ছবি: সংগৃহীত।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে ওষুধে সেরে ওঠে অসুস্থ। যা সেবনে হাতেপায়ে বল পেয়ে উঠে দাঁড়ায় মানুষ, সজ্ঞানে ফেরে চেতনাও। বেদনার বিষয় হল, সেই ড্রাগ কারও কারও জন্য নেশার বস্তু। ইচ্ছাকৃত ভাবে অচেতন জগতে হারাতে চান তাঁরা। এই যেমন আমেরিকার রাস্তাঘাটে হলিউডের সিনেমার মতো অর্ধমৃত মানুষের দেখা মিলছে। কখনও দাঁতমুখ খিঁচিয়ে তেড়ে আসছে তারা। কখনও বা অদ্ভূত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে ভিড়ের মধ্যে। প্রথম দেখায় চমকে উঠছে পথচলতি মানুষ। পরে বুঝতে পারছে জ্ঞানে নেই ওই নারী বা পুরুষ। এর পিছনে রয়েছে ‘জম্বি ড্রাগস’। সে আবার কী?
শুধু আমেরিকা (America) নয়, ইংল্যান্ডের (England) রাস্তাঘাটেও দেখা মিলছে ‘জম্বি’ মানুষের। বিশেষ ধরনের ওষুধের ডোজেই কখনও পশুর মতো, কখনও বা উন্মাদ আচরণ করছেন তরুণ ও তরুণীরা। মোদ্দা কথা, এই ওষুধের সেবনে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। মস্তিষ্ক কর্মক্ষমতা হারায়। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে এই ড্রাগ নেওয়া ব্যক্তিদের গায়ের চামড়া পচে যায়, বিকৃত হয়ে যায় চোখমুখ। কিছু ক্ষেত্রে কম বয়সীদের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। চিকিৎসকদের দাবি, মৃতদের রক্তে নির্দিষ্ট ড্রাগের উপাদান মিলেছে। এই ‘ওষুধ’ ওরফে ‘বিষে’র নাম কী?
ওষুধটির নাম হল জাইলাজিন ( xylazine)। আদতে পশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। গরু এবং ঘোড়ার জন্য ট্রাঙ্কুইলাইজার হিসেবে প্রয়োগ করা হয় জাইলাজিন। অভিযোগ, কিছু মাদক ব্যবসায়ী ওই ড্রাগ বেআইনি মাদকে মিশিয়ে দিচ্ছেন। হেরোইনের মধ্যেও মেশানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর ফল হচ্ছে মারাত্বক। সাঙ্ঘাতিক নেশায় বিকৃত আচরণ করছেন তরুণরা। অতি সাহসে অনেকে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। জীবিত থাকলেও একাধিক রোগে পড়ছেন।
‘ফ্লাক্কা’ নামের ‘জম্বি ড্রাগে’র কথা প্রথম জানা যায় ২০১৪ সালে। আমেরিকার ফ্লোরিডা শহরে বহু মাদকাসক্তের জম্বির মতো অস্বাভাবিক আচরণের বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ড্রাগের প্রভাবে হঠাৎ উত্তেজনা, ঝিমুনি, ক্রোধ, আক্রমণের চেষ্টা, অনিয়ন্ত্রিত অঙ্গ সঞ্চালনের মতো উপসর্গ দেখা গিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, বড় ক্ষতির কথা জেনেও বিষাদগ্রস্ত নবীন প্রজন্ম ফ্লাক্কার নেশা করছে। মনে করিয়ে দিচ্ছে বঙ্গ ভাষার কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অমোঘ উচ্চারণ-‘কে জানে গরল কি না প্রকৃত পানীয়, অমৃতই বিষ!’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.