সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কত কষ্ট করে মেধার জোরে মানুষ উঁচু থেকে উঁচুতর ডিগ্রি (Degree) সংগ্রহ করে। কত স্বপ্ন পূরণের তাগিদে এত পরিশ্রম করা। কিন্তু সেসব স্বপ্ন যখন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় বাহ্যিক পরিস্থিতির কারণে, তখন তো আপশোসের শেষ থাকে না। যাঁর হওয়ার কথা ছিল শিক্ষক, অধ্যাপক, তাঁকে বাধ্য হয়েই অন্য পেশা নিতে হয় স্রেফ ক্ষুণ্ণিবৃত্তির তাগিদে! তেমনই একজন পাঞ্জাবের (Punjab) সন্দীপ সিং। চার চারটি বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি, PhD-র পরও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাঁকে দিন কাটাতে হচ্ছে সবজি বিক্রি করে! আশ্চর্য হলেও এটাই বাস্তব ছবি। আর নিজের মেধা প্রমাণ করতে সবজির গাড়িতে সন্দীপ লিখে রেখেছেন – PhD সবজিওয়ালা। ‘সত্য সেলুকাস! কী বিচিত্র এই দেশ!’ তবে এই প্রথম নয়। এর আগে বাংলাতেই এমএ পাশ চা-ওয়ালির কাহিনি ভাইরাল হয়েছিল। বসিরহাটের এক ছাত্রী ইংরাজিতে মাস্টার ডিগ্রি করার পর যথাযোগ্য চাকরি না পেয়ে চায়ের দোকান খুলেছিলেন বাধ্য হয়ে।
পাঞ্জাবের পাতিয়ালার (Patiala) বাসিন্দা বছর উনচল্লিশের সন্দীপ সিং। আইন, সাংবাদিকতা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পাঞ্জাবি – এই চার বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। পাঞ্জাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে সন্দীপ গত ১১ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিতে অধ্যাপনা করেছেন। কিন্তু সেখানে সমস্যা হচ্ছিল। সন্দীপ জানাচ্ছেন, বেতন ঠিকমতো পেতেন না। কখনও আবার না জানিয়েই বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে সংসার চালাতে ধাক্কা খাচ্ছিলেন সন্দীপ। এভাবে আর দিন কাটাতে পারছিলেন না তিনি।
বাধ্য হয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক চাকরিটা ছেড়ে দেন সন্দীপ। এর পর ঠেলাগাড়ি ভর্তি সবজি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বিক্রি করতে। গাড়িতে লিখে রাখেন – ‘PhD সবজিওয়ালা।’ নিজেকে পরিচয় দেন ডক্টর সন্দীপ সিং বলে। রোজ সকালে উঠে বাড়ি বাড়ি ছোটেন সবজি নিয়ে। সারাদিন সবজি বিক্রি করে সন্ধের পর ফিরে আসেন। তার পর মন দেন নিজের পড়াশোনায়। এখনও সন্দীপ পড়াশোনা করছেন। শিক্ষার জগৎ পেশাগতভাবে তাঁকে ধাক্কা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু শিক্ষাগ্রহণে তাঁর আগ্রহ কমেনি এতটুকুও।
তবে অস্থায়ী অধ্যাপক থেকে সবজি বিক্রেতা হয়ে এখন আর কোনও আক্ষেপ নেই সন্দীপের। কলেজে পড়িয়ে যে অর্থ উপার্জন করতেন, তার চেয়ে সবজি বিক্রি করে বেশি টাকা আসছে হাতে। তাতে সংসারে স্বচ্ছলতাও ফিরেছে। তবে উচ্চশিক্ষিত যুবকের ভাগ্যের চাকা এভাবে ঘুরে যাওয়া রাষ্ট্রের পক্ষেই লজ্জাজনক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.