সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোরের গন্ধবিচারে অস্বস্তিতে পড়ল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ‘গুপ্তধন’ উদ্ধার করতে শৌচাগারের প্যানে হাত ঢোকাতে হল পুলিশকর্মীদেরই। হরিদেবপুরের টাকা ও গয়না চুরির (Theft) একটি ঘটনার তদন্তে নেমে দ্রুত চোরকে ধরেও ফেলে পুলিশ। চোরের ভাড়া বাড়ির হদিশও মেলে জিজ্ঞাসাবাদে, যেখানে লুকানো ছিল চুরির সামগ্রী। তারপরেও তা খুঁজে পেতে পুলিশের কালঘাম ছুটছিল। পরে অবশ্য পুলিশের ধমক খেয়ে চোর জানায় শৌচাগারের প্যানের মধ্যে রয়েছে সব। তবে ওই নোংরায় হাত ঢোকাতে রাজি নয় সে।
গত বছরের পয়লা জানুয়ারি রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা এক মহিলা হরিদেবপুর থানায় একটি চুরির অভিযোগ করেন। তিনি জানান, গত ২৬ ও ২৯ ডিসেম্বর দু’দিন তাঁদের ফ্ল্যাটে কেউ ছিলেন না। ওই সময় আলমারি ভেঙে টাকা ও সোনার গয়না লুট হয়েছে। সব মিলিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকার চুরি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এরপরেই ওই ঘটনায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয় শঙ্কর রজবর ওরফে হাজুকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাজু এলাকার পরিচিত চোর। আগেও বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছে। পাইপ বেয়ে যে কোনও বাড়িতে ঢুকে পড়তে সিদ্ধহস্থ সে। সারাদিন নেশা করে থাকে। যে এলাকায় যেভাবে চুরি হয়েছে তাতে হাজুর উপরেই পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে। ধরা পড়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা স্বীকারও করে হাজু। এলাকার পরিচিত চোরটির ভাড়া বাড়িতেই যে চুরির সামগ্রী রয়েছে তাও বুঝে যায় পুলিশ। কিন্তু কোথায় সেই কয়েক লক্ষ টাকার সামগ্রী?
আসলে ভাড়া বাড়িতে তন্ন তন্ন করে মিলছিল না ‘গুপ্তধনে’র খোঁজ। তাহলে? শেষ পর্যন্ত পুলিশের ধমক খেয়ে হাজু জানায়, টাকা ও গয়না সে লুকিয়ে রেখেছে শৌচাগারের প্যানের ভেতরে। এরপরই শুরু হয় আরেক প্রস্থ নাটক। প্যান থেকে নিজে হাতে চুরির জিনিস বের করতে রাজি নয় হাজু। সে বলে, ”ওই কাজ করতে বলবেন না স্যর, আমার গন্ধ লাগে। আমি পারব না স্যর।”
চুরির সামগ্রী উদ্ধার করতে যাওয়া পুলিশকর্মীরা জানিয়েছেন, হাজার ধমক-ধামকেও হাজুকে প্যানের ভেতরে হাত ঢোকাতে রাজি করানো যায়নি। এমনকী জোর করাতে সে নাকি কেঁদেও ফেলে। শেষ পর্যন্ত নাকে-মুখে রুমাল বেঁধে এক পুলিশকর্মীই চুরির সামগ্রী উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর দেখা যায়, একাধিক প্লাস্টিকের প্যাকেট করে গয়না ও টাকা ঢুকিয়ে রেখেছিল হাজু ওই প্যানের ভেতরে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই চুরি যাওয়া ওই টাকা ও সোনা ফেরত পেয়েছেন অভিযোগকারিনী মহিলা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.