Advertisement
Advertisement

Breaking News

Vinesh Phogat

‘পরের বার সোনা হবেই’, ভেঙে পড়া নয়, ফের অলিম্পিকের প্রস্তুতিতে চোখ ভিনেশের বাবার

লেহ থেকে কন্যাকুমারী প্রত্যেকে ভিনেশকে বলছে, ওঠো। শক্ত হও। লড়াই করো। তুমি পারবে। পারতে হবেই।

Family of Vinesh Phogat gears up for next Olympic

ভিনেশ ফোগাট।

Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:August 7, 2024 11:11 pm
  • Updated:August 7, 2024 11:12 pm  

সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: দোতলা বিশাল বাড়ির বারান্দার এক কোণে ডাঁই হয়ে পড়ে আছে ফুল, মিষ্টি। সদর দরজা পার করে ঘরে ঢোকার মূল দ্বারের উপরে অলিম্পিকের লোগোটাও যেন ম্রিয়মাণ। বাড়ি, পাড়ার এদিক-ওদিক জটলা করে বসে আট থেকে আশি। সবার চোখেমুখে কেমন একটা অবিশ্বাস। হতাশা। কিন্তু ভেঙে পড়া নেই। উল্টে এখন থেকেই চার বছর বাদে নতুন ইতিহাস তৈরির জেদ।

দিল্লি থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ পার করে পৌঁছতে হয় হরিয়ানার চারখি দাদরি জেলার বালালি গ্রামে। পৌঁছে শুধু ভিনেশের নাম বললেই যথেষ্ট। হাত তুলে লোকে দেখিয়ে দেবে বাড়ি। যার মালকিনের নাম ভিনেশ ফোগাট। কথা ছিল বুধবার রাতে সেখানে হবে অকাল দীপাবলি। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে কুস্তির ফাইনালে উঠে আগেই ইতিহাস তৈরি করে ফেলেছিলেন ভিনেশ। মাঝের একটা হার্ডল টপকালেই সোনার অক্ষরে লেখা হয়ে যেত নাম। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস ও মাত্র ১০০ গ্রামের জন্য ফাইনালে উঠেও ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। বুধবার সকাল থেকেই বাড়ির সামনে অল্প অল্প করে জটলা হচ্ছিল। বাড়ির সামনে লাগানো হয়েছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। তৈরি হয়েছিল কানে তালা লাগানো জেবিএল টাওয়ার। কথা ছিল গোটা গ্রাম একসঙ্গে সাক্ষী হবেন ইতিহাসের কিন্তু হল না।

Advertisement

[আরও পড়ুন: খারিজ ভারতের আবেদন, ‘ফাইনালিস্ট’ ভিনেশকে রুপোর পদক দিতেও নারাজ বিশ্ব কুস্তি সংস্থা

কীভাবে হঠাৎ করে বেড়ে গেল ওজন? কী করছিলেন সাপোর্ট স্টাফরা? এর পিছনে কি তবে রয়েছে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র? ভিনেশের পরিবার বা গ্রামবাসীদের এসবের উত্তর দেওয়ার মানসিকতা, ইচ্ছা – কোনওটাই নেই। তাঁরা যেন অন্য ধাতুতে গড়া। খালি হাতে ফেরা তাঁদের চ্যালেঞ্জকে যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন থেকেই তাই লস অ্যাঞ্জেলসের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার ইঙ্গিত ভিনেশের বাবা রাজপালের গলায়। বলছিলেন, “কিছুই বলার নেই। সব শেষ। তবে কী হয়েছে, সেসব নিয়ে ভেবে আর কোনও লাভ নেই। কারণ এসব তো আর আমাদের হাতে নেই। আমাদের হাতে যেটা আছে, আমাদের সেই নিয়ে কাজ করতে হবে। ভিনেশ সোনা আনবেই। এবার হল না। পরেরবার হবে। হতেই হবে।”

ভিনেশের শ্বশুর রাজপাল রাঠি যা বললেন, তাতেই বোঝা যায় পদক জয়ের জন্য কতটা আগ্রহী ছিল গোটা পরিবার। বলছিলেন, “বউমার উচিত ছিল নেড়া হয়ে যাওয়া। তাহলেই ওজন কমে যেত।” ভিনেশের জেঠু, গীতা-ববিতার বাবা, দ্রোণাচার্য মহাবীর ফোগাট বললেন, “সকালে বজরং ফোন করে বলল, বাবা ভিনেশ বাদ পড়েছে। মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। গত ২৪টা বছর আমি সোনার অপেক্ষা করছি। এই অপেক্ষার শেষ হতেই হবে। আমি বজরং, সঙ্গীতা, ভিনেশদের বলে দিয়েছি এখন থেকেই ২০২৮-এর প্রস্তুতি শুরু করে দিতে।”

এই জন্যই হয়তো বাকিদের থেকে আলাদা হন চ্যাম্পিয়নরা। সাধারণ মানুষ যেখানে হারের পর বা এই ধরনের আকস্মিক ঘটনার পর মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ত, কান্নায়, হতাশায় ভেঙে পড়ত, তখন ফোগাট পরিবার তৈরি হচ্ছে চার বছর পরের লড়াইয়ের জন্য। অবশ্য শুধু ফোগাটরাই কেন, গোটা দেশও। লেহ থেকে কন্যাকুমারী প্রত্যেকে ভিনেশকে বলছে, ওঠো। শক্ত হও। লড়াই করো। তুমি পারবে। পারতে হবেই। সহ কুস্তিগিরদের জন্য প্রবল গরমে, ভরা বৃষ্টিতে যে যন্তরমন্তরে প্রতিবাদ জানাতে পারে। নিজের অভিষ্ঠ পূরণে না জানি সে কত কী করতে পারে।

[আরও পড়ুন: ডুরান্ডে অপ্রতিরোধ্য ইস্টবেঙ্গল, টানা দুই ম্যাচে জয় লাল হলুদ ব্রিগেডের

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement