সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পাহাড়–জঙ্গল, রাস্তাঘাট ছেড়ে রক পাইথন এবার একেবারে গৃহস্থের ঘরে! বাথরুমের দরজার পাশে ঘাপটি মেরে বসে ছিল শিকারের সন্ধানে। ঘরের কর্তা রাতে বাথরুমে যাওয়ার পথে টর্চ মারতেই চক–চক করে ওঠে। ওমন পেল্লাই মাপের সাপ দেখে গৃহকর্তা তো ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। তারপর তাঁর চিল-চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা-সহ পড়শিরাও সটান চলে আসেন বাড়িতে। সাপ আতঙ্কের খবর যায় থানায়। সেখান থেকে বনদপ্তর। গৃহস্থের ঘরে লুকিয়ে থাকা রক পাইথনকে ঘিরে সোমবার রাতে এভাবেই হুলস্থুল চলল পুরুলিয়ার বরাবাজার এলাকায়। বনদপ্তর পরে সাপটিকে উদ্ধার করে জানায়, এই রক পাইথনটির ওজন ১৮কেজি। লম্বায় প্রায় আট ফুট। ওই দিন রাতে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার সকালে ওই পাইথনটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেন বরাবাজার বনাঞ্চলের কর্মীরা।
বরাবাজার থানার পাশেই থাকেন ব্যবসায়ী রাজেন্দ্রপ্রসাদ সাহা। তাঁর বাড়িতেই ঢুকে পড়েছিল ওই পাহাড়ি পাইথনটি। ওইদিন রাত দশটা নাগাদ দোতালা থেকে নেমে একতলার বাথরুমে যাচ্ছিলেন তিনি। বাথরুমের পাশে একটু অন্ধকার থাকায় হাতেই ছিল টর্চ লাইট। তাই সাবধানতাবশত টর্চ জ্বালতেই চমকে ওঠেন তিনি। টর্চের আলোয় চক–চক করা বস্তুটি যে আসলে বড়সড় সাপ! বুঝতে পারা মাত্রই টর্চ হাতে এক লাফে তিনি পালান বারন্দায়। ততক্ষণে তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে পাড়াপড়শিরও ঘুম ভেঙে গিয়েছে। পেল্লাই সাইজের সাপটিকে দেখতে ওই রাতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েন পড়শিরা। বাথরুমের পাশে রক পাইথন দেখে খানিকটা অবাক হন বনদপ্তরের কর্মীরাও।
বরাবাজার বনাঞ্চলের আধিকারিক সুপ্রিয় সরকার বলেন, “এই রক পাইথন প্রজাতির অজগরটি সাধারণভাবে পাহাড়–জঙ্গলে থাকে। আমরা উদ্ধার করে জঙ্গলেই ছেড়ে দিয়েছি।” তবে এই রক পাইথনটি কিভাবে গৃহস্থের ঘরে ঢুকে পড়ল তা বুঝতে পারছে না বনদপ্তর। এই পাইথন হাঁস–মুরগী খেয়ে নেয়। ওই সাপ উদ্ধারের পর বনদফতরের কাছ থেকে এই রক পাইথনের কথা শুনে ভয়ে এখনও কাঁটা দিচ্ছে ওই ব্যবসায়ীর। তাঁর কথায়, “ভাবতেই পারছি না। ওমন পেল্লাই সাইজের রক পাইথন বাথরুমে ঢুকে পড়ল কিভাবে?” রাতের ওই হাড় হিম স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলেই শিউরে উঠছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.