Advertisement
Advertisement
Pirates

৪০০ বছরের পুরনো জলদস্যুদের স্মৃতি ফিরল শহরে, নৌকা করে ঘাটের পাশে মন্দিরে ডাকাতি!

ঘাটগুলিতে কোন কোন নৌকা এসে থেমেছে, সেই হিসাব নিয়েই ডাকাত তথা ‘জলদস্যু’দের সন্ধান চালাচ্ছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।

Temple robbed by dacoits travelling in boats in Kolkata reminds the story of pirates

অলংকরণ: সুলগ্না ঘোষ।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 30, 2024 11:18 am
  • Updated:July 30, 2024 6:50 pm  

অর্ণব আইচ: গভীর রাতে নদীর সরু খাঁড়িতে ছপ ছপ শব্দ। নৌকার মাঝি এসে সেটি দাঁড় করায় ঢালু পাড় থেকে একটু দূরে। তখনই নৌকা থেকে সামান্য লাফ দিয়ে জলে নেমে পড়ে ৬ জন। নিঃশব্দে তারা কাদাভর্তি পাড় বেয়ে ধীরে ধীরে উঠে পড়ে ঘাটে। তাদের মুখে বাঁধা গামছা, হাতে অস্ত্র।

না, এমন গা ছমছমে বর্ণনা মোটেই রঘু ডাকাত-বিশু ডাকাত অথবা দুর্ধর্ষ জলদস্যু সিবাস্তিও তিবাউয়ের কাহিনি নয়। চারশো বছর আগের জলদস্যুদের (Pirates) গল্পের পুনরাবৃত্তিই যেন আধুনিক আই-ফোনের আমলে! সম্প্রতি নাদিয়ালের মন্দিরের পুরোহিতকে মারধর করে গয়না ও টাকা লুটপাটের পিছনে সেই জলদস্যুরা। এমনই চাঞ্চল‌্যকর প্রমাণ পেলেন লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দারা। এই ‘জলদস্যু’দের মধ্যে কয়েকজন রীতিমতো দাগি বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের। তাই প্রথমে তাদের নৌকার সন্ধানে নামেন গোয়েন্দারা। কিন্তু খুব কম নৌকার ঘাটেই রয়েছে সিসিটিভি (CCTV) ক‌্যামেরা। তাই সেই পুরনো পদ্ধতিতেই ঘাটগুলিতে কোন কোন নৌকা এসে থেমেছে, সেই হিসাব নিয়েই ডাকাত তথা ‘জলদস্যু’দের সন্ধান চালাচ্ছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় বাবার সামনেই মাকে খুন ‘কীর্তিমান’ নাবালিকার! সঙ্গী প্রেমিকও]

পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার নাদিয়ালে শ্মশানকালীর মন্দিরে হানা দিয়ে ডাকাতের একটি দল গ্রিল ভেঙে ভিতরে ঢোকে। পুরোহিত বাধা দিতে গেলে তাঁকে অস্ত্র দিয়ে মারধর করে তারা। মন্দির থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার সোনা ও রুপোর গয়না এবং প্রণামীর বাক্স থেকে প্রায় ১৮ হাজার টাকা নগদ ডাকাতি করে পালায় তারা। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ডাকাতদের গেঞ্জি ও বারমুডা জলে ভেজা। কিন্তু শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ বৃষ্টিও (Rain) হয়নি। সেই সূত্র ধরেই নাদিয়াল থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেন। যে রাস্তা ধরে তারা এসেছে বলে সন্দেহ, সেই রাস্তা ধরে এগিয়েই পুলিশ জানতে পারে যে, ওই মন্দিরটি বহু পুরনো ও তা একটি খাঁড়ি তথা ছোট খালের ধারে। সেই খালটি সরাসরি যুক্ত হয়েছে গঙ্গায়। খাঁড়ির ঢালু পাড়ে ঝোপঝাড় ও মাটি পরীক্ষা করে কিছু পায়ের ছাপও (Footprints) মেলে। তাতেই পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, এই কাজ ‘জলদস্যু’দেরই।

[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলায় ফের সক্রিয় ইডি, কলকাতা-সহ ১০ জায়গায় তল্লাশি]

তদন্তকারীদের ধারণা, ডাকাতরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক‌্যানিং (Canning) ও তার আশপাশের বাসিন্দা। যদিও সেখান থেকে তারা নৌকা করে আসেনি। সম্ভবত বজবজ বা নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে নৌকা অথবা ভুটভুটি নিয়ে গঙ্গা পার করে ডাকাতরা। গঙ্গা থেকে সেই খাঁড়িতে ঢুকে ইঞ্জিন বন্ধ করে দাঁড় বেয়ে মন্দিরের কাছে তারা আসে। ডাকাতির পর নৌকা করেই পালায় তারা। পুলিশ ঘাটগুলিতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছে, কার নৌকা বা ভুটভুটি ভাড়া নিয়েছিল ডাকাতরা। সেইমতো নৌকাটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। সেই সূত্র ধরে নৌকার মালিক ও মাঝিদের জেরা করে ডাকাতদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement