সৈকত মাইতি, তমলুক: হিন্দিতে একটি জনপ্রিয় প্রবাদ আছে, ‘খোদা পাহাড় নিকলা চুহা।’ সেই প্রবাদটিই সত্যি হল হলদিয়ার কাঁকট্যা বাজারে। ভরা বাজারের মধ্যেই কাঁচা সবজির ব্যবসা। ভিড়ের চাপে টাকার তেমন হিসেব রাখা হয়ে ওঠে না। কিন্তু এর মধ্যে দোকানের ক্যাশবাক্সে রাখা দুটি করকরে ৫০০টাকার নোট হারিয়ে গেলে টনক নড়ে দোকানদারের। কী করে গায়েব হল নোট? প্রথম সন্দেহের তির গিয়ে পড়ে দোকানের এক কর্মচারীর দিকে। কিন্তু তিনি কোনও অপরাধ করেননি বলেই দাবি কর্মচারীর। তাহলে, কড়কড়ে নোটগুলো গেল কোথায়? টাকার বাক্সটি একটু সরাতেই চক্ষু চড়কগাছ দোকানদারের। আজব এই কীর্তিটি ঘটিয়েছেন মূষিকরাজ। ক্যাশবাক্স ফুটো করে একের পর এক নোট নিয়ে গিয়ে নিজের বাড়ি থুড়ি গর্তে জমা করেছেন সিদ্ধিদাতার বাহন। মজার কথা নোটগুলিকে ইঁদুরটি কেটে নষ্ট করেনি, বরং যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।
হলদিয়া মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে জনবহুল কাঁকট্যা বাজার। এই বাজারেরই নজরুল মঞ্চ সংলগ্ন এলাকায় তারক দাসের সবজির দোকান। নিয়মিতই খোলা বাজারে ত্রিপল টাঙিয়ে আলু, পেঁয়াজ, কুমড়ো, পটল, কপি-সহ নানারকম সবজির পসরা সাজিয়ে বসেন তারকবাবু। দোকানে খদ্দেরদের চাপ সামলাতে সহকারী হিসেবে রয়েছেন আনন্দ কর নামের এলাকারই এক যুবক। প্রতিদিনের মতোই বুধবার সন্ধেয় দোকানে খদ্দের সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন দোকানের মালিক তারকবাবু। বেচাকেনার মাঝেই দুটি ৫০০টাকার নোট তিনি দোকানেরই কর্মচারী আনন্দ করকে রাখতে দিয়েছিলেন ক্যাশবাক্সে। কিন্তু মাত্র কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আশ্চর্যজনকভাবে নোট দুটি বেপাত্তা হয়ে যায়।
প্রথমটা দোকানের কর্মচারীর উপর সন্দেহ হলেও আনন্দ চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরক্ষণেই শুরু হয় খোঁজাখুঁজি । সবজির মাঝে রাখা কাঠের টাকার বাস্কটি সরাতেই রহস্যের উন্মোচন হয়। টাকার বাস্কের নিচেই ছোট্ট একটি ইঁদুরের গর্তের মধ্যে একটি টাকার কিছুটা অংশ দেখে হুঁশ ফেরে সকলের। সাবল, কোদাল নিয়ে রাতেই এই গর্ত খুঁড়ে উদ্ধার হয় প্রায় ২৬০০টাকা। গর্ত থেকেই বেরিয়ে আসে একে একে ১০, ২০, ৫০, ১০০ থেকে শুরু করে ৫০০টাকার একাধিক নোট। গর্ত খুঁড়ে প্রাথমিকভাবে মোট ২৬০০টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। তবে মাটির নিচে গর্তের মধ্যে আরও টাকা থাকতে পারে বলে দাবি স্থানীয়দের। দোকানের মালিক তারক দাস বলেন, প্রথম দিকে আমরা বুঝতে পারিনি। কিন্তু পরে বোঝা যায় এটা ছোট্ট ইঁদুরেরই কীর্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.