সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার পরে হওয়া আরামকে বাবা হওয়ার আনন্দের সঙ্গে তুলনা করায় মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রোষে পড়েছিলেন গোপাল ভাঁড়। আসলে মলত্যাগ (Poo) বিষয়টিকেই সকলে একটু নাক সিঁটকে দেখেন। কিন্তু এর প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। আর এবার বিজ্ঞানীরা জোর দিচ্ছেন মলদানের উপরে। হ্যাঁ, মলও দান করা যায় রক্ত বা শরীরের অন্যান্য বহু অঙ্গের মতোই। ক্রমশই বাড়ছে মলদানের চাহিদা।
কিন্তু কেন? হঠাৎ এই বর্জ্য পদার্থটি এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল ‘দানসামগ্রী’ হিসেবে? আসলে অন্যের ভাল মল এখন অন্ত্রের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই কারণেই এই ধরনের মলদাতাদের ডাকা হচ্ছে ‘সুপার পু ডোনার’ হিসেবে। তবে এই ধরনের মলদাতাদের বলা হচ্ছে ইউকির্নও! কাল্পনিক এই শিংওলা ভেড়াকে যেমন দেখা যায় না, তেমনই বিরলদর্শন এই দাতারাও। তবে বিরল হলেও তাঁদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। যাকে ঘিরে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার চিকিৎসায় নতুন দিশা খুঁজে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
যত দিন যাচ্ছে তত বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারছেন, মানব শরীরের মাইক্রোবায়োম অর্থাৎ শরীরে বসবাসকারী আণুবীক্ষণিক জীবদের বিরাট প্রভাব রয়েছে শরীরের সুস্থতার বিষয়ে। আসলে এই সব আদ্যপ্রাণীরা শরীর ও মনের স্বাস্থ্যের উপরে প্রভাব ফেলে। আজকের দিনে ফাস্ট ফুড ও অ্যান্টি বায়োটিকের বাড়াবাড়িতে মাইক্রবসদের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
আর এক্ষেত্রে কাজ দিচ্ছে ‘উচ্চ’ মানের মল! দেখা যাচ্ছে, ওই ধরনের মল থেকে ভালো ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হলে অন্ত্র ফের শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আর সেই কারণেই এই ধরনের মলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপার স্টুল’। কিন্তু আগেই বলা হয়েছে, এই ধরনের দাতা খুঁজে বের করা কষ্টসাধ্য। আর সেই কাজেই মন দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের বায়োমব্যাংক। তারা শুরু করেছে ‘ইউনিকর্ন’ শিকার।
এখানেই তৈরি হয়েছে স্টুল ব্যাংক। মল প্রত্যর্পণও এখানেই করা হয়। দাতাদের মল সংগ্রহ করে সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেন বের করে নিয়ে তাকে এক ধরনের তরলে রাখা হয়। সেখানেই তারা বাড়তে থাকে। তারপর তাদের আলাদা আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে রেখে প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.