পরিকল্পনা করে পা বাড়ানোর বিকল্প নেই। আকস্মিক পদক্ষেপ আর ভেবে-চিন্তে কোনও কাজ করার মধ্যে অধিকাংশই দ্বিতীয় পথ বেছে নেবেন। তবে প্ল্যানিং-এর গুরুত্ব রয়েছে বলে আকাশ-পাতাল ভাবলেই সঠিক দিশা মিলবে আর নচেৎ নয়, সেই ধারণা ভুল। কীভাবে এগোতে পারেন, দিকনির্দেশ দিলেন এবারের অতিথি অর্জুন মারফাটিয়া
‘ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং’। এই শব্দবন্ধ শুনলেই সাধারণ মানুষ বেশ ‘ডিফেন্সিভ’ হয়ে পড়েন। অনেক সময় তাঁরা মনে করেন, বিরাট-বিপুল কিছু হয়তো করতে হবে, না হলে প্ল্যানিং কার্যত অসম্ভব। না, আজ আমি তাঁদের আশ্বস্ত করতে চাই। সামান্য কিছু চিন্তা-ভাবনা করলেই অনেকটা এগিয়ে যাওয়া যায়, অন্তত “গোল সেটিং”-এর মতো সোজা-সাপ্টা বিষয়গুলি ঠিকভাবে করা যায়। কীভাবে প্রাথমিক পদক্ষেপ করবেন? আজ সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে কলম ধরছি।
আগেই বলে রাখি, ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যান একটি পূর্ণ পর্যবেক্ষণ – সমস্ত ধরনের অ্যাসেট লায়াবিলিটি, প্রয়োজনের খতিয়ান। আপনার জন্য যা “reality”, তা কেবল আপনারই, অন্যেরর নয়। এই “reality”-র ভিত্তিতে নিজের লক্ষ্যবস্তু স্থির করার দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।
লক্ষ্যবস্তু তো অনেক ধরনেরই হতে পারে। তবে সাধারণভাবে ধরলে বাচ্চাদের পড়াশোনা বা নিজের অবসরের কথা ভেবে প্ল্যান, এগুলিই মানুষের প্রধান লক্ষ্য হয়ে থাকে। কোনও অার্থিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই সমস্ত লক্ষ্যবস্তু অাপনার করায়ত্ব হবে, তা ঠিক করাই মূল উদ্দেশ্য।
আজ চারটি বিশেষ নিয়মের উল্লেখ করছি।
(ক) আজ আপনার আর্থিক পরিস্থিতি কেমন? অর্থাৎ, এই মুহূর্তে আপনার রোজগার এবং খরচের পরিমাণ কী রকম? কত টাকার ডেট (বাজারে ধারের পরিমাণ) আছে? সে বাবদ আপনার লায়াবিলিটি কতখানি?
(খ) পরিস্থিতি বুঝে “গোলস” সেট করুন। নিজের সংসারের খরচ তো টানতেই হবে, এছাড়াও অন্যান্য খরচাপাতি থাকতে পারে। সে সবের কথা খেয়াল রেখে রিটায়ারমেন্ট, বিয়ে বা পড়ার খরচ (বাচ্চাদের কথা ভুললে হবে না) কেমন হবে, তা বোঝার চেষ্টা করুন।
(গ) নিজের risk appetite বুঝুন। মানে, ঠিক কতখানি ঝুঁকি নিতে সক্ষম., তা বোঝার চেষ্টা করুন। এর উপর নির্ভর করবে আপনার investment planning। সেই risk-এর কথা স্মরণে রেখে ঠিক প্রোডাক্টে বিনিয়োগ করা শুরু করুন।
(ঘ) নিজের প্ল্যান পরীক্ষা করুন নিয়মিত। লগ্নি শুরু করে ভুলতে বসবেন না-প্রয়োজন বুঝে বদল করুন, প্ল্যানটিকে সজীব রাখুন।
এই নীতিগুলি মেনে চললে ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং শক্ত বা অসম্ভব মনে হবে না। মনে রাখুন, যথাযথ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট-এর পরের অধ্যায়। ঠিক কীভাবে ইকুইটি, ডেট এবং অন্য বিনিয়োগের পন্থাগুলি বেছে নেবেন, সেই পাঠও নিতে হবে আপনাকে।
আজ এই পর্যন্তই। আশা করি এই লেখা পড়ে নিজের পূর্ণাঙ্গ প্ল্যানের দিকে আর একটু এগিয়ে যেতে পারবেন। শারদীয়ার শুভেচ্ছা নেবেন।
(লেখক বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.