সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অলিম্পিক শেষ হয়েছে ১১ আগস্ট। কিন্তু তার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ভারতের অলিম্পিক অভিযান। চলতি অলিম্পিক (Paris Olympics 2024) থেকে সব মিলিয়ে ৬টি পদক জিতেছেন ভারতীয় অ্যাথলিটরা। যার মধ্যে রয়েছে পাঁচটি ব্রোঞ্জ ও একটি রুপো। কোনও সোনা আসেনি চলতি অলিম্পিক থেকে। স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা চলছে, কোথায় পিছিয়ে পড়লেন ভারতীয় অ্যাথলিটরা?
প্যারিস অলিম্পিকে মোট পাঁচটি ব্রোঞ্জ এসেছে ভারতের ঘরে। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে মনু ভাকের, ১০ মিটার এয়ার পিস্তল মিক্সড টিম ইভেন্টে মনু এবং সরবজ্যোত সিংয়ের জুটি তৃতীয় স্থান পেয়েছে। এছাড়াও শুটিংয়ে স্বপ্নিল কুসালে, কুস্তিতে আমন শেরাওয়াত ব্রোঞ্জ পেয়েছেন। তৃতীয় স্থান পেয়েছে ভারতের হকি দলও। চলতি অলিম্পিকে পদকের খুব কাছে এসেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে লক্ষ্য সেন, অর্জুন বাবুটার মতো একঝাঁক অ্যাথলিটকে।
অথচ টোকিও অলিম্পিক থেকে ৭টি পদক জিতেছিল ভারত। এবার সেই সংখ্যাটা কমেছে। যদিও ভিনেশ ফোগাটের রুপো পাওয়ার আবেদন এখনও ক্রীড়া আদালতে বিচারাধীন। ওই মামলায় যদি ভিনেশ জেতেন তাহলে অলিম্পিক থেকে দ্বিতীয় রুপো পাবে ভারত। তাতেও গতবারের সংখ্যাকে টপকানো যাবে না। টোকিওতে একটি সোনা এসেছিল নীরজ চোপড়ার থেকে। এবার কোনও স্বর্ণপদক মেলেনি।
আরেকটি উল্লেখ্যযোগ্য পরিসংখ্যান হল, এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে অলিম্পিকে ভারতের অবস্থান ১৬। কিন্তু গত বছর এশিয়ান গেমসে ভারতের স্থান ছিল চতুর্থ। চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার পরেই। প্রত্যাশিতভাবে অলিম্পিকেও তারা অনেকটাই এগিয়ে। কিন্তু উজবেকিস্তান, ইরান, চাইনিজ তাইপেই, বাহরিনের মতো দেশ তো বটেই, পাকিস্তানও এগিয়ে ভারতের থেকে। তবে সেটা মূলত সোনা পাওয়ার বিষয়ে। যেমন গোটা অলিম্পিক থেকে পাকিস্তান মাত্র একটিই পদক পেয়েছে। সেটা আরশাদ নাদিমের সোনা। সেই কারণে পদক তালিকায় ভারতের থেকে ৯ ধাপ এগিয়ে তারা।
এটা ঠিক যে, ভারতের অনেক প্রতিযোগীই হতাশ করেছেন। বিশেষ করে ব্যাডমিন্টন তারকাদের থেকে মেডেল আশা করেছিল দেশবাসী। কিন্তু পিভি সিন্ধু থেকে চিরাগ-সাত্ত্বিক জুটি পদক পাননি। ভারোত্তোলনে ব্যর্থ হয়েছেন মীরাবাই চানু। বক্সিংয়ে দাগ কাটতে পারেননি নিখাত জারিন, লভলিনা বরগোঁহাই। ফের অলিম্পিকের মঞ্চে ব্যর্থ হয়েছেন দীপিকা কুমারীরা। আবার এটাও ঠিক যে, এশিয়া কাপে এমন অনেক খেলা আছে যা অলিম্পিকে নেই। যেমন, ক্রিকেট বা কবাডি। যেখান থেকে মোট চারটি সোনা এসেছিল ভারতের ঝুলিতে। সেখানেও অলিম্পিকে কিছুটা পিছিয়ে পড়তে হয়েছে বলেই মনে করে ওয়াকিবহাল মহল।
সরকার থেকে যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলেই দাবি। বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যাডমিন্টন কিংবদন্তি প্রকাশ পাড়ুকোন। তাঁর মতে, ভারতীয় শাটলারদের আরও দায়িত্ববান হওয়া উচিত। অনেকেরই বক্তব্য, সেটা সমস্ত প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। প্রশ্ন উঠছে ভারতের ক্রীড়া পরিকাঠামো ও দেশের মানুষদের মানসিকতা নিয়েও। যেখানে খেলাধুলোর থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় পড়াশোনাকেই। চলতি অলিম্পিকে পদক সংখ্যা কমার পর সেই প্রশ্ন আবার ঘুরে আসছে। পরের অলিম্পিক ২০২৮-এ, লস অ্যাঞ্জেলসে। সেখানে কি আবারও সেই প্রশ্নগুলো ফিরে আসবে? তার দায়িত্ব শুধু অ্যাথলিটদের নয়, দেশের ক্রীড়াপ্রেমী জনতার কাঁধেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.