সুব্রত বিশ্বাস: এবার শিশুর আবেগকে প্রাধাণ্য দিল রেল। ট্রেনের মধ্যে ফেলে যাওয়া খেলনা শিশুকে বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিল আরপিএফ। তবে খেলনা ফেলে যাওয়া থেকে তা ফিরিয়ে দেওয়া পর্যন্ত যে কর্মকাণ্ড, তা কোনও মানবিক চিত্রনাট্যের থেকে কম নয়।
বৃহস্পতিবার ১৩৯ নম্বরে রেল মদতে সেকেন্দ্রাবাদ-আগরতলা এক্সপ্রেসের (০৭০৩০) যাত্রী ভুসিন পট্টনায়েক জানান, “ওই ট্রেনের এক সহযাত্রীর শিশু একটি খেলনা ফেলে গিয়েছে। খেলনাটি তার অতি প্রিয় ছিল। দেখেছিলাম ট্রেনে থাকার সময় এক মুহূর্ত সে সেটি হাতছাড়া করেনি। এমনকী কোলে নিয়েই ঘুমিয়েছে। সেই খেলনা ফেলে চলে যাওয়াটা শিশুটির কাছে খুব বেদনার হবে।” যাত্রীর এই বার্তা পৌঁছয় রেলমন্ত্রকে। আবেদনকারী যাত্রী অবশ্য সহযাত্রীদের নাম নম্বর কিছুই জানাতে পারেননি। এরপর আগরতলাগামী ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছনোর পর আরপিএফ ওই কামরায় গিয়ে আবেদনকারী ভুসিনের থেকে খেলনাটি হেফাজতে নেয়।
এরপরের অধ্যায়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও শক্ত কাজ ছিল। ট্রেনটির যাত্রা শুরুর সেকেন্দ্রাবাদে রিজার্ভেশন কাউন্টারে যোগাযোগ করে এনএফ রেলের আরপিএফ। পিএনআর দেখে চিহ্নিত হয় কোন কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা হয়েছিল। সেখানে রিকুইজিশন ফর্ম চেক করে শিশুটির বাবা ও মায়ের নাম জানা যায়। বাবা মোহিত রেজা মা নাসরিন বেগম। উত্তর দিনাজপুরের আলুয়াবাড়ি স্টেশন থেকে কুড়ি কিলোমিটার দূরে কাজীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। এরপর আলুয়াবাড়ির আরপিএফ আধিকারিক বিশ্বজিৎ সদলে রওনা হন সেদিকে। সঙ্গে সেই শিশুটির প্রিয় খেলনা।
শুক্রবারই এই খেলনা শিশুটির হাতে তুলে দেয় আরপিএফ। খোওয়া যাওয়া খেলনা হাতে পেয়ে ১৯ মাসের শিশুর হাজার ওয়াটের হাসি। যে হাসির ছবি তুলে রাখেন আরপিএফরা। শিশুর বাবা-মা জানিয়েছে, ফেলে আসার পর খুব খারাপ লাগলেও তা কে ফেরাবে ভেবে আর কোনও চেষ্টা করিনি। তবে রেলের এই উদ্যোগ সারাজীবন মনে রাখার মতো ঘটনা। রেলকর্মীদের এই তৎপরতার জন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান। এনএফ রেলের কাটিহার ডিভিশনের আরপিএফ কমান্ড্যান্ট কমল সিং এ বিষয়ে বলেছেন, “যাত্রীদের ফেলে যাওয়া লাগেজ আমরা ফেরত দেওয়ার সব ব্যবস্থা করি। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। শিশুর আবেগকে প্রাধান্য দিতে তার বাড়িতে যায় আরপিএফ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.