ইউনাইটেড পেমেন্ট ইন্টারফেস তথা ইউপিআই ব্যবহারে অনেকেই এখনও পুরোপুরি সড়গড় হননি। ভুলভাল প্রয়োগে ঠকেছেন, ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন-তাঁদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে গ্রাহকদের জন্য এক গুচ্ছ সতর্কতামূলক নির্দেশিকা আনল আইসিআইসিআই ব্যাংক। বর্ণনায় টিম সঞ্চয়
UPI অর্থাৎ ইউনাইটেড পেমেন্ট ইন্টারফেস নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করল আইসিআইসিআই ব্যাংক। সম্প্রতি এর অপব্যবহারে বেশ কিছু গ্রাহক ঠকেছেন, বাইরে থেকে আসা অসাধু ব্যক্তিদের পাঠানো QR Code (কুইক রেসপন্স কোড) এঁদের বিব্রত করেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরা। তাই এই বিষয়ে গ্রাহকদের সতর্ক করতে কয়েক দফা নিয়ম মানার কথা জানিয়েছে ব্যাংক। নিচে তা সংক্ষেপে তালিকাভুক্ত করা হল–
(১) অসাধু ব্যক্তিরা QR Code পাঠাতে পারেন বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে। যদি আপনি তাদের শিকার না হতে চান তাহলে সন্দেহজনক QR Code দেখলে স্ক্যান করবেন না।
(২) ‘কালেক্ট রিকোয়েস্ট’ সম্বন্ধেও একই সতর্কতা প্রয়োজন। ক্লিক করে কোনও পেমেন্ট অ্যাপ্রুভ করার আগে ভেবে দেখুন। এমন অনুমতি দিয়ে দিলে পরে পস্তাতে হতে পারে।
(৩) একবার স্ক্যান হয়ে গেলে বা অ্যাপ্রুভ করে দিলে আপনার টাকা বাইরের কোনও অ্যাকান্টে চলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা, অতি দ্রুত তা হতে পারে।
(৪) অনেক সময় দেখা গেছে অসাধু ব্যক্তিরা কোনও সাধারণ প্রচলিত ‘গল্প’ ফেঁদেছে, বা চালু থাকা কোন রীতি নিজেদের সুবিধার জন্য কাজে লাগিয়েছে। কোনও প্রোডাক্ট বিক্রেতা বা ব্যাংকের কর্মী হিসাবে পরিচয় দেওয়া বা অনলাইন শপিং সংস্থার নাম ভাঙিয়ে এই ধরনের প্রয়াস করা হয়েছে-এমন অনেকবারই দেখা গিয়েছে।
(৫) গ্রাহকরা বিশেষ করে যেন রিফান্ড পাওয়া বা ক্যাশব্যাক অফার নেওয়া বা ‘আনক্লেমড’ টাকা উদ্ধার হওয়া-এমন আবেদন সম্পর্কে সজাগ থাকেন। প্রলোভনে পা দিয়ে অনেকেই আগে ভুগেছেন।
(৬) UPI PIN (বা MPIN) কখনও পেমেন্ট পাওয়ার ব্যাপারে কাজে লাগে না। কেবলমাত্র পেমেন্ট দেওয়ার সময় এর ব্যবহার সাবধানে করতে হয় বলে জানানো হচ্ছে। UPI PIN, ব্যাংকের পাসওয়ার্ডের মতো, কাউকে না জানানোর কথাও বারবার বলছেন কর্তৃপক্ষ। গ্রাহকরা চাইলে সংশ্লিষ্ট নিয়মকানুন বুঝে নিতে পারেন নির্দিষ্টভাবে।
এ প্রসঙ্গে আরও জানা উচিত যে, ‘স্ক্যান টু পে’-র ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। কাস্টমাররা বুঝেছেন যে, এর মাধ্যমে অতি দ্রুত এবং সহজে লেনদেনের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। অনেক বেশি সংখ্যায় তাঁরা এমন পেমেন্টের পন্থা বেছে নেবেন আগামিদিনে। এই ট্রেন্ডই এই মুহূর্তে দুষ্কৃতীদের নজরে। ‘স্ক্যান টু পে’ অবশ্য যথেষ্ট সুরক্ষিত পদ্ধতি বলে ব্যাংকগুলি সাধারণভাবে মনে করে। QR Code এক তথ্য আদানপ্রদানের পদ্ধতি মাত্র, এখানে Encryption থাকার দরুন গ্রাহকের টাকা সুরক্ষিত থাকে। তবে অসতর্ক মুহূর্তে ভুল করেন অনেকেই। ‘কনট্যাক্টলেস পেমেন্ট’ যথেষ্ট সুবিধাজনক হলেও, এর উল্টো দিকটি নিয়ে আরও সতর্ক থাকার প্রয়োজন আছে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করেন।
এই প্রসঙ্গে ‘আন-অথরাইজড ট্রানজ্যাকশন’ নিয়েও বলেছে আইসিআইসিআই ব্যাংক। কোন কর্মী কখনও পিন (বা ওটিপি ইত্যাদি) জানতে চাইবেন না। তবে গ্রাহক যেন সর্বদা সতর্ক থাকেন ও সন্দেহজনক ট্রানজাকশন দেখলে দেরি না করে তা ব্যাঙ্কের নজরে আনেন। দ্রুত রিপোর্ট এলে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়াও কিছু ক্ষেত্রে সম্ভব হয়। তবে অপরাধীদের খোঁজ পাওয়া সব সময় যে চট করে হয় তা কিন্তু নয়। ব্যাঙ্কগুলি তাই সামগ্রিকভাবে দেশজোড়া সতর্কতা চাইছেন যাতে গ্রাহকদের স্বার্থ কতিপয় অসাধু মানুষের হাতে বিঘ্নিত না হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.