সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবা-মা যেন ঠিক গাছের মতো। যাদের আশ্রয়ে জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়। আর মাথার উপর থেকে এই গাছের ছায়া সরে গেলে যেন ভয়ংকর বিষাদে ভরে ওঠে চারিপাশ। ঠিক এটাই হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার আর্কানসাস এলাকার নিউপোর্টের বাসিন্দা বছর তেইশের চেস্টিটি প্যাটারসনের সঙ্গে। দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু এক অসীম শূন্যতা তৈরি করেছিল তাঁর মনে। জীবনযুদ্ধ যেন আরও বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর কাছে। সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে উত্তর পাওয়া অসম্ভব জেনেও প্রতিদিন বাবার নম্বরে মেসেজ করতেন চেস্টিটি। তাঁর সেখানেই ঘটল মিরাকল। অজান্তেই এক বাবার ভরসা হয়ে উঠলেন তরুণী।
বাস্তববাদী চেষ্টিটি জানতেন যে, বাবার নম্বর থেকে কোনওদিনই কোনও উত্তর আসবে না। কারণ, উত্তর আসা সম্ভব নয়। কিন্তু তাও বাবার মৃত্যুর পর চারবছর ধরে প্রতিদিন বাবাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন তিনি। যে কথা কাউকে বলতে পারেননি, যে যন্ত্রণা কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেননি, সেই যন্ত্রণার কথাই লিখতেন। যেদিন ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন চেস্টিটি সেদিন আরও দীর্ঘ হয়েছিল বাবার উদ্দেশ্যে লেখা তার মনের কথা। চেস্টিটি লিখেছিলেন, “চার বছর হয়ে গেল, তুমি নেই। কিন্তু আমার একটা দিনও পেরোয় না, যেদিন তোমায় মিস করি না। তোমার যখন আমায় সবচেয়ে দরকার ছিল, তখন তোমার পাশে থাকতে পারিনি, আমি সরি। কিন্তু একদিন নিশ্চয় আমরা একসঙ্গে বসে আমাদের ফেভারিট ম্যাচ দেখার সুযোগ পাব।”
এভাবেই বয়ে যাচ্ছিল সময়, আচমকাই এক অদ্ভুত কাণ্ড! একদিন আচমকাই বাবার নম্বর থেকে মেসেজ পেলেন তরুণী। বিস্ময় ভরা চোখে মেসেজটি খোলেন চেস্টিনি। সেখানে লেখা ছিল,’আমি ব্র্যাড। নাহ আমি তোমার বাবা নই। কিন্তু শেষ চারবছরে প্রতিদিন তোমার পাঠানো মেসেজ আমার কাছে এসেছে। ২০১৪ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় আমার একমাত্র মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এরপর তোমার মেসেজই আমায় বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। তোমার মেসেজ পেলে মনে হয় ভগবানের বার্তা।’
প্রথমে নিজেও কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি চেস্টিনি। কিন্তু তাঁর পাঠানো মেসেজ যে এক বাবার বেঁচে থাকার রসদ হতে পারে তা ভেবেই এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছে তাঁর। চেষ্টিনি ও ব্র্যাডের অর্থাৎ অপরিচিত দুই বাবা-মেয়ের কথোপকথন সোশ্যাল সাইটে ছড়িয়ে আবেগে ভেসে গিয়েছেন নেটিজেনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.