সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল আছে। বাতাস আছে। আর আছে বরফ। ছবি অন্তত তাই বলছে। যা পাঠিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) মার্স এক্সপ্রেস। আর তাতেই বিজ্ঞানীদের কাছে খোলসা হয়ে গিয়েছে ঠিক কী কী রসদ রয়েছে মঙ্গলপৃষ্ঠে। আর একজোট হয়ে এই ত্রয়ীই ঠিক কীভাবে দিনের পর দিন ক্ষয়কাজ চালিয়েছে লাল গ্রহের মাটিতে।
উত্তরেই যান বা দক্ষিণে, মঙ্গলের দুই সীমান্তে রয়েছে খাঁজকাটা, পাথুরে, খাড়া পাহাড়ি এলাকা। যার নাম ‘নিলি ফোসাই’। ইএসএ-র মার্স এক্সপ্রেস সম্প্রতি এই এলাকারই ছবি পাঠিয়েছে। বিজ্ঞানীরাও যথারীতি সেই ছবির বিশ্লেষণ করতে বসে গিয়েছেন। আর তাতেই জানা গিয়েছে, পাথুরে এই জমিই একদা লালগ্রহে উপস্থিত প্লাবনভূমি গঠনে সাহায্য করেছিল। শুধু তাই নয়। ছবি নিরীক্ষণ করে আরও মালুম হয়েছে যে মঙ্গলে রুক্ষ, শুষ্ক, পাথুরে জমি তৈরি হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বাতাস, জল এবং বরফ। এই তিন ‘এজেন্ট’ই দফায় দফায় ক্ষয় করেছে পৃথিবীর এই পড়শি গ্রহের মাটিকে। যার ফলশ্রুতি হল এই ‘নিলি ফোসাই’ এলাকার উৎপত্তি। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই এলাকায় নানা আকৃতি এবং প্রকৃতির যে ভূমিরূপ দেখতে পাওয়া যায়, তা এই ত্রয়ীরই সৃষ্টি। সম্প্রতি এক বিবৃতি প্রকাশ করে এ কথা স্পষ্ট করেছে ইএসএ।
তা ঠিক কী কী ভূমিরূপ রয়েছে ‘নিলি ফোসাই’-এ?
রয়েছে পাথুরে উপত্যকা, ছোট ছোট পাহাড়, মেসা, গ্রাবেন প্রভৃতি। প্রথম দু’টি বোঝা গেলেও সাধারণের কাছে অপরিচিত ঠেকতে পারে শেষের দু’টি শব্দ। অর্থাৎ মেসা ও গ্রাবেন। আসলে, এগুলি ভৌগোলিক ‘টার্ম’। ‘মেসা’ হল আমেরিকান শব্দ। ‘টেবিল মাউন্টেন’ বোঝাতে এটির ব্যবহার হয়। টেবিলের আকৃতিবিশিষ্ট পাহাড়ি এলাকা, যার মাথা একেবারে সমতল অথচ ধারগুলি খাড়াই, তাকে ‘মেসা’ বলা হয়। অন্যদিকে জার্মান শব্দ ‘গ্রাবেন’-এর উৎপত্তি হয় চ্যুতির ফলে কোনও উপত্যকা নিচে বসে গেলে। মার্স এক্সপ্রেসের পাঠানো ছবিতে নিলি ফসাই এলাকায় বেশ কিছু উঁচু এলাকাও দেখা গিয়েছে, যার নিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পাথরের টুকরো। ইএসএ-র দাবি, কোনও একটি ক্ষয়কারী ‘এজেন্ট’-এর পক্ষে এত বিচিত্র ধরনের ভূমিরূপ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। জল, বাতাস এবং বরফ তিনের আধিপত্যেই এ সব কিছু গড়ে উঠেছে।
অতএব, এ কথা অবশ্যই স্বীকার্য যে লালগ্রহে এই তিন উপাদানেরই অস্তিত্ব রয়েছে। এছাড়াও ইএসএ-র মতে, মঙ্গলপৃষ্ঠে কোথাও কোথাও গাঢ় রঙের লাভামিশ্রিত বালিয়াড়ি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, বাতাসই এই বালি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে উড়িয়ে এনে ক্ষয় চালিয়েছে। যার প্রমাণ বালিয়াড়ির উপর থাকা একগুচ্ছ এবড়ো-খেবড়ো এবং সর্পিল নকশার সমাহার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.