Advertisement
Advertisement

Breaking News

Personal Finance

ডিপোজিটে কি উৎসাহ হারাচ্ছেন লগ্নিকারীরা? পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলেন পরামর্শদাতা

এযুগের বিনিয়োগকারী যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে লগ্নি করছেন।

Does investor lose interest in deposits, here are the information about it

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:August 28, 2024 7:56 pm
  • Updated:August 28, 2024 7:56 pm  

ডিপোজিট গ্রোথ যাতে যথাযথভাবে হয়, তার উপর জোর দিয়েছেন রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর, শক্তিকান্ত দাশ। বাজারের চালচিত্রই জানাচ্ছে, ডিপোজিট বেসের উপর চাপ এসেছে। ডিপোজিটরদের একটি বড় অংশ চাইছেন না আমানত। আগ্রহ দেখাচ্ছেন মিউচুয়াল ফান্ড তথা ইক্যুইটিতে লগ্নি করতে। পরিস্থিতি ঠিক কেমন? ব‌্যাখ‌্যা করলেন পেশাদার পরামর্শদাতা সুজন দাস, লিখলেন নীলাঞ্জন দে

র্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ বলেছেন, সরকারি ব‌্যাঙ্কগুলোকে ডিপোজিট মোবিলাইজেশনের বিষয়ে আরও মনোযোগ দিতে হবে। তাহলে ক্রেডিট গ্রোথের বাতাবরণে কোনও অসুবিধা হবে না ব‌্যাঙ্কগুলোর। এর সঙ্গে একই সুরে বলেছেন রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর শ্রী শক্তিকান্ত দাশ। ‘ডিপোজিট গ্রোথ’ নিয়ে কর্তৃপক্ষ সজাগ করেছেন। তার কারণ, ডিপোজিটরদের একটা বড় অংশ আর আমানতে উৎসাহী নন, বোঝা যাচ্ছে। তাঁরা (বিশেষত তরুণ প্রজন্ম) চাইছেন, মিউচুয়াল ফান্ড তথা ইক্যুইটি। সাবেকি আমানতে ভাঁটা পড়ার পরিস্থিতিতে, এবং বাজারমুখী হওয়ার ট্রেন্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ইনভেস্টররা কী প্রত‌্যাশা করতে পারেন? এই প্রসঙ্গ তুলেছি আমরা, বিভিন্ন স্টকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ পেশাদার পরামর্শদাতা, শ্রী সুজন দাসের সঙ্গে আলোচনায় এই ট্রেন্ড ধরার চেষ্টা করলাম। প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে এল কিছু বিশেষ তথ‌্যসূত্র।

Advertisement

ডিপোজিট বেসের উপর চাপ এসেছে বলে খবর। কীভাবে দেখবেন এই ট্রেন্ডটি?
হ্যাঁ, পুরনো ন‌্যারেটিভ যে বদলাচ্ছে তা আমরা ইতিমধ্যেই বুঝতে পারছি। আমানতে লগ্নি করে নির্দিষ্ট হারে সুদ পাওয়া এখন একটি একমাত্রিক, সীমিত ধারণায় পর্যবসিত। অন্তত বাজারের একটি বিরাট অংশ তাই-ই বোঝাচ্ছেন। তার মানে খুব সোজা–মানুষ আর ব‌্যাঙ্কে ডিপোজিট রাখতে ততটা আগ্রহী নয়। তার বদলে তাঁদের উৎসাহ নানা ধরনের আধুনিক ফিনান্সিয়াল প্রোডাক্ট ঘিরে। মিউচুয়াল ফান্ডে যে পরিমাণে রিটেল ইনভেস্টরদের টাকা ঢুকছে, তা খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলে আমি মনে করি। কীভাবে যে সাধারণ ইনভেস্টররা এই মাধ‌্যমটি গ্রহণ করেছেন, তা গভীরভাবে দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। এর মূলে অবশ‌্যই আছে ফিনান্সিয়ালাইজেশনের জোরালো আকর্ষণ। সদর্থক সরকারী নীতির প্রতিফলন তো বটেই। এর সঙ্গে জুড়েছে ইতিবাচক কিছু ধ‌্যান-ধারণা। আম আদমি বুঝতে পারছেন ফান্ডে বা শেয়ারে লগ্নি করলে ভালো রিটার্ন পাওয়া যেতে পারে। তাই প্রতিশ্রুত হারে সুদ পাওয়া আর তেমন “পুল ফ‌্যাক্টর” হিসাবে গণ‌্য করা যাচ্ছে না। পরিসংখ‌্যান দেখুন, ব‌্যাপারটা পরিষ্কার বুঝতে পারবেন।

[আরও পড়ুন: কনজিউমার সেক্টর বিনিয়োগের মুক্তাঞ্চল, লাভবান লগ্নিকারীরা

কিন্তু মার্কেটে তো রিস্ক যথেষ্ট, তাই না? তাহলে কি রিস্ক নিয়ে ধারণাও বদলাচ্ছে?
হ্যাঁ, অবশ‌্যই তাই। ইনভেস্টররা বেশ জানেন যে, ঝুঁকি ছাড়া রিটার্ন পাওয়া যাবে না। তাতে কিন্তু নতুন চিন্তাভাবনা কোনওভাবে হ্রাস পায়নি। ঝুঁকির ধরন বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষ রিস্ক প্রোফাইল নিয়েও নিজের ধারণা বদলাচ্ছেন। এযুগের বিনিয়োগকারী যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে লগ্নি করছেন, ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা যাচাই করেই তা করা হচ্ছে। আর তার সঙ্গে পেশাদার পরামর্শদাতার সাহায‌্যও নিচ্ছেন। আমি তো মনে করি, অ‌্যাডভাইজরদের ভূমিকাও বদলাচ্ছে একই গতিতে। আজকাল সিপ যেভাবে হচ্ছে, যে পরিমাণে সংসারের বাজেটের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি মাসে, তা দেখে খুব আশাবাদী আমরা। ‘পে ইওরসেল্ফ ফার্স্ট’ বলে যে আপ্তবাক‌্য নিয়ে এত চর্চা হয়েছে, তারই সুফল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে আজ। সাধারণভাবে অনেক ডিসিপ্লিন এসেছে এই বিষয়ে। সিপের অঙ্ক বেড়ে গেছে। শুধু পরিমাণেই নয়, কোয়ালিটির আঙ্গিক থেকেও এই কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই।

‘কোয়ালিটি’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন?
দেখুন, আজকাল সিপ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে আরও বেশি করে। পরিবারের একজন-দুজনই শুধু নন, অন‌্যরাও এই মাধ‌্যমে লগ্নির জগতের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। তুলনায় স্বল্পবয়সিরা তো বটেই, অনেক প্রবীণ-প্রবীণাও আজকাল সিপ নিয়ে সজাগ। যাঁরা চাকরি করেন, সদ‌্য যোগ দিয়েছেন কর্মস্থলে, তাঁদেরও দেখি, প্রথম থেকেই লগ্নির ব‌্যাপারে উৎসাহী। টাকা যে শুধু প্রতি মাসে একবারই কিস্তি হিসাবে আসছে, তাও নয় কিন্তু। ডেলি সিপ করেন, এমন বিনিয়োগকারীদের সংখ‌্যাও বাড়ছে। আবার অন‌্যদিকে দেখি, স্টক মার্কেটের পিছনে সময় ব‌্যয় করছেন অনেক নতুন লগ্নিকারী। প্রতিমাসের শেষে যে পরিসংখ‌্যান পাওয়া যায়, তা থেকে অনুমান করতে অসুবিধা নেই যে, এই ট্রেন্ড আগামিদিনে আরও বড় আকার নেবে। স্বাভাবিকভাবেই তা হবে, বিশেষ কোনও ইনসেনটিভ যে দিতে হবে, তাও নয়।

[আরও পড়ুন: রিটার্নের সাতকাহন, লগ্নির আগে জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো]

এত ধরনের যে বিকল্প, এত ফান্ড অথবা এত শ্রেণির ইনসিওরেন্স প্ল‌্যান, এর মধ্যে কীভাবে সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নেবেন লগ্নিকারী?
দেখুন কখনওই কেবল একটি কারণের ভিত্তিতে এই সমস্ত ব‌্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। বিমা যখন কিনবেন, ‘টার্মস অ‌্যান্ড কন্ডিশনস’ জেনে নেবেন। ইনসিওরেন্স প্ল‌্যান এবং মিউচুয়াল ফান্ড, অথবা অন‌্য কোনও ধরনের লগ্নি, সবের পিছনেই যেন যথাযথ কারণ থাকে। নিজের রিস্ক প্রোফাইল খুঁটিয়ে দেখুন, তার সঙ্গে মিলিয়ে প্রোডাক্ট কিনুন। বিনা পরিকল্পনায় যেন কিছু না হয়, তাতে অসুবিধা হবে আপনারই। ঠিকঠাক রিটার্ন পাবেন না, পিছিয়ে পড়বেন, ওয়েলথ জেনেরেশন ব‌্যাহত হবে। মনে রাখুন, পরিকল্পনা যেন সব দিক বিচার করে করা হয়। সম্পদ গঠন করে তার যথাযথ প্রয়োগ, এবং তার পর এস্টেট প্ল‌্যানিং সবই যদি সুষ্ঠুভাবে না করা হয়, তাতে স্বার্থের ক্ষতি হবে ইনভেস্টরের। পেশাদার হিসাবে, নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, এই কথা আমি সোজাসুজি বলতে চাই।

শেষ করার আগে কয়েকটি বিশেষ পয়েন্ট।
১. অল্প বয়সে ঝুঁকি নিন। মধ‌্যমেয়াদে/দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হবেন।
২. হ্যাঁ, ফান্ড/শেয়ার ইত‌্যাদিতে রিস্ক আছে। রিটার্ন পাবেনই, এই কথার গ‌্যারান্টি দেবে না কেউ। তবে রেগুলেটেড মার্কেটে, নিয়ন্ত্রকের বাঁধা নীতি অনুযায়ী লগ্নি করা হয়।
৩. ট‌্যাক্স দেওয়ার পর কী থাকতে পারে হাতে, এই হিসাব করা খুব জরুরি।
৪. ইনফ্লেশনকে হারাতে হবেই, না হলে এত আয়োজন ব‌্যর্থ হবে। সেই বুঝে সক্রিয়ভাবে লগ্নি করুন।
৫. বিনিয়োগের সাধারণ কয়েকটি নিয়ম ভুলবেন না। রেগুলার ইনভেস্টমেন্ট খুব প্রয়োজন। আর লগ্নি করলেন, তার ফল কোথায় গিয়ে দাঁড়াল, তা জানেন না–এমনও যেন না হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement