Advertisement
Advertisement

Breaking News

আদিবাসীর গান

থানার মধ্যে অবিরাম গান গেয়ে পুলিশকে নাজেহাল করে ছাড়লেন মহিলা, দেখুন ভিডিও

গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ার 'অপরাধে' এক মহিলা পুলিশকর্মীর গলাও টিপে ধরেন!

Woman sang song the whole night at the Bhatar Police Station
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 16, 2019 3:54 pm
  • Updated:September 16, 2019 4:03 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: রানাঘাট রেলস্টেশনে বসে আপন খেয়ালে গান গাইতে গাইতে হঠাৎই একদিন ভাগ্যের শিঁকে ছেঁড়ে রানু মণ্ডলের। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর গানের ভিডিও ভাইরাল হতেই রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে ওঠেন রানু। দেশবাসীকে মুদ্ধ করেছে রানুর সুরেলা কণ্ঠ। তাঁর গানেই এখন মজে নেটিজেনরা। কিন্তু এই গান বিষয়টিই যে কতটা ‘অসহনীয়’ হয়ে উঠতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার পুলিশ।

ভাবছেন তো ব্যাপারটা কী? তাহলে খোলসা করে বলা যাক। মধ্যরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরির সময় এক মানসিক ভারসাম্যহীন আদিবাসী বধূকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে ভাতার থানার পুলিশ। বস্তুত পুলিশের এই ‘মানবিকতাই’ তাদের কাল হল। ভাতার থানায় বসে সারারাত ধরে গলা ছেড়ে গান গেয়ে গেলেন ওই আদিবাসী মহিলা। তাকে এক মুহূর্তের জন্য চুপ করাতে পারেননি পুলিশকর্মীরা। শুধু তাই নয়, তাঁর গান না শুনে কেউ অন্যমনস্ক হলেই সেই পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ার্সকে ধাক্কাধাক্কি করেছেন ওই মহিলা। গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ার ‘অপরাধে’ এক মহিলা পুলিশকর্মীকে গলা টিপেও ধরেছেন। রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত অবিরাম চলেছে ওই অজ্ঞাতপরিচয় গৃহবধূর গান গেয়ে উৎপাত। তার জেরে কার্যত নাজেহাল পুলিশ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ৯/১১-এর বর্ষপূর্তিতে অদ্ভুত কাণ্ড, জন্মাল নয় পাউন্ড ১১ আউন্সের শিশুকন‌্যা]

Ranu Mandal

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্থানীয় এলাকা থেকে খবর আসে বছর পয়ত্রিশের এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা ভাতারের ৬ মাইল বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঘোরাঘুরি করছেন। খবর পেয়েই পুলিশ রাত প্রায় বারোটা নাগাদ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ডিউটি অফিসারের ঘরেই মহিলাকে বসিয়ে রেখে প্রথমে খাবার-দাবার দেওয়া হয়। তাঁকে লক্ষ্য রাখতে আজিজা বেগম নামে এক মহিলা পুলিশকর্মীকেও রাখা হয়। দরজার বাইরে বসিয়ে রাখা হয় দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার্সকেও। ভাতার থানার এক এসআই বলেন, “রাতে মহিলাকে খাবার দেওয়া হয়। খাওয়া-দাওয়া শেষ করেই তিনি শুরু করেন সাঁওতালী ভাষায় গান। প্রথমে ভেবেছিলাম পাগলের মন, একটু গান গেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। গান আর থামে না। রাত যত বাড়ে গলার স্বরও বাড়ে।”

সিভিক ভসেন্টিয়ার্সদের কথায়, “আমরা যদি ওর গান না শুনে একটু অন্যমনস্ক হয়েছি তখন আমাদের কাছে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি পর্যন্তও করেছে।” ভাতার থানার এক মহিলা পুলিশকর্মী আজিজা বেগমের কথায়, “সারারাত ওই মহিলার পাশে বসে পাহারা দিয়েছি। একবার শুধু চোখটা একটু লেগেছে, ব্যস, দেখি দু’হাতে আমার গলাটা টিপে ধরেছে। আমি চিৎকার করতেই অন্য কর্মীরা এসে তাঁকে ছাড়িয়ে দেয়।”

[আরও পড়ুন: ৪৫ বছর ধরে কাচ চিবিয়ে খাচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের আইনজীবী, কেন জানেন?]

পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত গান করতেই ব্যস্ত ছিলেন ওই মহিলা। তারই মধ্যে অনেক অনুনয় বিনয় করে পুলিশ জানতে পারে মহিলার বাড়ি ঝাড়গ্রামের বিনপুর থানা এলাকায়। ভাতার থানার ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সকালেই বিনপুর থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁর বাড়ির লোকজনদের জানাতে পারে। তবে এদিন দুপুর পর্যন্ত বিনপুর থানা থেকে কোনও উত্তর আসেনি। তাই ভাতার পুলিশ এখনও ভুগছে ‘গানআতঙ্কে’।

ছবি: জয়ন্ত দাস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement