প্রতীকী ছবি
পুরীতে আইসিএএ-এর কনভেনশনে ‘সঞ্চয়’-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন হেড অফ মার্কেট ডেভেলপমেন্ট (ইনভেস্টমেন্ট) অ্যান্ড ইন্সটিটিউশনাল ইনভেস্টর রিলেশনশিপস ইন্ডিয়া, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল, শ্রীমতি শীলা কুলকার্নি। লগ্নিতে সোনার গুরুত্ব নিয়ে জানালেন তাঁর মতামত।
গোল্ড ইটিএফের জনপ্রিয়তা কী চোখে দেখছেন?
দেখুন, আমাদের দেশে তো সোনা সম্বন্ধে স্বাভাবিক আগ্রহ বহুদিন ধরেই। লগ্নিকারীরা এতকাল যা চেয়েছেন, তার বাইরে আরও বড় আকার ধারণ করেছে গোল্ড ইটিএফ। ইদানীং প্রচুর নতুন বিনিয়োগকারী সোনায় লগ্নি করেছেন এই অত্যন্ত সোজা এবং সুবিধাজনক পদ্ধতিতে। গোল্ড ইটিএফের সংখ্যা যে বেড়েছে, অ্যাসেটের পরিমাণ যে বেড়েছে, তা এই ট্রেন্ডেরই প্রতিফলন। কেবল সর্বশেষ পরিসংখ্যান যদি দেখেন, তাহলেই একথা বোঝা যাবে। গত বছর নানা ধরনের ‘জিও-পলিটিকাল’ এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গোল্ডের চাহিদা বেড়েছিল। দামও যে বৃদ্ধির ধারাটি আমরা আগে দেখেছি তা-ও পরিষ্কারভাবে আবার বোঝা গেছে। এর সুযোগ নিয়েছেন ইটিএফের লগ্নিকারীরা।
আইকার সদস্যা বা সামগ্রিকভাবে আর্থিক উপদেষ্টাদের জন্য কী বার্তা দিচ্ছেন আপনি?
আমি চাই কনজিউমারদের কাছে আপনারা ইতিবাচক তথ্য নিয়ে পৌঁছে যান। গোল্ড তো অ্যাসেট ক্লাস হিসাবে নির্ভরযোগ্য–একথা বিনিয়োগকারীদের জানাতে হবে। তাঁরা যেন সোনায় লগ্নির বিষয়ে সদর্থক ভূমিকা নেন। যখন মুদ্রাস্ফীতি চড়া রকম হয়ে ওঠে, তখন সোনাকে ‘হেজ’ (hedge) হিসাবে দেখা উচিত তাঁদের। ইদানীং রিটেল ইনভেস্টরদের জন্য একাধিক প্রকল্প এসেছে যেখানে সোনার অংশ আছে। মাল্টি-অ্যাসেট ফান্ডের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ইক্যুইটি এবং ডেট ছাড়াও কমোডিটি থাকছে এই জাতীয় ফান্ডের পোর্টফোলিওতে। এবং এই কমোডিটির মধ্যে সোনা তার স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেছে। সাধারণ ইনভেস্টররা এমন ফান্ডে লগ্নি করছেন উন্নততর রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনায়। সেখানে সোনার ভূমিকা যে বেশ ভাল রকম থাকবে সেই কথাটি পরিষ্কারভাবে বলতে হবে। তাঁদের জন্য তাই সোনা একটি ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসেট’ এবং ডাইভারসিফাই করার জন্যও সোনা যথেষ্ট জরুরি। অন্য অ্যাসেট ক্লাসের ভোলাটিলিটি এবং অনিশ্চয়তার সময়, সোনা বিশেষ ভূমিকা নিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আগামিদিনে লগ্নিকারীরা সোনার ব্যাপারে কী আশা করতে পারেন?
লগ্নি করার সুযোগ বাড়বে বলে আশাবাদী সবাই। প্রকল্পের সংখ্যা ছাড়াও, বৈচিত্র্যের অভাব হবে না। এখনই ইটিএফের কারণে যে চাহিদা বাড়তে চলেছে তাও বুঝতে পারছি। সেখানে ভারতীয় লগ্নিকারীর কাছে বিকল্পের সন্ধান থাকবে আরও বেশি মাত্রায়। সোনার উপর নির্ভর করে এমন প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতে কেমন পারফর্ম্যান্স এনে দেয়, তা পরীক্ষা করবেন বিনিয়োগকারীরা অথবা তাঁদের পেশাদার পরামর্শদাতারা। ভবিষ্যতে, রিটার্নের হিসাবই নির্ধারণ করবে মোট অ্যাসেটের পরিমাণ। বিশ্বব্যপী যোগান কেমন থাকে, তাও দেখবে হবে। এছাড়া ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রকের নীতি, যা সোনা ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুব জরুরি এক শর্ত, বড় ভূমিকা নেবে। সব মিলিয়ে সোনায় লগ্নির জগৎ যে খুব ‘ডাইনামিক’ থাকবে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। মনে রাখতে হবে অনেক লগ্নিকারীই অতীতে সোনাকে ভেবেছেন ‘সেফ হাভেন’ অ্যাসেটের সমতুল্য। আগামিদিনে সেই চিন্তা-ভাবনার ধারাটি অক্ষত থাকবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.