সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অ্যাডভেঞ্চার গল্পের বইয়ের পাতায় এদের ছবি দেখা যায়। বড়জোর টেলিভিশনের পর্দায় দু, একবার দেখা গিয়েছে। কিন্তু সমুদ্রের পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে চোখের সামনে দেখতে পাওয়াটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনাই। তেমন বিরলতম ঘটনা ঘটে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার (South Afica) কেপ টাউনে। সমুদ্রতটে দেখা মিলল দৈত্যাকার স্কুইডের (Giant squid)। আর তা চোখে পড়তেই শিউরে উঠলেন এক ব্যক্তি। যদিও প্রাথমিক ধাক্কা সামলে শুঁড় ছড়িয়ে শুয়ে থাকা গোলাপি-ধূসর স্কুইডটিকে ক্যামেরাবন্দি করে ফেলেন তিনি। সেই ছবিই এই মুহূর্তে ভাইরাল নেটদুনিয়ায়।
সি-ফুডের দুনিয়ায় স্কুইড একটা লোভনীয় পদ। তবে এখানে দেখা স্কুইডের সঙ্গে তার কোনও মিল পাবেন না। সমুদ্র পার্শ্ববর্তী বহু দেশে ছোট ছোট স্কুইড দিব্যি রান্না করে পাতে পরিবেশন করা হয়। খেতেও বেশ সুস্বাদু, বিশেষত পর্যটকদের কাছে।
কিন্তু শীতের মরশুমে দক্ষিণ আফ্রিকার সমুদ্রতটে এমন ভয়ংকর জলজ প্রাণীটিকে দেখে সেই স্কুইডের স্বাদ ভোলার উপক্রম। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কেপটাউনের এই দৈত্যাকার স্কুইডের সবচেয়ে লম্বা শুঁড়টি প্রায় ১৪ ফুট বিস্তৃত। শিকারকে নিজের দিকে টানতে এটাই তারা ব্যবহার করে থাকে। তারউপর দেহের গোলাপি চকচকে ভাব শিকারকে আকর্ষণ করে। এমনকী ধন্দে পড়তে পারেন সাধারণ মানুষও। কেপটাউনে সৈকতে শুয়ে থাকা প্রাণীটি যে মৃত নয়, একেবারে জলজ্যান্ত।
প্রাণীবিজ্ঞানী ওয়েন ফ্লোরেন্স কেপটাউনের এই স্কুইডটিকে দেখার পর জানান, জায়ান্ট স্কুইড প্রকৃতির এই প্রাণীর বয়স বড়জোর এক বছর কি দেড় বছর। সেই হিসেবে শিশুই বলা চলে। হয়ত খাবারের খোঁজে সাঁতার কাটতে কাটতে সৈকতের দিকে চলে এসেছে।
ফ্লোরেন্স আরও জানালেন, এই ধরনের প্রাণী স্বল্পায়ু হয়। খুব বেশি হলে ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে জায়ান্ট স্কুইড। বলা হয়, এই স্কুইড সবচেয়ে সফল অভিযোজিত প্রাণী (wildly adaptable survivors)। কয়েকশো কোটি বছর ধরে পৃথিবীর বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ করে ঠিক নিজেদের প্রজাতিকে রক্ষা করে গিয়েছে এরা।
এ ধরনের জলজ প্রাণীর উপর গবেষণা সবচেয়ে বেশি হয় দক্ষিণ আফ্রিকাতেই। কারণ, এখানকার তটে স্কুইড কিংবা অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণী বেশি পাওয়া যায়। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে জমায়েত হন বহু প্রাণীবিদ। কিন্তু চলতি বছর করোনা মহামারীর কারণে আন্তর্জাতিক যাতায়াত বন্ধ থাকায় অনেকেই পারেননি। তাই কেপটাউনের এই প্রাণীটিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আক্ষেপ করছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.