Advertisement
Advertisement

Breaking News

Visva-Bharati

নেই দৃষ্টিশক্তি, ‘পরশ পত্রালি’র সাহায্যে গন্ধে-স্পর্শে গাছ চিনছেন দৃষ্টিহীনরা

দৃষ্টিহীন ও অন্ধত্বে ভুগছেন এমন পড়ুয়াদের স্পর্শ ভিত্তিক শিক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে।

Visva-Bharati student discovers method for visually impaired to identify trees
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:March 28, 2025 9:50 pm
  • Updated:March 28, 2025 9:50 pm  

দেব গোস্বামী, বোলপুর: কেউ জন্মগতভাবে অন্ধ। কেউ আবার আকস্মিক দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। দৃষ্টিহীন ও অন্ধত্বে ভুগছেন এমন পড়ুয়াদের স্পর্শ ভিত্তিক শিক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছেন বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গবেষক ছাত্র সৌমিত্র হালদার। এমনকী দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা যাতে গাছগাছালির সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন সেই উপায়ও বের করেছেন। নির্ভুল অভিজ্ঞতা দানের পদ্ধতি প্রয়োগ করে গাছের পাতার নাম, আকার, ঘ্রাণ প্রভৃতি সম্পর্কে পরিচয় ঘটিয়ে নজির তৈরি করেছেন। সৌমিত্রর গবেষণাপত্রটির নাম ‘পরশ পত্রালি’।

প্রাথমিকভাবে একাধিক গাছের পাতা নিয়েই শুরু হয় প্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়ক প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ। একদিকে পাইন, আম, জবা, অশ্বত্থ, গুলঞ্জ প্রভৃতি পাতা চেনাবার কাজ। অন্যদিকে, ব্রেইল পদ্ধতিতে সেই পাতার নাম, বিজ্ঞানসম্মত নাম, ঘ্রাণ প্রভৃতির বর্ণনা ছাড়াও ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতির বিষয়েও শিক্ষা কার্যক্রম। সদ্য বিশ্বভারতীর বিনয়ভবনে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের একটি সেমিনারেও এই গবেষণাটির সাফল্যের কথা উঠে আসে। এমনকী, যাদবপুরেও একটি সেমিনারে এই গবেষণাটি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা হয়। দৃষ্টিহীনদের দিয়েও বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর উচ্ছ্বসিত বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গবেষক, পড়ুয়া, অধ্যাপকরা।

Advertisement

নদিয়া জেলার তেহট্টের ইলশামারির বাসিন্দা সৌমিত্র উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরই বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পরে গবেষণা শুরু করেন। তাঁর কথায়, “গবেষণার আগেই বিশেষভাবে নজরে আসে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা গাছের পাতা চিনতে পারছেন না। এরপরই অধ্যাপকদের সহযোগিতায় দৃষ্টিহীনদের গাছ চেনানোর উপায় বের করা সম্ভব হয়। প্রাথমিকভাবে গাছের পাতা নিয়ে শুরু হয় আমার গবেষণার প্রাথমিক কাজ। বর্তমানে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা স্পর্শ করলেই সহজেই বুঝতে পারছেন  কোন গাছের পাতা। তার আকার, আয়তন, ঘ্রাণ কেমন। ফলে পরিবেশের সঙ্গে তাঁদের সহজেই পরিচিতি বাড়ছে স্পর্শ ও ঘ্রাণের মাধ্যমেই। পথ চলতে গিয়েও আন্দাজ করতে পারছেন কোন গাছের নিচে রয়েছেন তাঁরা। ফলে সহজেই নিজেদের জায়গাও চিনতে পারছেন অন্যের সহযোগিতা ছাড়া।”

সৌমিত্রর এই গবেষণা ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে স্থান পেয়েছে সৌমিত্রের গবেষণাপত্রটি। দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের দাবি, “ডিজিটাল পদ্ধতি ছাড়াও সহজলভ্য পদ্ধতিতে গাছের পাতা স্পর্শ করলেই পরিবেশের প্রতি জানার ও চেনার আগ্রহ বাড়ছে সকলের। উপকৃত হচ্ছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সুব্রত মণ্ডল বলেন, “সৌমিত্রর গবেষণায় নিপুণভাবেই দৃষ্টিহীনরা স্পর্শ করলেই কোনটি কোন গাছের পাতা, কেমন গন্ধ বুঝতে সহজেই অসুবিধা হবে না। আমরা এই কাজটি ভবিষ্যতে কাজ করতে ইচ্ছুক। দৃষ্টান্তমূলক গবেষণাপত্রটি স্কুল-কলেজের লাইব্রেরিতে রাখা থাকলে উপকৃত হবেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারাও।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement