ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে যে কোনও নাগরিকের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি হল আধার কার্ড (Aadhar Card)। সরকারি প্রকল্প থেকে শুরু করে দৈনন্দিন অনেক কাজেই প্রয়োজন হয় আধার কার্ড। দেশের জনগনের প্রত্যেকেরই না হয় আধার কার্ড রয়েছে, কিন্তু ভগবানের আধার কার্ড! না, ভগবানের আধার কার্ড তৈরি করা একেবারেই অবাস্তব। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মাণ্ডিতে এক মন্দিরের পুরোহিত ফসল বিক্রি করতে গিয়ে এরকমই এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন। সেখানে ফসল বিক্রির জন্য তাঁর কাছ থেকে ভগবান রামচন্দ্র এবং মা সীতার আধার কার্ড দেখতে চাইলেন আধিকারিকরা। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই সত্যি।
ঠিক কী ঘটেছিল? একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার আত্তারা তেহসিলের কুরহারা গ্রামের। ওই এলাকাতেই রয়েছে বিশাল বড় রাম-সীতার মন্দির। মন্দিরের অধীনে থাকা সাত হেক্টর জমিতে চাষবাস করেন মন্দিরেরই পুরোহিত মহন্ত রামকুমার দাস। সম্প্রতি ওই জমিতে গম চাষ করেছিলেন তিনি। ফলনও বেশ ভাল হয়েছিল। এরপরই প্রায় ১০০ কুইন্টাল গম স্থানীয় একটি মাণ্ডিতে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন পুরোহিত। কিন্তু সেখানে গিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েন তিনি। আধিকারিকরা জানান, ওই ফসল বিক্রি করতে হলে যাঁর নামে জমির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, তাঁর আধার কার্ড প্রয়োজন।
এদিকে, রাম এবং মা সীতার আধার কার্ড কোথায় পাবেন? এই ভেবেই চিন্তায় পড়ে যান মহন্ত কুমার দাস। আধিকারিকদের বারংবার অনুরোধ করেও কোনও লাভ হয়নি। এমনকী সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট সৌরভ শুক্লার কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁকে আধিকারিকরা জানান, যাঁর নামে জমির রেজিস্ট্রেশন, সেই জমির ফসল বেচতে হলে উক্ত ব্যক্তির আধার কার্ডই প্রয়োজন। শেষপর্যন্ত রাম এবং সীতার আধার কার্ড দেখাতে না পেরে অনেকটাই কম দামে ফসল বেচতে বাধ্য হন মন্দিরের পুরোহিত মহন্ত রামকুমার দাস। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে জেলা খাদ্য সরবরাহকারী আধিকারিক গোবিন্দ উপাধ্যায় জানান, এটাই নিয়ম। মাণ্ডির আধিকারিকরা কখনওই যে ব্যক্তির নামে জমি রয়েছে, তাঁর আধার কার্ড ছাড়া মঠ এবং মন্দিরের জমিতে উৎপাদিত ফসল কিনতে পারবেন না। নিয়মানুযায়ী, এক্ষেত্রে তাই ভগবানের আধার কার্ড প্রয়োজন ছিল। যদিও সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের সাফাই, ওই পুরোহিতের কাছ থেকে কখনওই ভগবানের আধার কার্ড চাওয়া হয়নি। তাঁকে কেবল নিয়মের ব্যাপারে অবগত করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.