সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শরীর অসাড়। হার্টবিটও বন্ধ! আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল মারাই গিয়েছেন। ঠিক ৪৫ মিনিটের জন্য ‘মৃত্যু’ হয়েছিল তাঁর। কিন্তু তারপরই প্রাণ ফিরে পেলেন। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে মাইকেল ন্যাপিনস্কির সঙ্গে।
বিষয়টা তাহলে একটু খোলসে করে বলা যাক। গত ৭ নভেম্বর মার্কিন মুলুকের মাউন্ট রেইনার জাতীয় উদ্যানে গিয়েছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের মাইকেল। সেখানে নিয়েই রাস্তা হারিয়ে ফেলেন। তার উপর পাহাড়ের কোলে ঘন জঙ্গলে ছিল মারাত্মক ঠান্ডা। পরের দিন রাতে হেলিকপ্টারে তাঁর খোঁজ শুরু হয়। দীর্ঘ তল্লাশির পর মাইকেলের সন্ধান মেলে। গ্রাউন্ড টিম সেই স্থানে পৌঁছে তাঁকে এয়ারলিফ্ট করে। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় ওয়াশিংটনের একটি হাসপাতালে। তখনও তাঁর নাড়ি সচল ছিল। কিন্তু এমার্জেন্সিতে ভরতি করতেই তাঁর হার্টবিট কাজ করা বন্ধ করে দেয়। CPR প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বারবার মাইকেলের হার্টবিট ফেরানোর চেষ্টা করে মেডিক্যাল টিম। ব্যবহার করা হয় ECMO মেশিনেরও। এই প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে রক্ত বের করে দেওয়া হয়। যাতে কার্বন ডাই অক্সাইড বেরিয়ে রক্তে অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় কেটে যায় ৪৫ মিনিট। তারপর অবশেষে হার্টবিট শুনতে পান চিকিৎসকরা।
এ ঘটনাকে মিরাকলই বলছেন ওই হাসপাতালের ডাক্তাররা। প্রায় দু’দিন পর চেতনা ফেরে মাইকেলের। ঘটনার কথা জানতে পেরে বেশ অবাকই হন তিনি। সাক্ষাৎ যমদূতের মুখ থেকে ফিরে মাইকেল বলেন, “আমি সত্যিই জানি না কী হয়েছিল। হয়তো মারাই গিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসক আর স্বাস্থ্যকর্মীরা হাল ছাড়েননি। আমাকে বাঁচানোর জন্য সবরকম চেষ্টা তাঁরা করেছেন। তাই জীবন ফিরে পেলাম। হাজারো মানুষকে এর জন্য ধন্যবাদ জানাতে হবে।” মরণাপন্ন রোগীর প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার অংশীদার হতে পেরে আপ্লুত নার্স হোয়াইটনিও। বলছিলেন, “অনেক চেষ্টার পর যখন উনি চোখ খুললেন, চোখে জল এসে গিয়েছিল। আমাদের পরিশ্রম কাজে এসেছে বলেই ভাল লাগল।”
জ্ঞান ফিরলেও প্রথমে মাইকেলের কিডনি ও হার্ট স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না। তবে এখন অনেকটাই সুস্থ তিনি। গত শুক্রবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। ডাক্তার ও নার্সদের থেকে ৪৫ মিনিটের সেই ‘কাহিনি’ যেন এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না মাইকেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.