সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আট থেকে আশি। রোগের শিকার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। সম্প্রতি, মহারাষ্ট্রের বুলধানা জেলার ১৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের অকালে টাক পড়ে যাওয়ায় শোরগোল পড়ে। চিন্তায় পড়েন গ্রামবাসীরা। তদন্তে নামে প্রশাসন। সেই ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে উঠে এসেছে, গমে থাকা রাসায়নিক পদার্থ গ্রামবাসীদের চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ।
পদ্মশ্রী প্রাপ্ত চিকিৎসক হিমন্তরাও বাওয়াস্কর কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন পরীক্ষা করেছেন। তাতে তিনি জানতে পারেন ওই জেলার বাসিন্দারা খাওয়ার জন্য যে গম ব্যবহার করেছেন তাতে সিলিকন অনেক বেশি মাত্রায় উপস্থিত। উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে জিঙ্কের পরিমাণ কম। চিকিৎসক হিমন্তরাও বাওয়াস্করের কথায়, ” প্রভাবিত অঞ্চলের গম পরীক্ষা করে আমরা জানতে পারি তাতে ৬০০ গুণের বেশিমাত্রায় সিলিকন রয়েছে। এই এলাকাগুলিতে যে গম চাষ হয় তাতে এত পরিমণে সিলিকন থাকে না। এই গম খাওয়ার দুই থেকে তিনদিন পর থেকেই চুল পড়তে শুরু করে বাসিন্দাদের।” এই জেলায় চাষ হওয়া গমে এত পরিমাণে সিলিকন না থাকলে এল কী করে? জানা গিয়েছে, রেশন থেকে এই গম পেয়েছেন স্থানীয়রা। ডাঃ বাওয়াস্করের দাবি, এই সমস্ত গমের চালান পাঞ্জাব থেকে এসেছে।
সেই গমের নমুনা থানের একটি পরীক্ষাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন দেখা যায় প্রতি কেজি গমে ১৪.৫২ মিলিগ্রাম সিলিকন পাওয়া যায়। সাধারণত খুব বেশি হলে প্রতিকেজি গমে ১.৯ মিলিগ্রাম সিলিকন থাকা স্বাভাবিক।
বুলধানা জেলার ১৮টি গ্রামে এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। প্রায় ৩০০ জনের রক্ত, চুল ও প্রস্রাবের নুমনা সংগ্রহ করা হয়। দেখা যায়, রক্তে ৩৫ গুণ, মূত্রে ৬০ গুণ, চুলে ১৫০ গুণ সিলিকন পাওয়া যায়। সঙ্গে তাঁরা এটাও লক্ষ্য করেন, গমে জিঙ্কের পরিমাণ উল্লেখজনক ভাবে কম। চিকিৎসক বাওয়াস্কর এলাকারা সামাজিক সমস্যা তুলে ধরে বলেন, “৮ থেকে ৭২ বছরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চুল পড়তে শুরু করে। বাচ্চারা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। তরুণীরা কলেজেও যাচ্ছিলেন না। যাঁদের বিয়ে ঠিক হয়েছিল তাঁদের বিয়েও আটকে যায়।” তিনি তাঁর রিপোর্ট সরকারকে জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের বিজ্ঞানীরা এলাকার জল ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করে। তাকে সিলিকনের মাত্রা বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে তাঁদের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.