প্রতীকী ছবি।
P2P-র নাম শুনেছেন? বিশদে বললে, এটি হল পিয়ার টু পিয়ার লেন্ডিং। লোন মার্কেটে চোখ রাখলেই এখন এই শব্দবন্ধের বহুল উল্লেখ দেখা যাবে। P2P-র দৌলতে লোন পাওয়া শুধু সহজই নয়, সুবিধাজনকও বটে। বিশেষ করে অনলাইনে। আবার রিটার্নের অঙ্কটাও বেশ ভাল বলেই খবর। কীভাবে কাজে লাগাবেন এই লেন্ডিং প্রক্রিয়াকে? তথ্য সংকলনে টিম সঞ্চয়।
Peer to Peer, সংক্ষেপে P2P। লোন মার্কেটে ইদানিং P2P খবরের শিরোনামে। বেশ কিছু সংখ্যক ব্রোকার, লোনের গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি, ফিনটেকের অব্যর্থ প্রয়োগ–সব মিলিয়ে P2P সম্বন্ধে সজাগ হয়েছেন ইনভেস্টররা। রিটার্নও বেশ ভালই পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অনলাইনে সহজেই ধার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে P2P-র দৌলতে। তাই আগামিদিনে এই ব্যবসার সম্প্রসারণ হওয়াই স্বাভাবিক। বরোয়ার এবং লেন্ডার-দুই প্রান্তিক মানুষকে মিলিয়ে দিচ্ছে প্রযুক্তি। বুঝে নিচ্ছে বরোয়ারের টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা। যাঁরা ব্যাঙ্কে ক্যাশ বেশি রাখেন, তাঁদের জন্য সীমিত সময়ের জন্য টাকা ধার দেওয়া সম্ভব এবং যাঁদের টাকার প্রয়োজন, তাঁরা সঠিক পদ্ধতি মেনে ধারও সহজে নিতে পারবেন–P2P এমনই আশ্বাস দিচ্ছে। লোন সংস্থাগুলির মতে তারা যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে ভেরিফিকেশন করছে। এছাড়াও এরা জানাচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের সহায়তায় তাঁদের কার্যকলাপ আরও উন্নতমানের হচ্ছে।
উদাহরণ: লেনদেন কাব (LenDen Club)
কেস স্টাডি হিসাবে আমরা লেনদেন ক্লাবের কথা বলছি, এই উদাহরণ একেবারেই কোনও ধরনের রেকমেন্ডশন নয়।
দশ হাজার টাকা লোনের ন্যূনতম পরিমাণ হতে পারে।
লঞ্চ থেকে ধরলে আনুমানিক ১৫% রিটার্ন এসেছে বলে সংস্থা জানাচ্ছে। এটি annualised yield, পাঁচ বছরে।
এক থেকে ছয় বছর, একাধিক মেয়াদের জন্য লগ্নি করতে পারবেন গ্রাহক।
নিজস্ব অ্যাপ নিয়ে বিশদে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা বলে দেওয়া হচ্ছে।
তালিকা : কয়েকটি RBI অনুমতিপ্রাপ্ত P2P লোন সংস্থা
P2P লেন্ডিং–LiquiLoans
সম্পূর্ণ পক্ষপাত ছাড়া আমরা উদাহরণ হিসাবে LiquiLoans এর কথা বলছি। ‘P2P NBFC’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এই সংস্থাটি। NBFC-র পুরো অর্থ non-banking finance company। এখন পর্যন্ত দেড় লক্ষের বেশি ইনভেস্টরদের পরিষেবা দিয়েছে LiquiLoans, কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। কীভাবে এই ধরনের কোম্পানি পরিষেবা দিচ্ছেন? সংক্ষেপে–
সাধারণ বিনিয়োগকারী লগ্নি করতে পারেন, তাঁদের টাকা ধার দেওয়া হবে ‘Creditworthy Borrower’-দের, যাঁদের ক্রেডিট স্কোর ৭০-র বেশি, যাঁরা টাকা নিয়ে ফেরৎ দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন বলে সংস্থা মনে করেন।
কোনও অ্যাকাউন্ট খোলার ফি নেওয়া হয় না, সংস্থার অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরাসরি লগ্নি করা সম্ভব।
বেশ কিছু সংখ্যক বরোয়ারদের মধ্যে টাকা ভাগ করে দেওয়া হয়, যাতে মুষ্টিমেয় কিছু বরোয়ারের উপর নির্ভর না করতে হয়।
রিটার্ন আসে কম্পাউন্ডিংয়ের পদ্ধতি মনে এবং টাকাও (শর্তাধীনভাবে) তুলে নেওয়া যেতে পারে।
লিকুইলোনসের মতে (ক) অন্তত ১৫০-২০০ বরোয়ার যেখানে জড়িয়ে, সেখানে সুরক্ষা বেশি। (খ) প্রতি বরোয়ারের জন্য ‘Portfolio exposure’ কেবল মাত্র ০.৫% পর্যন্ত সীমিত।
‘সঞ্চয়’-এর সংযোজন–
P2P লেন্ডিং কি যথেষ্ট সুরক্ষিত? এই প্রশ্ন আমরা বারে বারে পেয়েছি, কারণ বাজারে বহু ইনভেস্টর এরই মধে্য এই বিনিয়োগ নিয়ে জেনে গেছেন। একটি অংশ সংখ্যায় সীমিত হলেও, এখনই P2P মার্কেটে সক্রিয়ভাবে লগ্নি করছেন। আমাদের নির্দিষ্ট কয়েকটি বক্তব্য আছে :
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক P2P সংস্থাকে লাইসেন্স দিয়েছেন, নানা বিষয় চিন্তাভাবনা করেই তা সম্ভবপর হয়েছে।
সংস্থাগুলি ডাইভারসিফাই করছেন বলে জানানো হয়েছে। প্রতিটি লোনের জন্য বরোয়ারের সংখ্যা নেহাত কম নয় বলে মনে করেন ইনভেস্টররা।
এখন পর্যন্ত বড় মাপের ডিফল্টের কথা সাধারণভাবে গোচরে আসেনি। তবে ব্যবসা শুরু হয়েছে সম্প্রতি–তাই P2P-র কী পরিস্থিতি হবে তা অাজই বলা ঠিক নয়।
এই মুহূর্তের মূল প্রশ্নটি রিটার্ন সংক্রান্ত। আমাদের জিজ্ঞাস্য–P2P-র রিটার্ন কি শর্ট টার্ম ডেটে (বা ডেট ফান্ডে) লগ্নির থেকে বেশি? অনেকের জন্যই উত্তরটি ইতিবাচক। এখানে অবশ্য লিকুইড ফান্ডের রিটার্ন– প্রধান বিবেচ্য বলে ধরে নিচ্ছি আমরা।
সাধারণভাবে, সাহসী ইনভেস্টর যদি লগ্নি করার কথা ভাবেন P2P-তে, তঁাকে দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। তবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে টাকা বিনিয়োগ করাই উচিত।
মনে রাখতে হবে, স্বল্প পুঁজি দিয়ে আরম্ভ করা যেতে পারে। Liquiloans যেমন দশ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করার কথা বলে থাকে। অনলাইন মাধ্যমে লগ্নি তথা উইথড্রয়াল করা সম্ভব। নিজের Investment horizon বুঝে নির্দিষ্ট মেয়াদী প্রকল্পে বিনিয়োগ করায় কোনও বাধা নেই। স্রেফ লিকুইড ফান্ড (বা ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টে) টাকা না ফেলে রেখে P2P-র উদ্যোগ নিলে তা কার্যকরী হবে, অন্তত স্বল্প পরিমাণে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.