সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলোয় ভাসছে গ্রাম৷ গ্রামের আয়তনের চেয়ে আলো বেশি৷ চোখ যেন ধাঁধিয়ে যায়৷ সন্ধের পর গ্রামে ঢুকলে আঁধার বলে মালুমই হয় না৷ চিনের জিয়ান প্রদেশের তাওজিয়া গ্রামে যেন ২৪ ঘণ্টাই দিন৷
জিয়ান প্রদেশের এক অখ্যাত, ছোট গ্রাম তাওজিয়া৷ কেউ কোনওদিন নজরও দেয়নি৷ তাই গ্রামের কোনো উন্নতি নেই৷ না আছে ঠিকঠাক রাস্তা, না আছে রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা৷ এভাবেই বছরের পর বছর চলছিল৷ মানুষজনের এনিয়ে যেন কোনও আক্ষেপ, অভিযোগও নেই৷ কেউ কিছুই বলেও না৷ সেই গ্রামে ঢুকেই একদিন দেখা গেল, আলোয় আলো৷ হতবাক সকলে৷ ব্যাপারটা কী?
ওরেব্বাবা, রাস্তার দু’ধার যে আলোময়৷ দুটি বাতিস্তম্ভের মধ্যে একহাতও তফাৎ নেই৷ গুনে গুনে এক হাজারটি স্ট্রিট লাইট৷ গুনতে গিয়েই ধরা পড়ল আসল রহস্যটা৷ মাত্র তিন কিলোমিটার একটি রাস্তা৷ তার দু’ধারে মোট হাজারটি আলো৷ সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে বসানো হয় একেকটি বাতিস্তম্ভ৷ তাহলে অঙ্কের হিসেবটা তো বেশ গোলমেলে৷ এই হারে চললে ৩ কিলোমিটার রাস্তায় প্রয়োজন হয় ১০টি বাতি৷ সেখানে ১০০০! তাই তো তাওজিয়াতে আঁধার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ কিন্তু কারণ কী? কেন এত খরচ করে বাড়তি স্ট্রিট লাইটগুলো বসানো হল? এরও এক অভিনব উত্তর মিলছে৷
তাওজিয়া গ্রামের এমন ভোলবদল দেখে তো সংবাদমাধ্যমগুলো রে রে করে ছুটে গিয়েছে সেখানে৷ ফ্লাশের ঝলকানিতে আলোর বন্যা আর কী৷ সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করতে কিছুতেই কেউ মুখ খুলতে চাইছিলেন না৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত বললেন৷ জানালেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য রাস্তা সম্প্রসারণ দরকার ছিল৷ তাই জিয়ান প্রদেশের এই গ্রামটিকে নাকি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সরকার৷ প্রাথমিক ধাপ হিসেবে যে’কটা লাইট ছিল গ্রামে, তা ভেঙে ফেলা হয়৷ আর তাতেই ক্ষেপে ওঠেন গ্রামবাসীরা৷ সংকল্প নেন, কিছু একটা করে সরকারের এই কাজের প্রত্যুত্তর দিতেই হবে৷ আর তাতেই গায়ে গায়ে বসিয়ে দেন বড়সড় বাতিস্তম্ভগুলো৷ এসব দেখে তো সরকারেরও চক্ষু চড়কগাছ৷ এমন আলোধাঁধানো এক জায়গা কি নষ্ট করে ফেলা যায়? মোটেই না৷ তাওজিয়ার মানুষজন বলছেন, এটাই সরকারকে দেওয়া তাঁদের যোগ্য জবাব৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.