শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: পরপর ছ-ছটি বিয়ে, একের পর এক সন্তানের বাবা হওয়া। ভালই চলছিল সব। কিন্তু পঞ্চম আর ষষ্ঠ বিয়েটি পাশাপাশি দুটি গ্রামে করতে গিয়েই বিপাকে পড়ল গুণধর যুবক। সন্তোষ দলুই নামে বছর চৌত্রিশের যুবকের কুকীর্তি শেষমেশ ফাঁস হয়ে গেল। তাকে ধরে ব্যাপক গণধোলাই দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) দাসপুর থানা এলাকার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য। যুবককে জেরা করে তার আগেকার সব বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে খুঁটিনাটি জানতে মরিয়া পুলিশ।
হায়দরাবাদের ফুল দিয়ে ডেকরেটিংয়ের কাজ করত দাসপুরের (Daspur) গদাইপুরের বাসিন্দা সন্তোষ দলুই ওরফে সন্তু। সেখানে প্রথমে এক মহিলাকে বিয়ে করে সে। এই বিয়ের কথা কেউ জানত না। এরপর বছর পাঁচেক আগে নিজের বাড়ি ফিরে সেখানকার এক মহিলাকে বিয়ে করে সন্তোষ। তাদের এক সন্তানও আছে। এরপর মহেশপুর গ্রামের কাজল দলুই নামে একজনের সঙ্গে বিয়ে হয় সন্তোষের। কাজল ও সন্তোষেরও বছর তিনের এক সন্তান আছে। এখানেই শেষ নয় সন্তোষের কুকীর্তি। দেড় বছর আগে মহেশপুরের ঠিক পাশের কলরা গ্রামের রিংকু মালকে বিয়ে করে। রিংকুর এক সন্তানের বাবা সন্তোষ। তবে এটাই যে তার ৬ নং বিয়ে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কেউ।
শুক্রবার রাতে কলরা গ্রামে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে বিপত্তিটা হয় । কলরা ও মহেশপুর গ্রামের মাঝের রাস্তায় জনাকয়েক যুবক কথাবার্তা বলছিল। তাঁদের চোখে পড়ে সন্তোষ যাচ্ছে কলরা গ্রামের দিকে। মহেশপুর গ্রামে পরিচিতরা তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন – সে কোথায় যাচ্ছে? এতজন লোকের হাতে ধরা পড়ে সন্তোষ আর বিষয়টিকে সামলাতে পারেনি। একদিকে মহেশপুরের লোকজন তাকে ‘জামাই’ বলছেন, অপরদিকে কলরা গ্রামের বাসিন্দাদেরও একই দাবি। দুই গ্রামবাসীদের মধ্যে তর্কবিতর্ক এবং লাগাতার জেরার মুখে পড়ে সন্তোষ সত্যিটা প্রকাশ করে। জানায় যে কলরা গ্রামের রিংকু মাল আসলে তার ষষ্ঠ স্ত্রী। আর মহেশপুরের কাজল পঞ্চম।
এরপরই দুই পরিবারের কাছে গুণধর জামাই সম্পর্কে আসল খবর পৌঁছয়। তাঁরা ছুটে যান। তবে ততক্ষণে উত্তেজিত জনতার গণপ্রহারের (Lynching) শিকার হয় সন্তোষ। একসঙ্গে ছ, ছ’জন স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করার শাস্তি হিসেবে তাকে বেধড়ক মারধরের পর দাসপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ সন্তোষকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তার সমস্ত গুণকীর্তি জানার পর প্রতারণার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেন পঞ্চম স্ত্রী কাজলের বাবা অনিল দলুই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.