অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন না বলে ঠিক করেছেন মকরামপুর বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত তিন যুবকের মধ্যে দুই যুবকের পরিবার৷ একদিকে ছেলে হারানোর শোক, অপরদিকে প্রশাসন আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার না করার ক্ষোভ৷ তারউপর মৃতের স্ত্রীর কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের যন্ত্রনা৷ সবমিলিয়ে এই পরিবারগুলি ভোটে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মৃত তিন যুবক তৃণমূল করতেন বলে জানা গিয়েছে।
২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট৷ সকালেই নারায়ণগড় থানার মকরামপুর এলাকায় তৃণমূলের কার্যালয়ে বিস্ফোরণ ঘটে৷ সেইসময়ে কার্যালয়ে থাকা সুদীপ্ত ঘোষ, বিকাশ ভুঁইয়া ও বিমল চৌধুরির মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার পরে আট মাস পার হয়ে গিয়েছে। পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি৷ আর মৃত যুবকের পরিবারও কোনও সাহায্য পায়নি বলে অভিযোগ। মৃত সুদীপ্ত ঘোষের বাবা মনোরঞ্জন ঘোষ জানালেন, ভোট দেওয়ার আর মানসিকতা নেই৷ তাঁর প্রশ্ন, কী হবে ভোট দিয়ে৷ অথচ তিনি নিজে এই গোবিন্দপুর বুথে তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন৷ আর বড় ছেলে সুদীপ্ত ছিলেন একটি কারখানায় তৃণমূল ইউনিয়নের নেতা৷ তিনি জানালেন মৃত ছেলের স্ত্রীর একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেয়নি কেউ। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ডহরপুর গ্রামের মৃত তৃণমূল কর্মী বিকাশ ভুঁইয়ার বাবা দীপক ভুঁইয়া জানালেন, মানসিক হতাশা নিয়ে ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন না। বউমার কাজ তো হয়নি, উলটে পুলিশও কাউকে ধরতে পারেনি৷
[আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতিই সার, ভাঙনের গ্রাসে কাটোয়া-কেতুগ্রামের শতাধিক গ্রাম]
তবে মৃত বিমল চৌধুরির বাবা তপন চৌধুরি অবশ্য জানালেন তাঁরা তৃণমূলের সমর্থক রয়েছেন৷ যদিও ভোট দেবেন কি না সেটা অবশ্য পরিষ্কার করে জানালেন না৷ এই ব্যাপারে জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্ট জানিয়েছেন, মৃত যুবকদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে৷ আর দলের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের জেরে মৃতদের স্ত্রীদের কাজের ব্যবস্থা করা যায়নি বলে জানালেন৷ এদিকে নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যুৎ ঘোষ জানিয়েছেন মৃতদের স্ত্রীদের একটা কাজের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ভোটের পরে কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন৷
ছবি: সৈকত সাঁতরা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.