ধীমান রায়, কাটোয়া: অগ্রদ্বীপের গোপীনাথের মেলা কয়েকশতাব্দী প্রাচীন। লাখো মানুষের সমাগম হয় সেখানে। গ্রামের বাড়িতে-বাড়িতে দূরদূরান্তের কুটুমরা ভিড় জমান। ভাগীরথীর তীরে সুপ্রাচীন গ্রামের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে আগত একজন গৃহকর্তাকে বলেন, “মনে হয় বাড়ি ছেড়ে এসে আপনাদের গ্রামেই পাকাপাকি বসবাস করি। আহা, প্রকৃতির এমন রূপ আমাদের দেখার সৌভাগ্য খুব কম হয়।” কুটুমের কথা শুনে গৃহকর্তা মুচকি হাসলেন। তারপর তাঁর জবাব, “আচ্ছা তাই হোক। আপনি তাহলে বর্ষাকালে সপরিবারে আমাদের গ্রামে চলে আসবেন। তাহলে এই রূপ কত ভয়ঙ্কর হয়ে পারে তখন একবার দেখে যাবেন।” আসলে অগ্রদ্বীপ গ্রামের বাসিন্দারা ভুক্তভোগী। নদীর ভাঙনের সমস্যায় তারা জেরবার। বছরের পর বছর ভাগীরথীর ভাঙনে একটু-একটু করে তলিয়ে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি। বিপন্ন হয়েছে জনজীবন। বর্ষায় নদীতে যখন কানায় কানায় জল থাকে তখন প্রমাদ গোনেন অগ্রদ্বীপবাসী।
[আরও পড়ুন: এখনও নাগ-নাগিনীর সঙ্গে সহবাস করে চাঁদ সওদাগরের চম্পানগর]
এ শুধু অগ্রদ্বীপের সমস্যা নয়। ভাগীরথী ও অজয় সংলগ্ন কাটোয়া কেতুগ্রামের এমন বহু গ্রাম রয়েছে যেসমস্ত জনবসতি এলাকায় ভাঙন সমস্যা হল এক জ্বলন্ত সমস্যা। এলাকায় কান পাতলেই সেই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের মুখে শোনা যায় হা হুতাশের কথা। ভোট আসে। ভোট যায়। ভাঙনে জর্জরিত গ্রামবাসীরা আজও সেই তিমিরেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী ভাঙন সমস্যায় শুধু প্রতিশ্রুতিই মিলেছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ সুনীল মণ্ডল এবারেও এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর দাবি, “গঙ্গাভাঙন রোধে কেন্দ্র সরকারের অর্থ বরাদ্দ ছাড়া এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব নয়। আমি একাধিকবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, পরিবহণ ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদনও হয়ে গিয়েছে। আশা করছি কাজও ভোট প্রক্রিয়া মিটে গেলে শুরু হয়ে যাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.