সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাভেলির উঠোনে বসে ভুরিভোজ সারছে দুই সিংহী। একটু করে মাংস খাচ্ছে, আর একটু জিরোচ্ছে। ভাবখানা এমন যেন তাড়াহুড়ো কীসের? সারারাত যে পড়ে আছে! ভোরের আলো ফুটতে তো এখনও ঢের দেরি!
এদিকে সিসিটিভি ক্যামেরায় এই হাড়হিম করা দৃশ্য দেখে তো গৃহকর্তার মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম! কোনওরকমে উঠে গিয়ে হাভেলির সব দরজা-জানলা চেপে বন্ধ করে সারা রাত ওইভাবেই ভয়ে কাঁটা হয়ে বসেছিলেন তিনি। ভোরের আলো ফুটলে, সিংহীর দল জঙ্গলে ফিরলে তবেই তিনি নড়লেন। ততক্ষণে অবশ্য তাঁর হাভেলির উঠোন রক্তে লাল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে শিকারের উচ্ছিষ্ট।
[ আরও পড়ুন: আঠা ব্যবহার করে চুরি! দুই ‘গুণধর’ চোরের কীর্তিতে হতবাক পুলিশ]
আলোড়ন ফেলে দেওয়া এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজকোটের আমরোলি জেলার রাজুলা তালুকের কাতার গ্রামে। এমন নয় যে গুজরাতের এই গ্রামটিতে এই প্রথম কোনও বন্য পশু ঢুকে পড়ল। জঙ্গল লাগোয়া হওয়ায় এখানে প্রায়শই বন্য পশু ঢুকে পড়ে এবং গ্রামবাসীদের গরু,ছাগল ধরে নিয়ে গিয়ে খেয়ে ফেলে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই প্রথম, এভাবে প্রকাশ্যে, গৃহস্থের উঠোনে আরাম করে বসে, নিরুদ্বেগে ধরে আনা শিকার চেটেপুটে ভক্ষণ করে সেখান থেকে চম্পট দিল পশুরাজ৷
হাভেলির মালিক দাদা খুমানের দাবি, মঙ্গলবার রাতে গ্রামের কোনও বাড়িতে ঢুকে একটি গরু শিকার করে এনেছিল সিংহী দু’টি। তারপর সেটিকে টেনে নিয়ে এসে ফেলে তাঁর হাভেলির উঠোনে। সারারাত ধরে, আয়েশ করে বসে তার মাংস খায়। বুধবার ভোরের আলো ফুটতে চলে যায়। খুমান জানিয়েছেন, চুরি-চামারি রুখতে তাঁদের বাড়ির উঠোনে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। আর তাতেই ধরা পড়ে এই ভয়ানক দৃশ্য। ক্যামেরায় সব দেখে আঁতকে উঠলেও প্রথমেই উঠে গিয়ে হাভেলির সব দরজা-জানলা চেপে বন্ধ করে দেন তিনি। কিন্তু তারপরও শান্তিতে থাকতে পারেননি। সারা রাত ক্যামেরার দিকে তাকিয়েই কাটিয়ে দিয়েছিলেন। একই পরিণতি হয়েছিল তাঁর বাড়ির বাকি ছয় বাসিন্দারও।
[ আরও পড়ুন: খাঁড়িতে মিলল পেল্লাই ঝিনুক, দুর্লভ সামগ্রী বিক্রি না করে রেখে দিলেন ব্যবসায়ীরা ]
হাভেলি মালিকের দাবি অনুযায়ী, জঙ্গল থেকে হিংস্র পশুদের লোকালয়ে ঢুকে গবাদি পশু শিকার করার ঘটনা নতুন না হলেও এই প্রথম শিকার ধরে নিয়ে এসে কোনও বাড়িতে ঢুকে তা তৃপ্তি করে খাওয়ার ঘটনা ঘটল। স্বাভাবিকভাবেই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে বন দফতরের যুক্তি, জঙ্গলের পাশের গ্রামে বন্য পশু ঢুকে পড়ার ঘটনায় অস্বাভাবিকতার কিছু নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.