সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আকাশের রং জিজ্ঞেস করলে উত্তরে নিশ্চয়ই নীলই বলবেন। আবার রক্ত মানেই লাল। ঠিক একইভাবে মন্দির মানেই তো গেরুয়া! কী? ভুল মনে হল? কেন? ‘রাম রাজ্যে’ তো এমনটা হতেই পারে! তাই না? এই যেমন উত্তরপ্রদেশের মৌদহ গ্রামের মানুষ মন্দির মানে গেরুয়াই বোঝেন। আর তাই গেরুয়া রঙের সুলভ শৌচালয়কেই মন্দির ভেবে যাওয়া-আসার পথে প্রতিদিন প্রণাম করেন।
বিশ্বাস না হওয়ার মতোই ঘটনা। এ দেশে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে, যা শুনে হতভম্ব হয়ে যেতে হয়। উত্তরপ্রদেশের এই গ্রামে গত একবছর ধরে যা হচ্ছে, তা সত্যিই ভাবনারও অতীত। রাস্তার ধারের একটি ঘর। যার বাইরের দেওয়ালের রং গেরুয়া। দীর্ঘদিন ধরে সেটির দরজায় তালা ঝুলছে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, রং যখন গেরুয়া, তখন দেওয়ালের ওপারে নিশ্চয়ই কোনও দেবতার বাস। তাই বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে হাতজোড় করে প্রণাম করেন তাঁরা। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে প্রার্থনাও করেন!
স্থানীয় বাসিন্দা রাকেশ চান্দেলের কথায়, “এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছেই অবস্থিত ওই ঘরটি। দেওয়ালে গেরুয়া রং তো বটেই, ঘরের উপরের অংশটিও দেখতে মন্দিরের মতোই। তাই বাসিন্দারা ধরেই নিয়েছেন, এটি মন্দির। ভিতরে কী আছে, জানার চেষ্টা করিনি আমরা। সম্প্রতি এক অফিসার এসে বলেন, এটি আসলে একটি শৌচাগার।” তিনি এও স্বীকার করে নেন, গেরুয়ার গেরোয় পড়েই যত গন্ডগোল।
বছর খানেক আগে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অংশ হিসেবে এই গ্রামে তৈরি হয়েছিল শৌচাগারটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেটি বন্ধ। মৌদহ নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান রাম কিশোর বলেন, “নগর পালিকা পরিষদ এই শৌচাগারটি তৈরি করেছিল। কনট্রাক্টর এটি গেরুয়া রং করে দেয়।” আর সেখান থেকে যত ধন্দের সূত্রপাত। তবে গ্রামবাসীরা যাতে আর এর দরজার সামনে এসে মাথা নত না করেন, সে কারণে শৌচাগারের রং বদলে গোলাপি করে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেটি এখনও তালা বন্ধ। তবে এমন একটি নয়, একটি রিপোর্ট অনুযায়ী যোগীর রাজ্যে সাড়ে তিনশো শৌচাগারের মধ্যে একশোটির রংই গেরুয়া। আহা! রংয়ের কী মহিমা!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.