সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আচ্ছা চলতা হুঁ, দুয়াও মে ইয়াদ রাখ না…’। শেষ দিনগুলোয় এই গানই বেজে উঠত কিশোর ঋষভ দত্তর গিটারের তারে। বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে রোগশয্যায় বসেই কি তবে সে বুঝেছিল, বিদায়বেলা আসন্ন? নাহলে কেনই বা বারবার চলে যাওয়ার গান ধরত ? জটিল রোগের বিরুদ্ধে অনেকটা লড়াইয়ের পর এই গানের সুর ছড়িয়েই চলে গেল বছর সতেরোর কিশোর। তাঁর মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর গাওয়া গান শুনে চোখের কোণায় একফোঁটা অশ্রু জমছে না, এমন নেটিজেন খুব কমই আছেন। ঋষভের এই গানই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ১৭ বছরের ঋষভ দত্ত। বছর দুই আগে তাঁর রক্তে জটিল এক রোগ ধরা পড়ে। পরিস্থিতি এতটা সংকটজনক হয়ে ওঠে যে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট (Bone Marrow Transplant) ছাড়া ঋষভকে সুস্থ করে তোলা মুশকিল। ডাক্তারদের এই কথা শুনে অসম থেকে বেঙ্গালুরুতে ঋষভকে নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য। বেঙ্গালুরুর খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা শুরু হয়। পরে অবশ্য তাঁকে স্থানান্তরিত হয় বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রস্তুতি চলছিল।
হাসপাতালের বিছানায় ঋষভের একমাত্র সঙ্গী ছিল গিটার। অসুস্থ শরীরে মাঝেমধ্যেই সে গিটারে সুর তুলত। বেজে উঠত চিরস্মরণীয় গান – ‘আচ্ছা চলতা হুঁ, দুয়াও মে ইয়াদ রাখ না…’। মুগ্ধ হয়ে কিশোরের গান শুনতেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য রোগীরা। আর তারিফ করতেন।
ঋষভের গান ধীরে ধীরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তাঁর অনুরাগী মহল তৈরি হয়ে যায় খুব কম দিনের মধ্যে। এমনকী ঋষভের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁরা অর্থ সংগ্রহও শুরু করেছিলেন। অসম সরকারও তাঁর চিকিৎসার জন্য অনুদান পাঠিয়েছিল। কিন্তু সব ব্যর্থ করে দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে ঋষভ। কিন্তু ঋষভ আছে, ঋষভ থেকে যাবে – তাঁর গানের মধ্যে দিয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.