সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “সোনার ফসল ফলায় যে তাঁর দুইবেলা জোটে না আহার!” কতকটা তেমনই, সারাদিন খাবার পিঠে বয়ে বেড়ান যিনি, নিজের খাবার কেনার পয়সা নেই তাঁর। অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী অ্যাপ সুইগির (Swiggy) এক কর্মীর কথা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। ক’দিন আগেই তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে এক গ্রাহককে খাবার পৌঁছে দেন তিনি। কেন? যেহুতু কপর্দকহীন সাহিলের পকেটে বাইকের তেল কেনার পয়সাটুকু নেই। এমনকী অভুক্ত থেকে দিন কাটছিল তাঁর। এবার বদলাল জীবন!
সুইগি ডেলিভারি বয় ওই যুবকের নাম সাহিল সিং। সোশ্যাল মাধ্যমে (Social Media) সাহিলের কথা জানিয়েছেন প্রিয়দর্শিনী নামে এক তরুণী। দিন কয়েক আগে প্রিয়দির্শনীকেই খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন সাহিল। তবে খাবার দেরিতে এসেছিল। সুইগি কর্মীকে দু’কথা শুনিয়ে দেবেন বলে বাইরে বেরিয়ে দেখেন, বাড়ির চৌকাঠে বিধ্বস্ত অবস্থায় বসে সাহিল। এরপর প্রশ্ন করে জানতে পারেন যুবক ৩ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে খাবার সরবরাহ করতে এসেছেন, সেই কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
সাহিলকে জল খেতে দেন প্রিয়দর্শিনী। এরপর যুবক তাঁর সমস্যার কথা জানান। পকেটে একটা পয়সা নেই। গত কয়েকদিন শুধু জল খেয়েই পেট ভরাচ্ছেন। খাবার পিঠে বেয়ে বেড়ালেও নিজের খাবার কেনার পয়সা নেই। অর্থের অভাবেই জ্বালানি কিনতে পারেননি। সেই কারণেই তিন কিলোমিটার হেঁটে খাবার পৌঁছে দিতে আসা। প্রিয়দর্শিনীকে তিনি জানান, এভাবেই কঠিন লড়াই চালাচ্ছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, জম্মুর বাসিন্দা সাহিল। বাইজুসের মতো সংস্থায় কাজ করেছেন স্নাতক যুবক। লকডাউনে কাজ চলে যায়। ৩০ বছরের সাহিল এরপর বাধ্য হয় অন্য শহরে এসে খাবার সরবরাহের কাজ নেন। এর মধ্যেই ভাড়াবাড়িতে সঙ্গে থাকা এক যুবককে টাকা ধার দিয়ে বিপদে পড়েন। সে ওই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। সাহিল জানতে চান, প্রিয়দর্শিনীর কাছে কি ভাল চাকরি আছে?
সাহিলের বক্তব্য এবং তার বায়োডাটা লিঙ্কডিনে পোস্ট করেন প্রিয়দর্শনী। পাশাপাশি ৫০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। তবে আসল কাজ হয় নেটমাধ্যমের পোস্টে। জানা গিয়েছে, যুবকের পরিস্থিত জেনে অনেকেই সহানুভূতি দেখিয়েছেন। কেউ কেউ সাহিলের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়েছেন। এমনকী ক’দিন পর অন্য একটি চাকরি পেয়েছেন সাহিল। গোটা ঘটনায় প্রিয়দর্শিনীকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.