। অবসরের পরবর্তীকালে গড়পড়তা মানুষ যা চান অর্থাৎ, সুরক্ষিত আয়, নিশ্চিত পে-আউট-এই সবই কমবেশি দেওয়া সম্ভব এই ধরনের প্ল্যান দিয়ে। বলাই বাহুল্য এগুলি কত হবে, এবং কীভাবে পাবেন, তা নির্ভর করবে আপনার ইনভেস্টেমন্ট পিরিয়ড ও অন্যান্য শর্তাবলীর উপর।
নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বেশির ভাগ একক বিনিয়োগকারীই চান রিটায়ার করেই পে-আউট পর্ব শুরু করতে। তার মানে ‘ডেফারমেন্ট’ খুব একটা কাম্য নয়, এবং এই কথা সহজেই অনুমেয় যে আম লগ্নিকারীর ‘ইমিডিয়েট’ গোত্রের পেনশন প্রকল্পেই ঝোঁক বেশি।
তাহলে আদর্শ পেনশন প্ল্যান (Pension Plan) বলতে ঠিক কী বোঝা যায়? এর যে দুই বৈশিষ্ট্য সকলেই চান, তা হল :–
১) আমৃত্যু গ্যারান্টিড পেনশন প্রতিশ্রুত হারে যা পাওয়া যাবে।
২) নিজস্বভাবে পে-আউট পাওয়ার সুবিধা। মানে যদি মান্থলি বা কোয়ার্টালি পেতে চান, তাতেও যেন কোনও অসুবিধা না হয়।
এর পাশাপাশি নিজের দরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকেই ছোট বড় কিছু সুবিধা পেতে চাইবেন। মনে করুন, কেউ যদি ‘রিটার্ন অফ পারচেজ প্রাইস’ চান, তা মোটেও অস্বাভাবিক কিছু হবে না। তেমনই, অনেকেই টপ-আপ বা অনুরূপ সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা তাঁদেরই সময় থাকতে থাকতেই নিতে হবে। সময়ের কথাই যখন উঠল, তখন বলে রাখা ভাল যে, সময় তখনই আপনার বন্ধু হয়ে উঠবে যখন আপনি পেনশনের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন – সেই পদক্ষেপ যথেষ্ট আগে যেন হয়। দেরি করলে যে অসুবিধাগুলি হবে, ‘সঞ্চয়’-এর পাঠক হিসাবে সেগুলি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন।
গ্যারান্টিড পেনশন প্ল্যান যদি খোঁজেন, তাহলে নিচের পয়েন্টগুলির প্রতি বিশেষভাবে নজর দিন–
১. গ্যারান্টিড অ্যাডিশান কীভাবে এবং কত হবে?
২. ভেস্টিং-এর সময় কোনও লাম্পসাম ভেস্টিং অ্যাডিশান অাছে কি না?
৩. প্রিমিয়াম পেমেন্টের টার্ম কত? অন্তত সাত বা দশ বছরের টার্ম না থাকলে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। পলিসি টার্ম কুড়ি বছর হোক, এ-ও একটি প্রচলিত ধারণা।
৪. এরই সঙ্গে দেখা উচিত ডেথ বেনিফিটের শর্তগুলি ঠিক কী, এবং কী
হারে (মোট প্রিমিয়ামের কত?) এর অঙ্কটি কষা হবে।
এই প্রসঙ্গে মনে রাখুন অনেক ক্ষেত্রে গ্যারান্টিড অ্যাডিশান, সাম অ্যাসুয়ার্ড-এর একটি ছোট অংশ হয় (যেমন ৩ শতাংশ প্রতি পলিসি ইয়ারের জন্য)। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী গ্যারান্টিড ম্যাচুরিটি বেনিফিটকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কয়েকটি প্ল্যানে মোট প্রিমিয়ামের ১০০ শতাংশ ম্যাচুরিটির সময় দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ফান্ড ভ্যালু বা গ্যারান্টিড ম্যাচুরিটি বেনিফিট, যেটি বেশি সেটিই পাওয়া যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.