Advertisement
Advertisement

Breaking News

Personal Finance

মধ্যবিত্তরা কোন রিটায়ারমেন্ট ফান্ড বেছে নেবেন? জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

আজকের দুনিয়ায় লগ্নির জন্য তো অনেক কিছুই সহজলভ্য।

Choose the best retirement fund for your future

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:April 22, 2024 2:23 pm
  • Updated:April 22, 2024 2:23 pm  

বাজারে তো রিটারায়মেন্ট-নির্ভর ফান্ডের কোনও অভাব নেই। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডে যাঁরা লগ্নি করেন, সেই মধ‌্যবিত্তরা কী ধরনের ফান্ড বেছে নেবেন? দীর্ঘকালীন লগ্নি এবং রিটার্নের স্বচ্ছতা যদি আপনার কাম‌্য হয়, ফান্ড ম‌্যানেজারের কোন কোন পরামর্শ অবশ‌্যই মাথায় রেখে চলবেন? সব প্রশ্নের উত্তর সাজিয়ে দিলেন লগ্নি বিশেষজ্ঞ অশোক আগরওয়াল

‘সঞ্চয়’-এর পাতায় এর আগে ‘রিটায়ারমেন্ট’ নিয়ে লেখা হয়েছে। খুবই ভালো উদ্যোগ, কারণ অবসর-জনিত সংকট সত্যিই আছে আজকের ভারতবর্ষে। এই নিয়ে ভাবতে বসে মনে হল, রিটায়ারমেন্ট এবং ফান্ড নিয়ে বিশেষ কিছু কথা বলি। কেন সাধারণ মানুষ আদৌ ফান্ড বেছে নেবেন, সেটাই সর্বপ্রথম জানিয়ে শুরু করতে চাই আমার এই লেখা।
প্রাথমিক কারণগুলো এক সঙ্গে সংক্ষেপে বলে রাখি। তিনটি প্রধান পয়েন্টের উপর জোর দিতে চাই:
১. ফ্লেক্সিবিলিটি
২. ট‌্যাক্স-এফিসিয়েন্সি
৩. ট্রান্সপ‌্যারেন্সি

Advertisement

আজকের দুনিয়ায় লগ্নির জন‌্য তো অনেক কিছুই সহজলভ‌্য। মিউচুয়াল ফান্ড এগুলোর মধ্যে কিন্তু বিকল্পহীন বলা চলে। এত ফ্লেক্সিবল কি আর কিছু আছে? যখন দরকার তখনই ভুলে নিতে পারেন, সহজেই ইউনিট বিক্রি করে (অর্থাৎ রিডেম্পশন করে) টাকা ঘরে ফেরত নেওয়াতে কোনও বাধা নেই। আর মার্কেটে গতি এলে ইউনিটের ভ‌্যালুয়েশন বাড়ে এ তো জানা কথা। নিজের বেছে নেওয়া ফান্ডগুলোতে নিয়মিতভাবে বিনিয়োগ করুন, বড় মাপের রিটায়ারমেন্ট কর্পাস তৈরি হলে আখেরে লাভ আপনারই। মধ‌্যবিত্ত উপার্জনকারীর জন‌্য এই পদ্ধতি আমি আদর্শ বলে মনে করি। এর তুলনায় ইনসিওরেন্স কোম্পানির পেনশন প্ল‌্যান কিন্তু কিঞ্চিৎ ভিন্ন। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দিনে যথাযথ উপায় মেনে প্রিমিয়াম জমা দিতেই হবে। এমন বাধ‌্যবাধকতা মিউচুয়াল ফান্ডে নেই।

[আরও পড়ুন: ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার বাড়াল বাজাজ ফিনান্স, কোন স্কিমের ফায়দা নিতে পারেন আপনি?]

এবার আসুন আয়করের কথায়। ঠিক প্রকৃতি মেনে লগ্নি করলে আপনার রিটার্ন হবে ট‌্যাক্স-এফিসিয়েন্ট অর্থাৎ, ট‌্যাক্সের অভিঘাত হবে কম, একেবারে যদিও তা এড়ানো যাবে না। ইক্যুইটি ফান্ডে যদি বিনিয়োগ করেন তাহলে দীর্ঘমেয়াদী লগ্নির ক্ষেত্রে আপনার লাভ অনেকটাই সুবিধা পাবে, আয়করের নিরিখে। এখানে বলে রাখি, বিশেষভাবে আয়করের নিয়মগুলো জেনে নিতে ভুলবেন না। ইক্যুইটি ফান্ডের নিয়মগুলো কী আর ডেট ফান্ডের জন‌্যই বা কী?–এগুলো নিয়ে প্রাথমিকভাবে পড়ে নিন। এরপর তো পেশাদারদের সাহায‌্য নিতেই পারেন, তাতে আরও সুযোগ-সুবিধা সম্বন্ধে বুঝতে পারবেন ভালভাবে।

ট্র‌্যান্সপ‌্যারেন্সি নিয়ে নতুন করে কি আর বলব! তবে এইটুকু জানিয়ে রাখি যে এত সুষ্ঠভাবে গভার্ননেস অন‌্যত্র পাওয়া মুশকিল। সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন‌্য এই বিষয়টি একান্তভাবে জরুরি, এ তো বোঝাই যাচ্ছে। ইনভেস্টরদের অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয় তবে এর জন‌্য মার্কেট নিয়ন্ত্রক সেবির বহুবিধ নীতি আছে। বিস্তৃত আলোচনায় আর গেলাম না। স্বচ্ছতার প্রসঙ্গটি অন‌্য ভাবেও দেখা যেতে পারে– আমি তথ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে বলছি।

কী কী জানতে চান? অনেক প্রাসঙ্গিক তথ‌্য আপনার ফান্ড ম‌্যানেজার নিয়মিতভাবে দিয়ে থাকেন। সঙ্গের ছোট তালিকা দেখুন:
–ফান্ডের অবজেকটিভ
–পারফরম‌্যান্স, বিশেষ করে বেঞ্চমার্কের তুলনায়
–রিস্ক এবং রিস্কের শ্রেণী
–পোর্টেফোলিওর সর্বশেষ গঠন
–প্রধান রেশিওগুলো, যা দেখলে সহজেই বোধগম‌্য হয় কেন আপনি সেই বিশেষ ফান্ড কিনবেন বা বিক্রি করবেন।

যে কোনও ফান্ডের সাম্প্রতিক ফ‌্যাক্টশিট হাতে নিন। জানেন নিশ্চয়, প্রতি মাসের শেষে আপনি পেয়ে যাবেন, ওয়েবসাইট দেখলেই হবে। অনেক ধরনের তথ‌্য পাবেন সেখানে। বিগত দিনের পারফর্ম‌্যান্স কেমন হয়েছে, তাও বুঝতে পারবেন। সূচকের তুলনায় কি লাভবান হয়েছেন আদৌ? তা জানা খুব সোজা। শুধু নিয়মিতভাবে একটু সময় দেবেন, বা পেশাদার পরামর্শদাতার সাহায‌্য নেবেন এই সংক্রান্ত ব‌্যাপারে।

[আরও পড়ুন: ইটিএফে লগ্নি মানে সুযোগ অফুরান, জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ]

সব মিলিয়ে যদি দেখেন, তাহলে সহজেই বুঝবেন ফান্ডের অবদান ঠিক কতখানি হতে পারে রিটায়ারমেন্ট প্ল‌্যানিংয়ের ক্ষেত্রে। বাস্তবিক, অনেক সাধারণ ইনভেস্টরই ফান্ডের মাধ‌্যমে তহবিল গড়ার পক্ষপাতী। যদি যথেষ্ট সময় দেন, তাহলে ভাল কর্পাস তৈরি হবে। আমি এখানে দশ-পনেরো-বিশ বছরের কথা বিশেষ করে বলছি। দশকের বেশি কাল ধরে একনিষ্ঠভাবে লগ্নি করেছেন, এমন বিনিয়োগকারী আমি দেখেছি। তাঁরা বাজারের পূর্ণ সুবিধা নিতে পেরেছেন। শর্ট টার্ম লগ্নি করে বড় অ‌্যাসেট গঠন হয় না। চাই লং টার্ম লগ্নি, যাতে রিটায়ার করে কর্পাস থেকে সংসার চালাতে পারেন, এবং তার পরেও হাতে কিছু উদ্বৃত্ত থাকে।

যাঁরা দীর্ঘকাল ধরে লগ্নির পক্ষে, তাঁদের জন‌্য পরিশেষে কয়েকটি প্রয়োজনীয় বিষয় –

১. সহজেই পরিচালনা করতে পারবেন, এমন পোর্টফোলিও করুন। বড় বেশি সংখ‌্যক ফান্ড থাকলে ম‌্যানেজ করা মুশকিল হতে পারে।
২.অ‌্যাসেট অ‌্যালোকেশনের সাধারণ নিয়ম মেনে ডাইভারসিফাই করুন। দরকার মতো বিভিন্ন অ‌্যাসেটে নিজের রিস্ক ছড়িয়ে দিন।
৩. নিয়মিত পর্যালোচনা চাই। খুব ঘনঘন নয়, আপনি তো আর স্টক কেনাবেচা করছেন না! তবে ধারাবাহিক লগ্নি কীভাবে কাজে লাগছে তার একটা সম‌্যক ধারণা থাকা দরকার।
৪. নতুন কিছুর জন‌্য দরজা বন্ধ করে রাখবেন না। এনএফও এলে ঠিক করুন আপনার সুবিধা হবে কি না। অথবা অন‌্য কোনও নতুন বিকল্পের সন্ধান পেলে তা ভাল করে পরীক্ষা করুন।
৫. এক্সপেন্সেস এবং ট‌্যাক্সেশন, এই দুইয়ের দিকে নজর রাখুন। মুদ্রাস্ফীতি তো থাকবেই, তাকেও অগ্রাহ‌্য করা চলবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement