সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়া কয়েক হাজার ফলোয়ার। ফ্রেন্ডলিস্টেও উপচে পড়ছে ভিড়। অথচ মন খুলে কথা বলার মতো একজনও নেই। ছেলেবেলার বন্ধুরা সব এদিক-ওদিক ছড়িয়ে। ইঁদুর দৌড়ে ব্যস্ত সবাই। তাই অগত্যা মনের কথা মনেই জমে। ফল? মনখারাপ জমতে জমতে অবসাদ। ডিপ্রেসন।
মনোবিদরা বলছেন, ক্যান্সারের চেয়েও মারাত্মক ব্যধি হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই ডিপ্রেসন। ২০১৯ সালে এই রোগেরই খপ্পরে পড়েছিলেন পুণের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া রাজ ডাগওয়ার। মনের জোরে আর পরিবারের চেষ্টায় মন খারাপের কালো মেঘ কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। কিন্তু এই রোগের ব্যাথাটা ভালই বোঝেন। তাই পথে ঘুরে-ঘুরে কান (Ear) ভাড়া দিচ্ছেন তিনি। ভাবছেন তো এ আবার কেমন জিনিস?
আসলে পুণের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়ান রাজ। আর সকলের গল্প শোনেন। সন্ধে ৬টা থেকে রাত ১১টা অবধি পথে-পথে ঘুরে বেড়ান এই কলেজ পড়ুয়া। সঙ্গে থাকে প্ল্যাকার্ড। যাতে লেখা, “টেল মি ইউর স্টোরি অ্যান্ড আই উইল গিভ ইু টেন রুপিস।” অর্থাৎ, ‘আপনি আপনার গল্প আমায় বলুন। বদলে আমি আপনাকে ১০ টাকা দেব। গত ৬ ডিসেম্বর থেকে এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরeল হয়েছে রাজের কীর্তি। কী বলছেন রাজ?
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ ডাগওয়ার বলছেন, “আজকাল আমরা কেউ কারোর সঙ্গে কথা বলি না। অথচ কত কথা বলার থাকে। বাড়ি ফিরেও নিজেদের চার দেওয়ালে বন্দি করে ফেলি। মনে জমে থাকা কথা ভাগ করে নেওয়া আর হয় না। গত কয়েকদিন প্রায় ১০০ মানুষের গল্প শুনলাম। এটা দারুণ একটা সুযোগ।” প্রতিদিন প্রায় পাঁচ-ছ’ঘণ্টা অচেনা মানুষদের সঙ্গে সময় কাটান রাজ। এক-একজনের গল্প শুনতে একঘণ্টার বেশি সময় দেন কখনও কখনও। তাঁদের মনের গভীরে পৌঁছে যাওয়াই আসল উদ্দেশ্য। মন খারাপ ঝেড়ে তাঁরা যখন একমুখ হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরে যান, তখন রাজের একটা কথাই মনে হয়, “জিন্দেগি লম্বি নেহি বড়-ই হোনি চাহিয়ে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.